scorecardresearch
 

'কার্গিলের জন্য দায়ী পাক সেনা', যুদ্ধের দু'দশক পর বিস্ফোরক নওয়াজ

ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) এর তরফ থেকে কোয়েটায় তৃতীয় জনসভা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেই সভায় অংশ নেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। সেখানেই কার্গিল যুদ্ধের দায় পাক সেনা জেনারেলদের ওপরেই চাপিয়ে দেন পাকিস্তান মুসলিম লিগের প্রধান।

Advertisement
নওয়াজ শরিফ নওয়াজ শরিফ
হাইলাইটস
  • পাকিস্তান জুড়ে ইমরান বিরোধী হাওয়া
  • তারমধ্যেই সুর চড়ালেন নওয়াজ শরিফ
  • কার্গিল যুদ্ধ নিয়ে এবার সেনার দিকে তোপ

পাকিস্তান জুড়ে বিরোধী দলগুলি এককাট্টা হয়ে ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে জোরদাড় প্রচার চালাচ্ছে। পাক প্রধানমন্ত্রীকে  গদিচ্যুত করতে একজোট হয়েছে ১১টি বিরোধী দল। পাকিস্তান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (পিডিএম) ব্যানারে পাকিস্তানজুড়ে এই বিক্ষোভ-সমাবেশ চলছে। পাকিস্তান মুসলিম লিগ এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির মত যুযুধান দুই বিরোধী শিবির এই আন্দোলনে হাতে হাত মিলিয়েছে। করাচি সহ দেশের নানা প্রান্তে  চলছে এই বিক্ষোভ সমাবেশ। আর তার মধ্যেই বোমা ফাঁটালেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। কার্গিল যুদ্ধের প্রায় দু'দশক পর স্বীকার করে নিলেন প্রকৃত সত্যটা।

ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) এর তরফ থেকে কোয়েটায় তৃতীয় জনসভা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেই  সভায় অংশ নেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। সেখানেই কার্গিল যুদ্ধের দায় পাক সেনা জেনারেলদের ওপরেই চাপিয়ে দেন পাকিস্তান মুসলিম লিগের প্রধান।

শরিফ দাবি করেন, কার্গিল যুদ্ধ পাকিস্তানি বাহিনী নয় চেয়েছিল মুষ্টিমেয় সেনা আধিকারিক। শরিফ বলেছেন, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কাছে যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্রও ছিল না। সেইসঙ্গে ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধে  পাকিস্তানের কোনও লাভ হয়নি তাও জনসভায় স্বীকার করে নিতে বাধ্যহন কৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী ।

বালোচিস্তানের কোয়েটায় ১১ বিরোধী দলের এক সমাবেশে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, কার্গিল লড়াইয়ে পাকিস্তানকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল দেশের কয়েকজন সেনা জেনারেল। তিনি এই যুদ্ধ চাননি। শরিফ নিজের কাঁধ থেকে দায় ঝেড়ে বলেন, কার্গিলে শয়ে শয়ে পাকিস্তানি সেনার মৃত্যুর জন্য দায়ী দেশের সেইসব সেনা জেনারেলরা। তারাই পাকিস্তানকে কার্গিল যুদ্ধের দিকে এগিয়ে দিয়েছিল। তাঁর কথায়, "পাহাড়ের চূড়ায় আমাদের সেনারা খাবার না পেয়ে অস্ত্র না পেয়ে মারা গিয়েছিল। আজও আমার সেকথা মনে পড়লে মানসিক যন্ত্রণা হয়। তাদের ত্যাগ দেশের কোনও কাজে লাগেনি।" 

Advertisement

শরিফ বলেছেন, কার্গিল যুদ্ধে অনেক পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছিল। এটি পুরো বিশ্বের সামনে পাকিস্তানের সঙ্গীন পরিস্থিতি সামনে নিয়ে এসেছিল। এর জন্য মাত্র কয়েকজন সিনিয়র সেনা অফিসার দায়বদ্ধ ছিলেন। এই কয়েকজন কেবল সেনাবাহিনীই নয়, পুরো দেশকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। এই যুদ্ধ কিছুই অর্জন করতে পারেনি দেশ। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এমনকি পর্যাপ্ত খাবারও পায়নি। এই কয়েকজন পাকিস্তানি কর্মকর্তা তাদের কর্মকাণ্ড আড়াল করতে এবং শাস্তি এড়াতে সামরিক আইন ঘোষণা করেছিলেন।  ব্যক্তিগত লাভের জন্য সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করায় মোশাররফ এবং তার সহযোগীদের সমালোচনা করেছেন শরিফ।

বিরোধীদের অভিযোগ, ২০১৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে ইমরানকে প্রধানমন্ত্রীর পদে বসানোর পেছনে সেনাবাহিনীর হাত রয়েছে। ইমরান দেশ চালাতে ব্যর্থ হয়েছে অভিযোগ তুলেই এখন পাকিস্তান জুড়ে বিক্ষোভ-আন্দোলন চলছে। নওয়াজ শরিফ পাকিস্তানের সেনাপ্রধান বাজওয়া এবং আইএসআই প্রধান হামিদেরও সমালোচনা করেছেন। শরিফ পাকিস্তানের বর্তমান খারাপ পরিস্থিতির জন্য উভয়কেই দায়ী করেছেন। পাকিস্তানে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে সেই নির্বাচনের আগেই  প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পদত্যাগ চাইছে বিরোধীরা। তাই জন্য ক্রমেই সুর চড়াচ্ছে বিরোধী দলগুলি।

 

Advertisement