সম্প্রতী মুক্তি পয়েছে পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের নতুন ওয়েব সিরিজ 'রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি'। আর এই ওয়েব সিরিজে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছেন বাংলাদেশি অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। বাংলাদেশের টেলিভিশন জগতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী বাঁধনের এটাই এপার বাংলায় প্রথম কাজ।
ক্যারিয়ারে প্রথমবার ভারতীয় কোনো নির্মাতার সঙ্গে কাজ করেছেন বাংলাদেশি অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। সৃজিতের রহস্যঘেরা ‘REKKA’ ওয়েব সিরিজ দেখে দর্শকদের সবথেকে বেশি আগ্রহ জেগেছে বাঁধনের মুসকান জুবেরী চরিত্রটি নিয়ে। মুসকান জুবেরীর চরিত্রটি ধূসর।
সত্যি কথা বলতে কী ২০২১ সালটা বাঁধনের এককথায় দারুণ কাটছে। সম্প্রতি কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৪তম আসরে রেড কার্পেটে ঢাকাই জামদানি পরে হেঁটে নজির গড়েছেন বাংলাদেশি এই অভিনেত্রী।
এবারই প্রথম কানের অফিসিয়াল সিলেকশনে মনোনয়ন পেয়েছিলো বাংলাদেশের কোনো ছবি। আর সেটি ছিলো আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত ও বাঁধন অভিনীত ‘রেহানা মরিয়ম নূর।’ছবিটি প্রশংসার ঝড় তুলেছিল ফ্রান্সের কান শহরে।
কানে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ প্রশংসিত হওয়ায় কলকাতায়ও বাঁধনকে নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এরমধ্যে এক এক করে উন্মুক্ত হচ্ছে সৃজিতের মুসকানের ঝলক। প্রাসঙ্গিকভাবেই নেটমাধ্যমে বাঁধনকে নিয়ে চলছে আলোচনা।
বর্তমানে চলচ্চিত্রে দেখা গেলেও বাঁধনের কেরিয়ার কিন্তু শুরু হয়েছিল টিভি নাটকে অভিনয়ের মধ্যে দিয়েই। পাশাপাশি চুটিয়ে মডেলিং-ও করেছেন তিনি। ২০০৬ সালে অনুষ্ঠিত সুন্দরী প্রতিযোগিতা লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টারে রানার-আপ হওয়ার মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেন বাঁধন। বাংলাদেশে বাঁধন ছোটপর্দায় খুবই পরিচিত মুখ। তাঁর বিভিন্ন নাটক ও সিরিয়াল সেদেশে খুবই জনপ্রিয়।
বাঁধনের জন্ম বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে। বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ থেকে দন্ত চিকিৎসায় বি.ডি. এস. পাশ করেন। গ্ল্যারা দুনিয়ায় প্রবেশ ২০০৬ সালে।
২০১০ সালে মাশরুর সিদ্দিকীর সঙ্গে বিয়ে হয় বাঁধনের। প্রেম করেই করেছিলেন বিয়ে। সেই বছর সেপ্টেম্বরেই কন্যা সায়রার জন্ম। তবে বিয়ের ৪ বছরের মধ্যেই ডিভোর্স হয়ে যায় স্বামীর সঙ্গে।
আপাতত সেইসব অতীত ভুলে এগিয়ে চলেছেন বাঁধন। সৃজিতের রহস্য-রোমাঞ্চ সিরিজে মুসকান জুবেরী হয়ে চমকে দিয়েছেন সকলকে। এরআগে বাংলাদেশি অভিনেত্রী জয়া আহসানকে অভিনয় করতে দেখা গেছে সৃজিতের ছবিতে। এবার সৃজিতের হাত ধরে টলিউডে জার্নি শুরু করছেন বাঁধন।
কীভাবে তিনি সৃজিতের ছবিতে সুযোগ পেলেন? সেটিও বেশ মজার ঘটনা। অনেকের মনেই প্রশ্ন ছিল বাংলাদেশের আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাফিয়াত রাশিদ মিথিলার মাধ্যমেই কি সৃজিতের সঙ্গে যোগাযোগ বাঁধনের? বাধঁন জানালেন, নাহ, সেভাবে নয়। করোনা মহামারির মধ্যেই হঠাৎ পরিচালকের হোয়াটসঅ্যাপ কল আসে তাঁর কাছে। তিনি প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেননি। পরে সৃজিত বাংলাদেশের এক প্রযোজকের মাধ্যমে ফোন-কল করে বাঁধনের নাকি নাগাল পান।
প্রসঙ্গত, ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেননি’ সিরিজটি নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশি লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের লেখা একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে। থ্রিলার ধাঁচের এই গল্পে মুসকান জুবেরির চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাঁধন। আরও অভিনয় করেছেন এপারের জনপ্রিয় অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য, অঞ্জন দত্ত, অনির্বাণ চক্রবর্তী, রাহুল বোস।
এত সব ব্যস্ততার মধ্যে ফিটনেস ঠিক রাখাতে প্রতিদিন সকালে জগিং করেন বাঁধন। 'সিঙ্গল মাদার' বাঁধনের অসবর সময় কাটে মেয়েকে নিয়েই । বিবাহ বিচ্ছেদের পরে মেয়ের কাস্টডি নিয়েও আইনি লড়াইয়ে জর্জরিত হয়েছিলেন তিনি। আরেকটা সিক্রেটও আপনাদের জানিয়ে রাখি, মরণোত্তর চক্ষুদানের অঙ্গীকার করেছেন বাঁধন।