মানুষের শরীরের ভিতর বাসা বাঁধছে ব্যাকটেরিয়া। আর তা খেয়ে ফেলছে মাংস। মাংস খেকো ওই ব্যাকটেরিয়ার ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ব্যাকটেরিয়ার জেরে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হতে পারে মানুষের। কোভিড পরবর্তী এই ব্যাকটেরিয়ার ফলে এখন ঘুম উড়েছে অনেকের।
এই ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পাওয়া গেছে জাপানে। পৃথিবীর সব দেশে কোভিড ছড়িয়েছিল। কোভিড পরবর্তী সময়ে এখন এই ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়তে হচ্ছে জাপানকে। সেই দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের তরফে জানানো হয়েছে, এই ব্যাকটেরিয়াকে স্ট্রেপ্টোকোকাল টক্সিক শক সিন্ড্রোম বা SSTS বলা হচ্ছে। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই ব্যাকটেরিয়া ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
জাপানে চলতি বছরের ২ জুন পর্যন্ত STSS-এ ৯৭৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। যা গত বছরের রেকর্ড ৯৪১ টিরও বেশি। ১৯৯৯ সাল থেকে এই রোগের উপর নজরদারি চালাচ্ছে জাপান।
এই ব্যাকটেরিয়াতে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে বয়স্ক, সবাই। শিশুদের গলা ব্যথা, জ্বর, বমির মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। ব্লুমবার্গের মতে, এই ব্যাকটেরিয়া শরীরে ছড়িয়ে পড়লে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ব্যথা, ফোলাভাব, জ্বর, শ্বাসকষ্ট হয়। এর চরম পরিণতি হল মৃত্যু। অনেকে বিকলাঙ্গও হয়ে যাচ্ছে।
টোকিও উইমেনস মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির এক অধ্যাপক জানিয়েছেন, আক্রান্তদের মধ্যে অনেকেই মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মারা যাচ্ছেন। মৃত্যুর হার ৩০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে। ৫০ বছর বা তার বেশি যাদের বয়স তারা আক্রান্ত হচ্ছে সবথেকে বেশি। চলতি বছরেই আক্রান্ত প্রায় আড়াই হাজার। তার মধ্যে মৃত্যু হতে পারে ৭৫০ জনের।
মূলত শরীরের কেনও ঘা বা কাটা জায়গা থেক এই সমক্রমণ ছড়াচ্ছে। কোনও ক্ষত অংশ থাকলে তা নিয়ে অধিক সাবধানতা অবলম্বনে জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। বিশেষ করে হাত-কে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
ব্লুমবার্গের মতে, জাপান ছাড়াও সম্প্রতি অন্য অনেক দেশে স্ট্রেপ্টোকোকাল টক্সিক শক সিনড্রোমের তথ্য সামনে এসেছে। ২০২২ সালের শেষের দিকে অন্তত পাঁচটি ইউরোপীয় দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে এই নিয়ে রিপোর্টও জমা দিয়েছিল।
এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, ত্বকের সংক্রমণ, অস্ত্রোপচার, সন্তানের জন্ম বা নাক থেকে রক্তপাতের পর এই ব্যাকটেরিয়ার সমক্রমণ হতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা করতেই হবে। একবার ব্যাকটেরিয়ায় সংক্রমিত হয়ে গেলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হতে পারে।