বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর শারীরিকভাবে আক্রমণের ঘটনা কমেছে। তবে হেনস্থা কমেনি। সংখ্যালঘুদের 'একঘরে' করার ভয়ঙ্কর নীতি নিয়েছে সেই দেশের একাধিক মৌলবাদী সংগঠন। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সেদেশের প্রধানের পদ সামলাচ্ছেন নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনুস। তিনি ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর হিন্দুদের উপর আক্রমণের ঘটনা বেড়ে যায়। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় ভারতের তরফে। তারপর সরাসরি সেই আক্রমণ কমলেও এখন তাঁদের 'ভাতে মারার চেষ্টা করা হচ্ছে' এমনটাই দাবি সেই দেশের সংখ্যালঘুদের।
সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশের নামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেমন স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিন্দু শিক্ষক ও অধ্যপকদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। হিন্দুদের অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ভালোবাসার ফাঁদ পাতছে হিন্দুরা।
এই কিছুদিনের মধ্যে বাংলাদশে যারা চাকরি খুইয়েছে তাঁদের মধ্যে অন্য়তম চট্টগ্রামের অধ্যাপক রন্টু দাস। তিনি ইতিহাসের শিক্ষক। তাঁকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়। বাধ্যতামূলকভাবে পদত্যাগ করেন তিনি। তাঁর ইস্তফাপত্র এখন ভাইরাল। যা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে সব মহলে।
পুলিশের চাকরি থেকেও অনেককে বরখাস্ত করা হচ্ছে। সম্প্রতি ২৫২ জন পুলিশকর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে। এদের মধ্যে আবার ৯১ জন হিন্দু। শেখ হাসিনার আমলে এদের হাতে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ কর্মীদের নিয়োগও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে অসন্তোষ চেপে রাখতে পারেনি সেখানকার সংখ্যালঘুরা। অভিযোগ, বেছে বেছে হিন্দুদের উপর এই অবিচার করা হচ্ছে।
অসিত নামে এক যুবক জানান, 'তীরে এসে তরী ডোবার মতো অবস্থা। আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি। অথচ এই দেশ আমার সঙ্গৈ বৈষম্য করছে। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হবে। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করেনি, করবেও না। আমরা একদিন ঠিক সুবিচার পাব।'
হিন্দুরা তাদের উপর বৈষম্যের অভিযোগ আনলেও বাংলাদেশের মৌলবাদী সংঠনগুলো আবার ভিন্ন দাবি করছে। তাদের অভিযোগ, শেখ হাসিনা নিজের আসন ধরে রাখতে শরিকদলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা করে চলতেন। তিনি অনেককে সুবিধা পাইয়ে দিতেন। কিন্তু ইউনুসের জমানায় সেটা যাতে না হয় তার দিকে নজর রাখা হচ্ছে।
হিন্দুদের বিরুদ্ধে আরও চক্রান্ত
বাংলাদেশের একাধিক মৌলবাদী সংগঠন হিন্দুদের বিরুদ্ধে বৃহত্তর চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ। ভারতে যেভাবে 'লাভ জিহাদ' করা হয় বলে অভিযোগ, সেভাবে বাংলাদেশের হিন্দুদের একাংশ মুসলিম মেয়েদের ভালোবেসে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করছে বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। মৌলবাদী সংগঠনের তরফে এমন প্রচারও চালানো হচ্ছে।