scorecardresearch
 

USA on India-Iran Deal: ইরানের সঙ্গে ভারতের বন্দর-চুক্তি, ক্ষুব্ধ আমেরিকা, মোদী সরকারকে বড় হুঁশিয়ারি

দশ বছরের জন্য ইরানের চাবহার বন্দর পরিচালনা করবে ভারত। ইতিমধ্যেই তেহরানের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে নয়াদিল্লি। বন্দর পরিচালনার পাশাপাশি এর উন্নয়নও করবে ভারত। কিন্তু এই চুক্তি নিয়েই 'সতর্কবার্তা' দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

Advertisement
ইরানের সঙ্গে ভারতের চুক্তিতে অখুশি আমেরিকা? ইরানের সঙ্গে ভারতের চুক্তিতে অখুশি আমেরিকা?
হাইলাইটস
  • দশ বছরের জন্য ইরানের চাবহার বন্দর পরিচালনা করবে ভারত। ইতিমধ্যেই তেহরানের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে নয়াদিল্লি।
  • বন্দর পরিচালনার পাশাপাশি এর উন্নয়নও করবে ভারত। কিন্তু এই চুক্তি নিয়েই 'সতর্কবার্তা' দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
  • যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করেছে যে, কেউ ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করার কথা বিবেচনা করলে, আমাদের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আসার সম্ভাবনার কথাটাও মাথায় রাখা দরকার।

দশ বছরের জন্য ইরানের চাবহার বন্দর পরিচালনা করবে ভারত। ইতিমধ্যেই তেহরানের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে নয়াদিল্লি। বন্দর পরিচালনার পাশাপাশি এর উন্নয়নও করবে ভারত। কিন্তু এই চুক্তি নিয়েই 'সতর্কবার্তা' দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করেছে যে, কেউ ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করার কথা বিবেচনা করে, তবে তাদের আমাদের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আসার সম্ভাবনার কথাটাও মাথায় রাখা দরকার।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেলকে চাবহার বন্দর নিয়ে ভারত ও ইরানের মধ্যে চুক্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। উত্তরে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ইরান এবং ভারত চাবাহার বন্দর নিয়ে একটি চুক্তি করেছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। ভারত সরকারের নিজস্ব বিদেশ নীতি আছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে।

আরও পড়ুন

এর মানে কি ভারতীয় কোম্পানিগুলির ওপরও বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে? তিনি বলেন, 'কেউ যদি ইরানের সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি করার কথা বিবেচনা করে, তাহলে তাদের সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলোর বিষয়েও ওয়াকিবহাল থাকা উচিত। তাদের মাথায় রাখা প্রয়োজন যে তাদের উপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।'

ভারত ও ইরানের মধ্যে এই চুক্তি কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

চাবহারে দু'টি বন্দর রয়েছে। প্রথম- শহীদ কলন্তরী এবং দ্বিতীয়- শহীদ ভেশতী। নৌপরিবহন মন্ত্রকের ইন্ডিয়া পোর্টস গ্লোবাল শহীদ বাহিশতি পরিচালনা করে।

আসলে ভারত আগে থেকেই এই বন্দরের কাজ সামলাচ্ছিল। তবে এটি একটি স্বল্পমেয়াদী চুক্তি ছিল। সময়ে সময়ে তা রিনিউ করতে হতো। কিন্তু এখন ১০ বছরের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি করা হয়েছে।

বহু বছর ধরে ভারত ও ইরানের মধ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছিল। কিন্তু নানা কারণে তা বিলম্বিত হচ্ছিল। এর মধ্যে ভারত ও ইরানের সম্পর্কে কিছুটা উত্তেজনা দেখা দেয়। এছাড়া ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর নিষেধাজ্ঞার কারণেও এই চুক্তি বিলম্বিত হয়।

Advertisement

বলা হচ্ছে এই চুক্তির আওতায় ইন্ডিয়া পোর্টস গ্লোবাল চাবাহার বন্দরে প্রায় ১২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে।

ইরান, আফগানিস্তান এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য ভারত চাবহার বন্দরের একটি অংশ তৈরি করছে। নতুন চুক্তি পাকিস্তানের করাচি এবং গোয়াদর বন্দরকে বাইপাস করবে এবং ইরানের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্য এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য রুট খুলে দেবে।

ইরান ও আফগানিস্তানে ভারতের সরাসরি প্রবেশের জন্য চাবহার বন্দর একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। একদিকে চাবহার বন্দর ইরানকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব মোকাবিলায় সাহায্য করতে পারে। অন্যদিকে ভারত মহাসাগরে প্রবেশের জন্য পাকিস্তানের ওপর আফগানিস্তানের নির্ভরতা কমতে পারে।

২০১৬ সালে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করিডোরের বিষয়ে ভারত, ইরান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চাবাহারও এই করিডরের অন্তর্ভুক্ত হবে। এর পর ভারত শহীদ ভেশতির কাজ আরও জোরদার করে।

শহীদ বাহিশতীর প্রথম ধাপের কাজ শেষ হয় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। এরপর ভারত এখান থেকে গমের প্রথম রফতানি করে আফগানিস্তানে পাঠায়। ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো আফগানিস্তান থেকে কোনও পণ্য চাবাহার বন্দর দিয়ে ভারতে এসেছিল।

শহীদ বাহিশতী বন্দরের কাজ চার ধাপে শেষ হওয়ার কথা। কাজ শেষ হলে এর ক্ষমতা বার্ষিক ৮২ মিলিয়ন টন হবে। এখানে একটি ক্রুজ টার্মিনালও সম্পন্ন হয়েছে, যার কারণে এই বন্দরের সক্ষমতা আরও বেড়েছে।

চাপে চিন-পাকিস্তান?

ইরানে তৈরি হওয়া চাবহার বন্দরকে চিন ও পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব হিসেবেও বিবেচনা করা হচ্ছে। এই কারণে এখানে ভারতের আগ্রহও বেশি। গোয়াদর বন্দরে চিনের উপস্থিতির কারণে চাবাহার বন্দর হাতে থাকাটা ভারতের জন্য লাভজনক।

পাকিস্তানে গোয়াদর বন্দর নির্মাণ করছে চিন। গোয়াদর বন্দর এবং চাবাহার বন্দরের মধ্যে সড়কপথে ৪০০ কিলোমিটার দূরত্ব রয়েছে। যেখানে সমুদ্রপথে এই দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার।

শুধু তাই নয়, চাবাহার বন্দরকে ইন্টারন্যাশনাল নর্থ-সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডরের (INSTC) সঙ্গেও যুক্ত করা হবে। এই করিডরের আওতায় ভারত, ইরান, আফগানিস্তান, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, রাশিয়া, মধ্য এশিয়া এবং ইউরোপে জাহাজ, রেল ও সড়কের ৭,২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ নেটওয়ার্ক তৈরি করা হবে। এর ফলে ইউরোপ ও রাশিয়ায় ভারতের প্রবেশ আরও সহজ হবে।

এ ছাড়া চাবাহার বন্দরের সবচেয়ে বড় সুবিধা হবে ভারত পাকিস্তানকে বাইপাস করে ইরান ও মধ্য এশিয়ায় পৌঁছাতে পারবে।

Advertisement