বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য আগ্নেয়গিরির স্তূপে বসে আছে, যা যে কোনও সময় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটতে পারে। অনেক ফ্রন্টে ইজরায়েল চুপ করে বসে থাকার মানসিকতায় নেই। তবে আমেরিকা ও আরব দেশগুলো ইরানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে। ইজরায়েলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের সব ফ্রন্টে একযোগে যুদ্ধ বন্ধ করতে আমেরিকা ও আরব দেশগুলো ইরানের সঙ্গে ব্যাকডোর আলোচনা শুরু করেছে বলে জানা গেছে। বলা হচ্ছে যে ইজরায়েল বর্তমানে এই ব্যাকডোর আলেচনার সরাসরি জড়িত নয়, তবে তাদের সবকিছু জানানো হচ্ছে। তবে গাজা উপত্যকায় এই চেষ্টা কতটা প্রভাব ফেলবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ব্যাকডোর আলোচনার বিষয়ে ইজরায়েল এখনও আমেরিকাকে তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানায়নি। ইজরায়েলের একজন সিনিয়র মকর্তা বলেন, আমরা বর্তমানে শক্তিশালী অবস্থানে আছি। যুদ্ধবিরতি হবে আমাদের শর্তে। এই শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে ইজরায়েলের সীমান্ত এলাকায় হিজবুল্লার সব সামরিক ঘাঁটি ধ্বংস করা। এদিকে, জানা যাচ্ছে, হিজবুল্লাও লেবাননে যুদ্ধবিরতি চায়। হিজবুল্লার ডেপুটি লিডার নাইম কাসিম সম্প্রতি বলেছিলেন যে তাঁর সংগঠন ইজরায়েলের বিরুদ্ধে হামাস এবং ফিলিস্তিনের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়বে। নাসরাল্লাহর পর কাসিম বর্তমানে হিজবুল্লার শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। তিনি লেবাননের সংসদের স্পিকার নাবিহ বেরির উদ্যোদকে সমর্থন করেছেন, যিনি কোনও শর্ত ছাড়াই যুদ্ধবিরতির পক্ষে। কাসিম বলেছেন যে আমরা যুদ্ধবিরতির জন্য বেরির নেতৃত্বকে সমর্থন করি। ইজরায়েল যুদ্ধ চালিয়ে গেলে যুদ্ধক্ষেত্রেই সবকিছু সিদ্ধান্ত হবে।
হিজবুল্লার ওপর ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইজরায়েল। দক্ষিণ লেবাননের ১৩০টি শহর ও গ্রাম থেকে হিজবুল্লা জঙ্গিদের তারা তাড়িয়েছে। অর্থাৎ এত জায়গায় ইজরায়েলের গ্রাউন্ড অপারেশন চলছে। এদিকে, উত্তর সীমান্তে মর্টার হামলায় দুই ইজরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। এরপর লেবাননে আরও সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছে ইজরায়েল। এর মানে হল খুব শীঘ্রই লেবাননে হিজবুল্লার বিরুদ্ধে ভয়াবহ যুদ্ধ শুরু হবে। ইজরায়েলি সেনাবাহিনী লেবাননের অভ্যন্তরে স্থল অভিযানের জন্য আরও সেনা মোতায়েন করেছে। এর মানে হল হিজবুল্লা সন্ত্রাসবাদীদের নির্মূল করতে লেবাননে ব্যাপক হামলা চালানো হবে। এদিকে হিজবুল্লাও উত্তর ইজরায়েলে ক্রমাগত রকেট নিক্ষেপ করে চলেছে।
এদিকে, লেবাননকে শান্তির বার্তা দিয়েছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। লেবাননের কাছে সরাসরি আবেদন জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, লেবাননকে একসময় সহনশীলতা এবং সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত ছিল, লেবাননকে মধ্যপ্রাচ্যের মুক্তো বলেও অভিহিত করেছেন নেতানিয়াহু। তিনি আরও বলেছেন যে লেবাননকে গোলাবারুদের ভাণ্ডার এবং ইরানি সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করেছে হিজবুল্লা। তিনি লেবাননের জনগণকে তাঁদের দেশের আগের অবস্থা ফেরানোর বার্তা দিয়েছেন।