প্রবল বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল লেবাননের রাজধানী বেইরুটের বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকা। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, খানিকক্ষণ আগেও বেইরুট বিমানবন্দরে বিমান অবতরণ হয়েছিল। শুক্রবারের এই বিস্ফোরণটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে বিমানবন্দরের আশপাশের এলাকা কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। শেষ বিমানটি বেইরুট বিমানবন্দরে (মিডল ইস্ট এয়ারলাইন্স ME429) দুবাই থেকে এসেছিল।
যদিও বিস্ফোরণটি বিমানবন্দরের ভিতরে ঘটেনি, তবে বিমানবন্দরের ৬.৮ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সিন এল ফিল থেকে দেখা যাচ্ছিল বলে খবর মিলেছে। বিমানবন্দরে এখনও কোনও ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
শুক্রবারের দিনটি গুরুত্বপূর্ণ
মধ্যপ্রাচ্যে খোলা সাতটি ফ্রন্টের মধ্যে শুক্রবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন হতে চলেছে। কারণ, নিহত হিজবুল্লাহ প্রধান নাসরুল্লাহর অন্তিম সংস্কার হওয়ার কথা। সেই নাসরাল্লাহের দেহ নিয়েও এখনও জল্পনা আছে। এদিকে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনি তেহরানে ভাষণ দিতে যাচ্ছেন, তিনি কী বার্তা দিচ্ছেন তার দিকে আজ নজর থাকবে বিশ্বের সব দেশের। নাসরাল্লাহর মৃত্যুর পর খামেনিকে গোপন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এবার প্রথমবারের মতো হাজির হতে চলেছেন খামেনি।
শুক্রবারের দিনটি এই কারণে গুরুত্বপূর্ণ হবে কারণ ইরানের হামলা ৭২ ঘণ্টা হবে। খামেনির বক্তব্যের পর সবার চোখ থাকবে ইজরায়েলের 'ফ্রাইডে প্ল্যান'-এর দিকেও।
হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইজরায়েলের যুদ্ধ সহজ নয়
সারা বিশ্ব হয়তো ইরানের ওপর ইজরায়েলের পাল্টা হামলার জন্য অপেক্ষা করছে, কিন্তু এরই মধ্যে ইজরায়েল এমন একটি ফ্রন্ট খুলেছে যেখানে তার কঠোর পরীক্ষা হবে নিশ্চিত। এর সবচেয়ে বড় কারণ হিজবুল্লাহর রকেট ও মিসাইলের মজুদ। হিজবুল্লাহর কাছে এক লক্ষেরও বেশি রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১১ কিলোমিটার দূরত্বের ফলক, ১৩ কিলোমিটার দূরত্বের কাতিউশা ক্ষেপণাস্ত্র, ৪৩ কিলোমিটার দূরত্বের ফজর ৩, ৭৫ কিলোমিটার দূরত্বের খাইবার, ২১০ কিলোমিটার দূরত্বের জেলজেল ৩০০ কিলোমিটার রেঞ্জ এবং ৩০০ কিলোমিটার রেঞ্জের ফতাহ ১১০ মিসাইল। এছাড়াও, Skuv ক্ষেপণাস্ত্র হিজবুল্লাহর কাছে থাকা দীর্ঘতম রেঞ্জের ক্ষেপণাস্ত্র। এভাবে হিজবুল্লাহ ইজরায়েলের প্রতিটি কোণায় আক্রমণ করার ক্ষমতা রাখে। তারা নিমেষে ইজরায়েলের আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট বর্ষণ করতে পারে।
হিজবুল্লাহর এই শক্তি লেবাননে হামলার পর ইজরায়েলের জন্যও সমস্যা তৈরি করছে। আর এদিকে, প্রশ্ন হল এটা কি যে ইরানের ১৮০ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিনিময়ে ইজরায়েল লেবাননে হিজবুল্লাহর অবস্থানে হামলা চালাচ্ছে। ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, লেবাননে এখনও পর্যন্ত ২০০টি জায়গায় হামলা হয়েছে। হিজবুল্লাহর ৬০ জন সন্ত্রাসবাদী নিহত হয়েছে। যে বিল্ডিংটিতে হিজবুল্লাহ অস্ত্র মজুত হিসেবে ব্যবহার করত তা ধূলিস্যাৎ করে ফেলা হয়েছে। ইজরায়েল দক্ষিণ লেবাননের জনগণকে অনেক গ্রাম খালি করার বার্তাও দিয়েছে।