প্রচার সমাবেশে গুলি করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টায় অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০ বছরের ওই তরুণের নাম থমাস ম্যাথিউ। পেনসিলভেনিয়ার বাসিন্দা। সিক্রেট সার্ভিস স্নাইপাররা শনিবার ক্রুকসকে পাল্টা গুলিতে হত্যা করেছে। সে পেনসিলভানিয়ার বাটলারের সমাবেশে কাছাকাছি একটি ছাদ থেকে একাধিক গুলি চালিয়েছিল। অভিযুক্ত তরুণের বিষয়ে তাঁর সহপাঠীরা জানাচ্ছেন, সে স্কুলে খুবই শান্ত ছিল। এবং সবসময় একাই থাকত। কারও সঙ্গে বড় একটা মিশত না। তাঁকে ট্রাম্পের রাজনীতি নিয়ে কোনওদিন আলোচনা করতেও কেউ শোনেনি।
সমাবেশে ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প কানে আঘাত পান। থমাসের গুলিতে একজন ট্রাম্প সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে। এবং দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন। থমাসের সহপাঠী জেসন কোহলার জানিয়েছেন, থমাসকে স্কুলে অনেকেই উত্যক্ত করত। থমাস চুপচাপ থাকত। কোনও কারণ ছাড়াই তার পেছনে লাগত অনেকে। তার পোশাক নিয়েও মজা করা হত। সে মাঝেমধ্যে শিকারের পোশাক পরত।
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস সূত্রে খবর, ক্রুকস যে এলাকায় বেড়ে উঠেছে, সেখানকার কাউন্টি কাউন্সিলের প্রতিনিধি ড্যান গ্রজিবেক জানিয়েছেন, এলাকাটিতে উচ্চ মধ্যবিত্তদের বাস। ক্রুকস একটি নার্সিং হোমেও কাজ করছিলেন। এই ঘটনায় তার যুক্ত থাকার কথা শুনে সেখানকার লোকজনও অবাক।
ঘটনার পর, তদন্তকারীরা ক্রুকসের গাড়িতে একটি "সন্দেহজনক ডিভাইস" খুঁজে পেয়েছেন, যা বোমা প্রযুক্তিবিদদের দ্বারা পরিদর্শন করা হয়েছে এবং বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। উল্লেখ করা হয়েছে, সন্দেহভাজন বিস্ফোরক ডিভাইসগুলি প্রমাণ হিসাবে সংগ্রহ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এখন ক্রুকসের ফোন অনুসন্ধানের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
এফবিআইয়ের পিটসবার্গ ফিল্ড অফিসের দায়িত্বে থাকা স্পেশাল এজেন্ট কেভিন রোজেক রবিবার সাংবাদিকদের বলেছেন যে, গুলি করার সময় যে বন্দুকটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি একটি এআর-স্টাইলের আধা-স্বয়ংক্রিয় রাইফেল যা বৈধভাবে কেনা হয়েছিল। তদন্তকারীরা মনে করছেন অস্ত্রটি ক্রুকসের বাবা কিনেছিলেন। রোজেক যোগ করেছেন যে এখনও পর্যন্ত কোনও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। পেন্টাগনের মুখপাত্র মেজর জেনারেল প্যাট রাইডারের মতে, ক্রুকসেরও সামরিক সম্পর্ক ছিল না।
এফবিআই সাংবাদিকদের বলেছে যে, তারা ঘটনাটিকে একটি হত্যা প্রচেষ্টা এবং সম্ভাব্য অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদের আইন হিসাবে তদন্ত করছে। এফবিআই-এর মতে শ্যুটার একা কাজ করছে বলে মনে করা হচ্ছে। কোনও গোষ্ঠীর খোঁজ এখনও মেলেনি।
উল্লেখ্য, শনিবার পেনসিলভেনিয়ার বাটলারে একটি সভায় গিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর বক্তৃতা শোনার জন্য প্রচুর মানুষের জমায়েত হয়েছিল। মঞ্চে উঠে কথা বলতে শুরু করেন ট্রাম্প। তখনই পর পর বেশ কয়েক বার গুলির শব্দ হয়। সভাস্থলে আতঙ্কে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। একটু পরে দেখা যায়, ট্রাম্পের ডান কানের পাশ থেকে রক্ত বেরোচ্ছে। তবে গুলি কান ঘেঁষে বেরিয়ে গেলেও এখন সুস্থ রয়েছেন ট্রাম্প।