ঘর্ণিঝড় রিমালের প্রবাব থেকে এখন পুরোপুরি মুক্ত দক্ষিণবঙ্গ। এবার ফের তাপমাত্রার পারদ চড়বে বলেই পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের। গরম ও অস্বস্তির আবহাওয়া ফের ফিরছে। আগামী তিন দিনে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা তিন থেকে পাঁচ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেতে পারে। আবার বৃষ্টি কবে? ভোটের দিন কেমন থাকবে আবহাওয়া? বাংলায় বর্ষা ঢুকছে কবে? চলুন জেনে নেওয়া যাক হাওয়া অফিসের আপডেট।
গরম ও অস্বস্তির আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গে
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কাটতেই একধাক্কায় ৪ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লো দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রা। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় সঙ্গে থাকছে অস্বস্তিকর গুমোট গরম। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির জন্য ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও দক্ষিণের জেলাগুলিতে সেভাবে আপাতত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। বিক্ষিপ্তভাবে কিছু জায়গায় বৃষ্টিপাত হতে পারে দক্ষিণবঙ্গে। হাওয়া অফিস বলছে, বুধবার উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, ও নদিয়ার কোথাও কোথাও হাল্কা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া বাকি জেলাগুলির আবহাওয়া শুকনো থাকতে চলেছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদের কোথাও কোথাও হাল্কা থেকে মাধারি বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া বাকি জেলাগুলির কোথাও কোথাও হাল্কা বৃষ্টি হতে পারে। শুক্রবার উল্লিখিত জেলাগুলিতে ঘন্টায় ৪০-৫০ কিমি বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
সপ্তম দফা ভোটে বৃষ্টির পূর্বাভাস
আগামী শনিবার দেশে সপ্তম তথা শেষ দফার ভোট। এদিন নির্বাচন হবে দক্ষিণবঙ্গের ৯টি লোকসভা কেন্দ্রে। শেষ দফার ভোটের দিনে বজ্র-বিদ্যুৎসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে রাজ্যজুড়ে। দক্ষিণের যে যে জেলায় ভোট রয়েছে সেই জেলাগুলিতেও বৃষ্টির দাপট থাকবে। হাওয়া অফিস বলছে, শনিবার ও রবিবার সবকটি জেলাতেই হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে শনিবার সবকটি জেলাতেই দমকা হাওয়া এবং বজ্রবিদ্যুতের সম্ভাবনা রয়েছে। নতুন সপ্তাহের সোমবার উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ার কোথাও কোথাও হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া বাকি জেলাগুলিতে হাল্কা বৃষ্টির সম্ভাবনা।
উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি চলবে
উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এই তিন জেলায় আজ ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকছে। দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলায় ঝোড় হাওয়ার সতর্কতা। বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় রিমাল শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপ হিসেবে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির ওপরে অবস্থান করছে। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গের ওপরে সরাসরি কোনও প্রভাব না থাকলেও, আবহাওয়ার অনুকূল পরিস্থিতির কারণে আগামী পাঁচ দিন জলপাইগুড়ি, কালিম্পং ও আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বৃহস্পতিবার দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কালিম্পং-এ ভারী বৃষ্টি হতে পারে। অন্যদিকে আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলার কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। যে কারণে এই দুটি জেলার জন্য কমলা সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। তবে উল্লিখিত পাঁচ জেলাতেই দমকা হাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। শনিবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়।
কলকাতার আবহাওয়া
আগামী ২৪ ঘন্টায় কলকাতা ও আশপাশের এলাকার আকাশ মেঘলা থাকবে। বিকেল কিংবা সন্ধের দিকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে যথাক্রমে ৩২ ও ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। মঙ্গলবার শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ২.১ ডিগ্রি কম। তবে হাওয়া অফিস বলছে, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে আগামী তিন দিনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী ভোটের দিন শহরে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
বর্ষার প্রবেশ
১ জুন কেরল উপকূলে বর্ষা আসবে। দেশের মূল ভূখণ্ডে বর্ষা প্রবেশ করার পরেই রাজ্যে কবে বর্ষা ঢুকবে সেই সম্পর্কে স্পষ্ট বার্তা দিতে পারবে আবহাওয়া দফতর। বাংলায় কবে বর্ষা ঢুকবে, সে বিষয়ে আপাতত মৌসম ভবনের তরফে কিছু জানানো হয়নি। সাধারণত ১১ জুনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করে যায়। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, কেরলে স্বাভাবিক সময়েই বর্ষা ঢুকলে পশ্চিমবঙ্গে যে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করবে, সেরকম কোনও নিশ্চয়তা নেই। কেরলে প্রবেশের পরে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু কতটা সক্রিয় আছে, সেটার উপরেই নির্ভর করবে যে বাংলায় কখন প্রবেশ করবে।