'কলকাতা, তুমিও হেঁটে দেখো কলকাতা, তুমিও ভেবে দেখো, কলকাতা...', কলকাতার রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে এই গান তো গেয়েছেন। কিন্তু আমেরিকায় যদি কলকাতায় এই ছোঁয়া থাকে তাহলে কেমন লাগবে? এই অসাধ্য সাধন করতে চলেছে নিউ জার্সির এক ঝাঁক বাঙালি। তাঁদের দুর্গাপুজোর এবারের থিম 'City Of Kolkata।'
শোনা যায়, মার্কিন মুলুকে সব থেকে বেশি বাঙালির বসবাস নিউ জার্সিতে। সেখানে অনেক দুর্গাপুজো হয়। সেগুলোর মধ্যে স্বতন্ত্রভাবে জায়গা করে নিয়েছে ত্রিনয়নীর দুর্গাপুজো। এর আগে মাত্র ২ বছর পুজো করেছিল এই পুজো কমিটি। প্রথম থেকেই থিমে চমক দিচ্ছে এই পুজো কমিটি। প্রথমবার থিম ছিল যামিনী রায়ের শিল্প। দ্বিতীয়বার বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'পথের পাঁচালি' উপন্যাসের 'নিশ্চিন্দপুর' গ্রাম। তবে এবার সবকিছুকে ছাপিয়ে 'City Of Joy' কলকাতা-দেখা যাবে নিউ জার্সিতে।
নিউ জার্সি এবং পেনসিলভেনিয়ার বাঙালিদের এই পুজোর থিমকে বাস্তবায়িত করেন পুজো কমিটির সদস্যরাই। কলকাতার মেট্রো, ট্রাম, হাতে টানা রিক্সা, হাওড়া ব্রিজের শিল্পকর্ম হাতে তৈরি করেছেন উদ্যোক্তারা। এবছর সেখানে পুজো হবে ১২ ও ১৩ অক্টোবর। এই দুইদিন পুজোর আনন্দে সামিল হন মার্কিন মুলুকের বাসিন্দারাও। তাঁরাও বাঙালির মতোই প্রতিমাকে নমস্কার করেন। মেতে ওঠেন পুজোর আড্ডায়।
পুজো বা থিমের মধ্যেই সীমাবন্ধ থাকে না ত্রিনয়নী। চলে দেদার খাওয়া দাওয়াও। আমিষ ও নিরামিষ রান্নার ব্যবস্থা করে থাকে এই পুজো কমিটি। ওই দুই দিন সবাই মণ্ডপেই খাওয়া দাওয়া করেন। আট থেকে আশি সামিল হয় পুজোর আনন্দে। চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। গতবছর 'ভূমি' ব্যান্ড অনুষ্ঠান করতে গিয়েছিল ত্রিনয়নীতে। এবারও তেমনই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মার্কিন মুলুকে এবারের শিল্পী রাঘব চট্টোপাধ্যায় ও সোমলতা।
পুজো কমিটির এক উদ্যোক্তা জানান, 'ত্রিনয়নী আমাদের কাছে আবেগ। কর্মসূত্রে আমেরিকায় থাকি। কলকাতার দুর্গাপুজোকে মিস করি। তবে সেই অভাব পূরণ করে দেয় এই পুজো। পুজোর আয়োজন, থিম তৈরি, খাওয়া দাওয়ার আয়োজন সব আমাদের নিজে হাতেই করতে হয়। আনন্দে কেটে যায় প্রস্তুতি ও পুজোর দিনগুলো।'