বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রয়েছেন ভারতে। তাঁকে প্রত্যর্পণের জন্য দিল্লির কাছে আবেদন করবেন বলে জানালেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শততম দিন পূর্তির উপলক্ষে রবিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। সেই ভাষণেই ইউনূস জানান, 'স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব'।
রবিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে ইউনুস বলেন,'স্বৈরতান্ত্রিক শাসনে বিপর্যস্ত এই দেশকে সবাই মিলে পুনর্গঠন করতে হচ্ছে। জুলাই-অগাস্ট বিপ্লবের পর এমন একটি দেশ হাতে পেয়েছি, যার সর্বত্র ছিল বিশৃঙ্খলা। বিপ্লবে দেড় হাজার ছাত্র-যুবর মৃত্যু হয়েছে। আমাদের সরকার প্রতিটি মৃত্যুর তথ্য জোগাড় করছে। ১৯ হাজার ৯৩১জন আহত হয়েছেন। তাঁদের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি হত্যার বিচার আমরা করব। জুলাই-অগাস্ট বিপ্লবের বিচারের কাজ ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। স্বৈরচারী শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারতের কাছ থেকে ফেরত চাইব'।
তিনি আরও বলেন,'কেবল জুলাই-অগাস্ট হত্যাকাণ্ডই নয়, আমরা গত ১৫ বছরের সব অপকর্মের বিচার করব। অসংখ্য মানুষ গুম হয়েছেন। খুন হয়েছেন এই সময়ে। আমরা একটা কমিশন গঠন করেছি। অক্টোবর পর্যন্ত ১৬০০ গুমের তথ্য পেয়েছে তারা। কমিশনের ধারণা এটা ৩ হাজার পেরিয়ে যাবে। গুম কমিশনের সদস্যদের কাছে ভুক্তভোগীদের যে বিবরণ পেয়েছি, তা অত্যন্ত মর্মান্তিক'।
৫ অগাস্ট বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসতে হয়েছিল শেখ হাসিনাকে। সেই থেকে তিনি ভারতের আশ্রয়ে। কেটে গিয়েছে সাড়ে ৩ মাসেরও বেশি সময়। ভারতে কড়া নিরাপত্তায় রয়েছেন হাসিনা। দেশের ক্ষমতাভার এখন মহম্মদ ইউনুসের হাতে। তিনিই অন্তর্বতী সরকারের প্রধান। বিভিন্ন প্রতিবেদনে প্রকাশ, হাসিনা ভারতে কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে রয়েছেন। তাঁর জন্য সব আঁটসাটো নিরাপত্তার আয়োজন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও হাসিনা এই প্রথমবার ভারতে আশ্রিত হয়ে রয়েছেন, এমনটা আদৌ নয়। ১৯৭৫ সালে যখন বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের একাধিক সদস্যকে খুন করা হয় তখনও হাসিনা এদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ভারতে বোন, নিজের সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে সেবার ছিলেন তিনি। পরে বাংলাদেশে ফিরে যান ও সে দেশের প্রধানমন্ত্রী হন।