শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর থেকে সেখানে হিন্দুদের উপর আক্রমণ হচ্ছে। বহু বাড়ি-ঘড় লুট করা হয়েছে, জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সেখানকার সংখ্যালঘুরা। পুলিশ এখনও সেই দেশে পুরোদমে কাজ শুরু করতে পারেনি। এই অবস্থায় এলাকা ও বাড়ির নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নিলেন সেখানকার হিন্দুরা। রাতে পালা করে নিজের এলাকায় টহল দিচ্ছে তারা।
পুরোনো ঢাকাতে হিন্দুদের কলোনি রয়েছে। সেখানে প্রতি রাতে নিয়ম করে এলাকায় টহল দিচ্ছেন ছেলে-মেয়েরা। তাঁদের হাতে রয়েছে বাঁশ, লাঠি, উইকেট, জলের পাইপের মতো সরঞ্জাম। তাঁদের পাড়াতে যাতে কেউ আক্রমণ করতে না পারে, সেই কারণে এই টহলদারি।
গত ৫ অগাস্ট থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর ২০০ মতো হামলা হয়েছে। ৫ জন হিন্দু প্রাণও হারিয়েছেন। মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। দোকান ও বাড়িতে তাণ্ডব চালিয়েছে।
সেখানকার বাসিন্দা মদন রবিদাস জানালেন, 'আমাদের এলাকাতে প্রায় ৫ হাজার মানুষ বসবাস করে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন বদলে গিয়েছে। আমরা এখন আর একটুও নিরাপদ নই। নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের পাহারা দিতে হচ্ছে। বাইরে থেকে কেউ এলে প্রথমে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তারপরই এলাকায় ঢুকতে দিচ্ছি। নিরাপত্তার স্বার্থে করতে হচ্ছে। আমরা চাই না, এখানে কোনও অশান্তি হোক।'
প্রতিদিন সন্ধে নামার সঙ্গে সঙ্গে টলহদারি শুরু করছেন এলাকার যুবক যুবতীরা। প্রতিটি পরিবারের কাছে পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন। তাঁদের আশ্বস্ত করছেন। আর এক বাসিন্দা চরণ রবিদাস বলেন, 'বাড়িতে আমাদের মা-বোনরা রয়েছেন। তাঁদের নিরাপত্তার জন্য আমরা রাত্রি জাগছি।'
রানি নামের এক যুবতীও টহল দিচ্ছেন। তিনি বলেন, 'এই টহলদারির সময় আমরা একাধিক চোরকে ধরেছি। কয়েকজন দুষ্কৃতীও ধরা পড়েছিল। আমাদের লক্ষ্য হল এলাকার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। পুলিশ এই সময় নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে পারছে না। সেই কারণে আমাদেরই এগিয়ে আসতে হয়েছে।'
এলাকার বাসিন্দা আর এক যুবক জানান, 'আমরা ৫ অগাস্টের পর থেকে আর রাতে ঘুমোইনি। এলাকার নিরাপত্তা বজায় রাখতে রাত্রে জাগা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।'