আফগানিস্তানের পরিস্থিতি উন্নতির বদলে খারাপ হচ্ছে। সন্ত্রাসী সংগঠন তালিবানরা রাজধানী কাবুলের প্রায় কাছে পৌঁছে গেছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রাজধানী কাবুলের কাছে অবস্থিত সামরিক শহর গজনি দখল করে নিয়েছে তালিবানরা। এখন আফগানিস্তানের মোট ১০ টি প্রাদেশিক রাজধানী তাদের নিয়ন্ত্রণে। আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের মাত্র কয়েক সপ্তাহ হয়েছে, এত অল্প সময়ের মধ্যে তালেবানরা গোটা দেশে ত্রাস সৃষ্টি করেছে। দাবি করা হচ্ছে, তালেবানরা আফগানিস্তানের ৬০ শতাংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে।
বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়েছে, গজনি কাবুল থেকে মাত্র ১৩০ কিলোমিটার দূরে। সেখানে তালিবান জঙ্গিরা ইসলামী প্রতীক সম্বলিত সাদা পতাকা উত্তোলন করেছে। তালিবানদের দ্বারা কিছু অনলাইন ভিডিও এবং ছবি পোস্ট করা হয়েছে যাতে তাদের গজনি প্রদেশের রাজধানী গজনিতে দেখা গেছে।
তালিবানদের গজনী দখল আফগানিস্তানের জন্য একটি বিশাল ধাক্কা। কাবুল-কান্দাহার সংযোগকারী মহাসড়ক গজনীর মধ্য দিয়ে গেছে। এই রাস্তা দিয়েই, কাবুল দেশের দক্ষিণ প্রদেশগুলির সাথে সংযুক্ত থাকে।
মানুষ কাবুলের দিকে ছুটছে
আফগান সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ শুধু তালেবান সন্ত্রাসীরা নয়। বরং নাগরিকদের জীবনযাপনের যথাযথ ব্যবস্থা, তাদের নিরাপত্তাও একটি চ্যালেঞ্জ। যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত হাজার হাজার মানুষ কাবুলে পালিয়ে আসছে এবং খোলা জায়গা এবং পার্কে বসবাস করছে।
আমেরিকা বলছে- আফগানদের উচিত নিজেদের রক্ষা করা
আমেরিকা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তালেবানদের সন্ত্রাস সত্ত্বেও তাদের সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বদলাচ্ছে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইতিমধ্যে এক বিবৃতিতে বলেছেন, আফগানিস্তানকে নিজেই তালেবানদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। যদিও, মার্কিন বিমান বাহিনী এয়ার স্ট্রাইকের মধ্যে দিয়ে আফগান সরকারকে সাহায্য করবে। বাইডেন প্রশাসন বিবৃতিতে জিনেয়ছে যে আফগান জাতীয় বাহিনীর তালিবানদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষমতা এবং অস্ত্র রয়েছে। এটাও বলা হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র দুই দশক ধরে আফগান জাতীয় সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
হিংসা রুখতে ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রস্তাব সরকারের
এদিকে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছে আফগানিস্তান সরকার। একের পর শহর দখল করে নিচ্ছে তালিবান। সেই পরিস্থিতিতে দেশের মধ্যে লড়াই রুখতে তালিবানকে ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রস্তাব দিল আফগানিস্তান সরকার। এমনটাই জানিয়েছে সংবাদসংস্থা এএফপি। ওই সংবাদ সংস্থা বলছে, মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাতারের কাছে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছে কাবুল। দেশে হিংসায় ইতি টানতে তালিবানের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির বিকল্পের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।