হাওয়া অফিস আগেই জানিয়েছিল জুন মাসের শুরু থেকেই দক্ষিণবঙ্গে লাগাতার বৃষ্টি চলবে। সেইমতো মে মাসের শেষেই বদলে গেল আবহাওয়া। বৃহস্পতিবার মাঝরাত থেকেই দক্ষিণবঙ্গের কলকাতা-সহ একাধিক জেলায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ, বৃষ্টি সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইছে শহরে। হাওয়া অফিস বলছে শেষ দফার ভোট ও গণনার দিনও বৃষ্টি হবে রাজ্যে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কেমন থাকতে চলেছে আগামী কয়েকদিন বাংলার আবহাওয়া।
বদলে গেল আবহাওয়া
রাত থেকেই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি শুরু হয়। কোথাও কোথাও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হচ্ছে। কোথাও সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। রাতভর কলকাতা শহরের ডানলপ, বরাহনগর, দমদম পার্ক, শ্যামবাজার, বেহালা, বাগুইআটি, এন্টালি, বিধাননগর, কালিকাপুর, সল্টলেক, নিউ টাউন, যাদবপুর, গড়িয়া, পাটুলি, গল্ফগ্রিন, ঢাকুরিয়া, সেলিমপুর এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া-সহ বৃষ্টি হয়েছে। হুগলি ও উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকাতেও বৃষ্টির খবর পাওয়া যাচ্ছে। আজ শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গের সবকটি জেলার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া
১ জুন থেকে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি কিছুটা বাড়তে পারে। সঙ্গে হতে পারে ঝড়। ১, ২ এবং ৩ জুন দক্ষিণের সব জেলায় বজ্রপাত ও ঝড়ের হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এরপরও আগামী ৪ ও ৫ জুন দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই বৃষ্টি হতে পারে বলে আগাম পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর হাওয়া অফিস। আগামী ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণবঙ্গের তিনটি জেলা পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া ও বীরভূমে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি ও ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়ার সর্তকতা জারি করা হয়েছে। ১ তারিখে দক্ষিণবঙ্গের অনেকগুলি জেলাতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে, এরমধ্যে রয়েছে দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও দুই বর্ধমানান।
ভোটের দিন বৃষ্টি
শনিবার পয়লা জুন ভোট রয়েছে রাজ্যের নটি কেন্দ্রে। ওই কেন্দ্রগুলি ছড়িয়ে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং কলকাতায়। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, সবকটি জেলাতেই হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া জেলাগুলির কোথাও কোথাও ঘন্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে আবার কোথাও ঘন্টায় ৪০-৫০ কিমি বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। লোকসভা ভোটের গণনার দিন ৪ তারিখও রাজ্যে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি চলবে
উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সর্তকতা রয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলায় ভারী বৃষ্টি চলবে। আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এই ৩ জেলাতে কমলা সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েকদিন দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের প্রত্যেকটা জেলাতে হলুদ সর্তকতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। আগামী বুধবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের সবকটি জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। শনিবার, রবিবার ও সোমবার দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুর জেলার কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া রবিবার দক্ষিণ দিনাজপুরে ভারী ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
কলকাতার আবহাওয়া
শুক্রবার বৃষ্টি দিয়েই শুরু হয়েছে কলকাতার দিন। হাওয়া অফিস বলছে, আগামী ২৪ ঘন্টায় কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় আকাশ সাধারণভাবে মেঘলা থাকবে। কোথাও কোথাও হাল্কা বৃষ্টি হতে পারে। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে যথাক্রমে ৩৪ ও ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। শনিবার ভোটের দিন শহরে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
বর্ষার আপডেট
বর্ষা বৃহস্পতিবারই কেরলে প্রবেশ করেছে। বর্ষা প্রবেশ করেই কেরলের অনেক জায়গায় ইতিমধ্যে বিস্তৃত হয়েছে। তবে আমাদের রাজ্যের জন্য বর্ষা সময়রে আগে আসার আপাতত কোন সম্ভাবনা নেই। তবে সিকিমে আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে বর্ষা ঢুকে যাবে। হাওয়া অফিস বলছে, উত্তরে মৌসুমী বায়ু নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম, অরুণাচল প্রদেশে পুরোপুরি ঢুকে গিয়েছে। এছাড়া ত্রিপুরা, মেঘালয়, অসমের অধিকাংশ জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে মৌসুমী বায়ু। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে হিমালয় সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমের আবহাওয়া মৌসুমী বায়ুর অগ্রসরের পক্ষে অনুকূল হবে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণাবর্তের রূপে একটি অক্ষরেখা উত্তর-পশ্চিম উত্তর প্রদেশ থেকে দক্ষিণ বিহার, হিমালয় সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমের ওপর দিয়ে পশ্চিম বাংলাদেশে গিয়েছে। ফলে প্রচুর জলীয় বাষ্প উত্তরবঙ্গের ওপরে ঢুকছে। যে কারণে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।