সময়টা আজ থেকে ঠিক ৫ বছর আগে। ফ্রান্সের রম্য সাময়িকী শার্লি এবদোতে ইসলামের নবী মোহাম্মদকে নিয়ে কার্টুন আঁকার জন্য প্রাণ দিতে হয়েছিল ১২ জন সাংবাদিককে। আর এবার নবী মোহাম্মদের কার্টুন পড়ুয়াদের দেখানোর জন্য নৃশংস ভাবে হত্যা করা হল এক শিক্ষককে। এবারও ঘটনাস্থল সেই ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। অভিযোগ শিক্ষকের গলা কাটার আগে আততায়ী 'আল্লাহু আকবর' আওয়াজ তোলে। যা নিয়ে এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা ফ্রান্সে।
শুক্রবার প্যারিসের উত্তর-পশ্চিমে কনফ্লানস সেইন্তে-হনোরাইন এলাকার একটি রাস্তায় ঘটে এই হত্যাকাণ্ড। একটি স্কুলের সামনে হামলার ঘটনা ঘটে স্থানীয় সময় বিকাল ৫টার দিকে। জানা গিয়েছে, শিক্ষক স্যামুয়েল স্কুলের পড়ুয়াদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে পড়ানোর সময় দিন কয়েক আগে ব্যঙ্গাত্মক সংবাদপত্র শার্লি এবদোয় প্রকাশিত নবী মোহাম্মদের কার্টুন চিত্র দেখিয়েছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে প্যারিসের রাস্তায় ওই শিক্ষকের মাথা কাটল এক চেচেন ‘জেহাদি’। ইতিমধ্যে ওই জেহাদিকে নিকেশ করেছে ফরাসি পুলিশ। ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশ সেখানে পৌঁছায়। কিন্তু হামলাকারী আত্মসমর্পণ করার বদলে পুলিশকেই হুমকি দেওয়া শুরু করে। বাধ্য হয়ে এনকাউন্টার করতে হয় পুলিশকে।
নিহত শিক্ষক ইতিহাস ও ভুগোল পড়াতেন। পড়ুয়াদের অভিভাবকদের বক্তব্য, ওই শিক্ষক ছিলেন মুক্ত চিন্তার মানুষ। কোনও ধর্মের প্রতিই তাঁর আক্রোশ ছিল না। তিনি শুধু নিজের মতামত জানাতেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঘটনাস্থান পরিদর্শনে যান। তিনি বলেছেন, "ওই শিক্ষককে হত্যা করা হয়েছে কারণ তিনি 'মত প্রকাশের স্বাধীনতা'র শিক্ষা দিচ্ছিলেন। ইসলামিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের যুদ্ধ চলবে।” এর আগেও মুসলিম মৌলবাদের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে ফ্রান্সের ছবি কোনওদিনও মলিন হতে দেবেন না বলে সাফ জানিয়েছিলেন ম্যাক্রোঁ। মুসলিম মৌলবাদের উত্থান নিয়েও দুশ্চিন্তা প্রকাহ করেছিলেন তিনি।