ব্যারাকপুরে সোনার দোকানে লুটপাট চালিয়ে 14 নম্বর রেলগেটকে কাজে লাগিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তদন্তে নেমে এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীরা। তদন্তকারীদের দাবি, রেল ব্যারাকপুরের ওল্ড ক্যালকাটা রোডের উপর যে সোনার দোকানটিতে ডাকাতি হয়েছে, সেটি ব্যারাকপুর রেলগেট এবং সেন্ট্রাল রোডের মাঝামাঝি জায়গায়। দোকানটি থেকে কয়েক মিনিটের দূরত্বেই লাটবাগান পুলিশ ব্যারাক এবং টিটাগড় থানা। লাটবাগান থেকে পুলিশকে আসতে 14 নম্বর রেলগেট পেরোতে হবে। সন্ধ্যার সময় যখন একের পর এক আপ-ডাউন ট্রেন ওই লাইন দিয়ে পার হয়। তখন একটা দীর্ঘ সময় ওই রেলগেট বন্ধ থাকে। ফলে এক বার যদি রেলগেটে কেউ ওই সময় আটকে যায়, বেরোতে অনেকটাই সময় লাগে। তদন্তকারীদের যুক্তি, টিটাগড় থানা থেকে বিটি রোড হয়ে ওল্ড ক্যালকাটা রোড ধরে মিনিট কুড়ি মতো লাগে সোনার দোকানের ঠিকানায় পৌঁছতে। রেলগেট বন্ধ থাকলে, লাগে আরও বেশি সময়। যার জেরে 20 মিনিটের রাস্তা হয়ে যায় অন্তত আধ ঘণ্টার! ফলে পুলিশ যতক্ষণে ঘটনাস্থলে পৌঁছবে, দুষ্কৃতীরা তত ক্ষণে ভিড়ের মধ্যে মিশে গিয়ে সহজেই কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে পৌঁছে যাবে। এক্সপ্রেসওয়েতে এক বার পৌঁছতে পারলে দুষ্কৃতীদের টিকি পাওয়া কার্যত অসম্ভব। গোয়েন্দাদের অনুমান, পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে ওল্ড ক্যালকাটা রোড থেকে দু’ভাগে ভাগ হয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। একটি বাইক চলে যায় বাঁ দিকে, অন্যটি ডান দিকে। পালানোর পথ হিসাবে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েকে বেছে নেওয়ার কারণ, 2 নম্বর জাতীয় সড়ক ধরতে পারলে দেশের যে কোনও প্রান্তে পৌঁছে যাওয়া যাবে খুব সহজেই। এছাড়া, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে এমনিতেই ফাঁকা থাকে এবং বাড়তি সুবিধা হল, কোনও সিসি ক্যামেরাও নেই। এর উপর বাজার এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় ভর সন্ধ্যায় ভিড় ঠেলে টিটাগড় থানা থেকে পুলিশের ঘটনাস্থলে পৌঁছতেও সময় লেগেছিল। তবে এখনও পর্যন্ত দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ অনেকটাই সুবিধা করেছে পুলিশি তদন্তে। উল্লেখ্য, বুধবার, 24 মে সন্ধ্যায় উত্তর 24 পরগনার ব্যারাকপুর স্টেশনের কাছেই আনন্দপুরীর একটি সোনার দোকানে ডাকাতি হয়। দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দোকানমালিক নীলরতন সিংহের পুত্র নীলাদ্রি সিংহের। গুলিবিদ্ধ হন নীলরতন এবং দোকানের নিরাপত্তারক্ষী শঙ্কর চক্রবর্তী। তাঁরা ব্যারাকপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন।
Barrackpore murder: After the robbery, criminals fled in Dhoom movie style, claims Police source.