ধীরে ধীরে স্বাভাবিকের পথে ফিরছে প্রতিবেশী বাংলাদেশ। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে রাজধানী ঢাকার বেশ কিছু স্থানে ইন্টারনেট পরিষেবা চালু হয়। তবে এখনও পুরো দেশে পরিষেবা চালু হয়নি। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনেদ আহমেদ পলক জানান, সন্ধ্যার মধ্যে আংশিকভাবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করা হবে। এদিকে তিন দিন পর আজ বুধবার খুলেছে ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি অফিস। এর ফলে আর সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকার ফার্মগেট, মিরপুর, সায়েদাবাদ, মতিঝিল, কল্যাণপুর, বনানী, তেজগাঁও, মহাখালীসহ বিভিন্ন রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট দেখা দিয়েছে। যানজটে ঢাকার রাস্তায় একরকম স্থবির অবস্থা।
কারফিউ শিথিলের সময়ে আজ বেলা ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত বিভিন্ন অফিস খোলা থাকছে। কিন্তু যানবাহন পেতে দেরি হওয়ায় এবং যানজটে পড়ে অনেকে সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারছেন না। কখন পৌঁছাতে পারবেন তা নিয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে আছেন তাঁরা। কারফিউ শিথিল করার পর বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলোর কিছু শাখা আজ বুধবার খুলেছে। এসব শাখায় বেলা ১১টা থেকে লেনদেন শুরু হয়, যা বেলা ৩টা পর্যন্ত চলবে। ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গেছে, আজ বুধবার ও আগামীকাল বৃহস্পতিবার সীমিত পর্যায়ে কিছু ব্যাঙ্কিং সেবা মিলবে।
সাধারণ ছুটি ঘোষণার কারণে টানা তিন দিন বাংলাদেশের ব্যাঙ্কগুলো বন্ধ ছিল। লেনদেনসহ সব ধরনের ব্যাঙ্কিং কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে আর্থিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ে। কারফিউ জারির পাশাপাশি ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়ার কারণে ব্যাহত হয় ডিজিটাল ও মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবা কার্যক্রমও। পরে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক সব ব্যাঙ্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) কাছে পাঠানো নির্দেশনায় সীমিত পর্যায়ে ব্যাঙ্কিং চালুর বার্তা দেয়। এমডিদের বলা হয়েছে, বুধবার ব্যাঙ্কের ৫০ শতাংশ শাখা ও বৃহস্পতিবার ৭৫ শতাংশ শাখা খোলা রাখতে হবে। নির্দেশনায় আরও বলা হয়, কারফিউ শিথিল থাকার সময়ে বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে নির্ধারিত শাখায় সীমিত আকারে ব্যাঙ্কিং সেবা প্রদান করতে হবে। ব্যাঙ্কগুলো তাদের সুবিধামতো শাখা খোলা রাখার উদ্যোগ নেবে।
এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে বাংলাদেশে টানা পাঁচদিন সব ধরনের ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল। অবশেষে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাতে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ চালু করা হয়েছে। তবে মোবাইল ইন্টারনেট, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখনো বন্ধ। কবে নাগাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো চালু করা হবে তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে মোবাইল ইন্টারনেট শিগগির চালু করার ইঙ্গিত দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। মঙ্গলবার রাতে বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে জানান, প্রথমে সরকারি হাসপাতাল, ওয়াসা, ডেসকো এবং ব্যাঙ্কগুলোতে ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়েছে। এরপর জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের অফিস, বাণিজ্যিক এলাকা, বাংলাদেশ রেলওয়ে, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইন্টারনেট দেওয়া হয়। মোবাইল ইন্টারনেট চালুর বিষয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘বুধবার (২৪ জুলাই) মোবাইল ইন্টারনেটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠক হতে পারে। বৈঠকে সার্বিক পরিস্থিতি আলোচনা করে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। আমরা ধীরে ধীরে ইন্টারনেট সেবার আওতাধীন এলাকার পরিধি বাড়াবো। শিগগির সার্বিকভাবে পুরো ইন্টারনেট সেবা চালু হবে।’