খালিস্তানি সন্ত্রাসবাদী হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যা মামলায় ভারতের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তাঁকে নিয়ে এবার চমকপ্রদ তথ্য সামনে এসেছে। সম্প্রতি, জি২০ সম্মেলনে অংশ নিতে নয়াদিল্লি এসেছিলেন ট্রুডো। পাঁচ দিন দিল্লিরই একটি হোটেলে ছিলেন তিনি। ভারত সরকারের অতিথি হিসেবে ট্রুডোকে প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট বরাদ্দ করা হলেও সেখানে থাকেননি তিনি। তার পরিবর্তে তিনি অন্য একটি হোটেল রুমে ছিলেন তিনি।
জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে আসেন ট্রুডো। জানা যায়, অন্যান্য নেতাদের মতো বিশেষ মনোযোগ পাননি তিনি। ৮ সেপ্টেম্বর ভারত সফরে আসেন, তারপর ১০ সেপ্টেম্বর কানাডায় ফেরার কথা ছিল তাঁর। তবে বিমান বিকল হয়ে যাওয়ায় ট্রুডোকে আরও দু'দিন ভারতে থাকতে হয়েছে। কানাডা থেকে আরেকটি বিমান নয়াদিল্লিতে পাঠানো হয়েছিল, ১২ সেপ্টেম্বর ট্রুডোকে সঙ্গে নিয়ে ফিরে আসে সেই বিমান।
জি২০ সম্মেলনের সময় নয়াদিল্লির ললিত হোটেলে ছিলেন তিনি। ট্রুডোর জন্য হোটেলে একটি পৃথক প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট বুক করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি একদিনের জন্যও প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট ব্যবহার করেননি। তিনি হোটেলের একটি সাধারণ রুমেই ছিলেন।
'প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট বুক করা হয়েছিল, কিন্তু ট্রুডো থাকেননি'
ভারত সরকার দিল্লিতে সমস্ত রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য ভিভিআইপি হোটেল বুক করেছিল। সমস্ত হোটেলে রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য আলাদা প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট বুক করা ছিল। দিল্লি পুলিশ এবং বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থা সমস্ত রাষ্ট্রপতি স্যুটের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দিয়েছিল।
'সাধারণ হোটেল রুমে থাকেন'
কানাডার প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটে থাকাকে উপযুক্ত মনে করেননি। হোটেলের একটি সাধারণ রুমে থেকেছেন। এখানেই জল্পনা দানা বাঁধে।
বিমানের ত্রুটির কারণে অস্বস্তিতে পড়েন ট্রুডো
বিমানের ত্রুটির কারণে ট্রুডোকে ভারতে খুব অস্বস্তিতে পড়তে দেখা গিয়েছিল। ১১ সেপ্টেম্বর দ্য ললিত হোটেলের বাইরেও বের হননি তিনি। ট্রুডোও বিমানের ত্রুটি নিয়ে কানাডিয়ান মিডিয়ার আক্রমণের মুখে পড়েন। কানাডিয়ান টেলিভিশন নেটওয়ার্ক সিটিভি নিউজ এক প্রতিবেদনে বলেছে, "এটি লজ্জাজনক, একটি দেশ হিসেবে আমাদের জন্য লজ্জাজনক।" আমাদের প্রধানমন্ত্রী যে বিমানে ভ্রমণ করছেন সেখানে ত্রুটি, যা থেকে বোঝা যায় কী পরিকাঠামো।"
'প্রধানমন্ত্রী মোদী ও ট্রুডোর সম্পর্ক তলানিতে'
কানাডার গ্লোবাল নিউজ এক প্রতিবেদনে বলেছে, প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং জাস্টিন ট্রুডোর মধ্যে একটি অদ্ভুত সম্পর্ক রয়েছে। গ্লোবাল নিউজ জানিয়েছে, 'ভারতীয় মিডিয়ায় ট্রুডোকে টার্গেট করা হয়েছে। শিরোনাম হয়েছিল যে শীর্ষ সম্মেলনের সময় ট্রুডো থাকলেন অগোচরে। প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং ট্রুডোর মধ্যে শুধুমাত্র একটি সংক্ষিপ্ত দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছিল।
কানাডায় খালিস্তানি আন্দোলন নিয়ে মোদী ও ট্রুডোর মধ্যে উত্তেজনা দিন দিন বাড়ছে। এ নিয়ে ভারত ক্রমাগত আপত্তি জানিয়ে আসছে। কানাডিয়ান নিউজ চ্যানেল বলেছে- এটি ট্রুডোর দ্বিতীয় ভারত সফর খুবই খারাপ অভিজ্ঞতায় কেটেছে। জাস্টিন ট্রুডো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ২০১৮ সালে প্রথমবার ভারতে এসেছিলেন। সেই সফরটি খুব খারাপ হয়ে রয়ে যায়।