Bangladesh visa for Pakistan: পাকিস্তানের নাগরিকদের জন্য সহজে ভিসা। নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। বিশেষত, নিরাপত্তা যাচাইয়ের বিভিন্ন শর্ত তুলে দেওয়া হয়েছে। খুব বিরল ক্ষেত্রেই কোনও দুই দেশের মধ্যে যাতায়াতে এতটা ছাড় দেওয়া হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশে পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (ISI)-এর প্রবেশ অনেক সহজ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে কৌশলগত এবং আদর্শগত সম্পর্ক জোরদার করার ইঙ্গিত হতে পারে। এটি ভারতের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক।
মার্কিন মদতে বাংলাদেশের শাসন পরিবর্তন?
ইন্ডিয়া টুডে-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রতিরক্ষা ও কৌশলগত বিশেষজ্ঞ কর্নেল অজয় রায়না (অবসরপ্রাপ্ত) বলেন, 'এটি এখন সুস্পষ্ট যে, বাংলাদেশে শাসন পরিবর্তন ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিপ স্টেটের মাধ্যমে, যেখানে পাকিস্তানের আইএসআই মূল ভূমিকা পালন করেছে। আগে যে সন্ত্রাসবাদীরা জেলে বন্দি ছিল, তাদের মুক্তি দিয়ে শাসনযন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটি অবশ্যই আশ্চর্যের কিছু নয়।'
তিনি আরও বলেন, 'খুব শীঘ্রই তাদের পরিকল্পনা সফল হলে বাংলাদেশ আবার পূর্ব পাকিস্তানে পরিণত হবে। তবে এর মধ্যে একমাত্র স্বস্তি এটাই যে, পাকিস্তান এবং পূর্ব পাকিস্তান একসঙ্গে ডুবলে তখন আর ভারতের তাদের নিয়ে কোনও চিন্তা থাকবে না।'
বাংলাদেশে উগ্রপন্থীদের সক্রিয়তা
ইন্ডিয়া টুডে আগেই রিপোর্ট করেছিল যে, পাকিস্তান-সমর্থিত জামাতের একটি অংশ সিলেটের আম্বরখানা এলাকায় জমায়েত করছে। অভিযোগ, তারা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অনুপ্রবেশের পরিকল্পনা করছে। অসম-মেঘালয় সীমান্ত এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মতো স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে তৎপরতা বাড়ছে। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে উগ্রপন্থীরা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
এছাড়াও, বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামোতেও বড় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। হিন্দু ও আওয়ামী লীগপন্থী আমলাদের পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে এবং তাদের জায়গায় জামাত-সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এই আদর্শগত পরিবর্তন বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থায় ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতান্ত্রিক নীতির অবক্ষয় ঘটানোর শঙ্কা সৃষ্টি করছে।
ভারতের জন্য সম্ভাব্য প্রভাব
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা শর্ত সহজ করার এই পদক্ষেপ এবং পাকিস্তান-বাংলাদেশ যোগসূত্র ভারতের জন্য দ্বিমুখী হুমকি তৈরি করছে। প্রথমত, এতে ইসলামাবাদ ও ঢাকার মধ্যে গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধি পেতে পারে, যা ভারতের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত হতে পারে। দ্বিতীয়ত, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, বিশেষ করে অসম, উগ্রপন্থা ও অনুপ্রবেশের কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। এর মাধ্যমে ভারত সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করা এবং অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা চালানো হতে পারে।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক এই পরিস্থিতি নজরে রেখে ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি হাই অ্যালার্ট মোডে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্কের এই ক্রমবর্ধমান সখ্যতা ভারতের জন্য বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ। এর মোকাবিলায় কূটনীতি, গোয়েন্দা কার্যক্রম এবং সামরিক প্রস্তুতির সমন্বিত প্রয়োগ প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।
প্রতিবেদনটি ইংরাজিতে পড়তে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে।