ভোট পরবর্তী হিংসায় 'আক্রান্ত'দের নিয়ে বৃহস্পতিবার রাজভবনে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানানোর কথা ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত 'পুলিশি বাধায়' তাঁরা ঢুকতে পারেননি বলে অভিযোগ। এই নিয়ে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন শুভেন্দু। শুক্রবার দুপুরে বিচারপতি অমৃতা সিংয়ের এজলাসে এই মামলার শুনানি হতে পারে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তদের সঙ্গে নিয়ে রাজভবনে গিয়েছিলেন শুভেন্দু। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার পর ফিরে যেতে বাধ্য হন তাঁরা। পুলিশি ব্যারিকেডে বাধা পেয়ে শুভেন্দু জানান,'রাজ্যপালের কাছে আমরা আক্রান্তদের
নিয়ে দেখা করার অনুমতি চেয়েছিলাম। ওঁর অফিস থেকে আমার সচিবকে বলা হয়, আক্রান্তদের সঙ্গে দেখা করবেন রাজ্যপাল। মমতার পুলিশ, মমতার ভৃত্য বিনীত গোয়েলের নেতৃত্বে চারদিকে ব্যারিকেড করে রাস্তা বন্ধ করেছে। আমার মনে হয়, ১৯৭৭ সালে জরুরি অবস্থার সময়ও এ জিনিস হয়নি। বিরোধী দলনেতাকে ১ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়েছে। আমি মমতার মতো ভাঙচুরের রাজনীতি করি না। আমি এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেছি। রাজ্যপালের আপ্তসহায়ককে মেসেজ করেছি। রাজভবনের তরফে বলা হয়েছে, রাজভবনের বাইরের রাস্তা পুলিশের দায়িত্বে। রাজ্যপাল মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওঁর আপ্তসহায়ক'।
লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরই রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় অশান্তির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এই নিয়ে পদক্ষেপ করতে রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। রাজনৈতিক হিংসা সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের নির্দেশ, অবিলম্বে ভোট পরবর্তী হিংসা বন্ধ করতে হবে। এজন্য রাজ্য পুলিশকে পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি কৌশিক চন্দ এবং অপূর্ব সিনহার বেঞ্চের পর্যেবক্ষণ, যে কোনও ভাবে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা বন্ধ করতে হবে রাজ্য পুলিশকে। বিচারপতি চন্দ শুনানি চলাকালীন বলেন, 'সংবাদমাধ্যমে আমরা ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা দেখতে পাচ্ছি। অবিলম্বে এটা বন্ধ করা উচিত।' এই প্রসঙ্গে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, 'এগুলি আদৌ ভোট পরবর্তী হিংসা নয়। যে সব ঘটনা ঘটেছে, তার সাপেক্ষে সমস্ত প্রমাণ-সহ রাজ্যের বক্তব্য আদালতের কাছে পেশের জন্য সময় দেওয়া হোক।' রাজ্যের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি চন্দ। আদালতের নির্দেশ, আক্রান্তরা ডিজিকে মেল করে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। সমস্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে যাতে অবিলম্বে পদক্ষেপ করা হয়, তার জন্য স্থানীয় থানাকে ব্যবস্থা নিতে ডিজিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।