ক্রমশ খারাপ হচ্ছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি করছেন শিক্ষার্থীরা। দফায় দফায় আন্দোলন হচ্ছে। ৩০টিরও বেশি জায়গাতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। সমস্যা সমাধানের জন্য শেখ হাসিনা শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর এবং কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন। তবে ছাত্র আন্দোলনের নেতারা সেই আলোচনার প্রস্তাব খারিজ করে। এখন শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছেন পড়ুয়ারা। অবিলম্বে হাসিনার মন্ত্রিসভার পদত্যাগ দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা।
বৈঠকটি হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবনে। সেখানে হাসিনার মুখপাত্র বলেন, 'সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর, সিনিয়র শিক্ষক এবং কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন।'
বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে সেই বিষয়ে কোনও বিশদ বিবরণ দেননি হাসিনার মুখপাত্র। তিনি জানান, 'ছাত্রদের প্রচারের কারণে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা থেকে কীভাবে উত্তরণ ঘটানো যায়, সেটা নিয়েই আলোচনা হয়েছে।'
এদিকে রবিবারই ঢাকার শহিদ মিনারে জমায়েত করেছে কাতারে কাতারে পড়ুয়া। এক দফা দাবির পর সেখানে ছাত্র-ছাত্রীরা শেখ হাসিনা বিরোধী স্লোনাগ দিতেও শুরু করেছেন। কেউ কেউ হাসিনার পদত্যাগের দাবিও জানিয়েছেন।
আন্দোলনকারী নেতারা গোটা বাংলাদেশের নাগরিকদের এই প্রতিবাদে সামিল হওয়ার আবেদন ডানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সরকারের তরফে এর আগে জানানো হয়েছিল, মৌলবাদীদের প্ররোচনায় এই আন্দোলন হচ্ছে। উঠে এসেছিল বিএনপি-র নামও। তারপর শুক্রবারই জামাত-ই-ইসলামিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশে সরকার।
বিক্ষোভের অন্যতম মুখ নাহিদ ইসলাম বলেন, 'পরিষ্কার ভাষায়, আমরা বলতে চাই আওয়ামি লিগ, বিএনপি বা জামাত কী তা আমরা পরোয়া করি না। আমাদের ছাত্রদের বন্ধন অটুট। আমরা সরকার ও ফ্যাসিবাদী শাসনের বিলুপ্তি ঘোষণা করছি। এজন্য আমরা ছাত্র আন্দোলনের ডাক দিই। আমরা এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে স্বৈরাচার আর ফিরে আসবে না। আমাদের একমাত্র দাবি শেখ হাসিনাসহ এই সরকারের পদত্যাগ এবং ফ্যাসিবাদের অবসান।'
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা রাজধানীর প্রধান সড়ক অবরোধ করে। যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, মীরপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, জয়পুরহাট, শাহবাগের পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হচ্ছে।
এদিকে অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষিত কর্মসূচির প্রভাব ঢাকার সড়কে দেখা গেছে। স্বাভাবিকের চেয়ে কম দেখা গেছে যানবাহন। যানবাহনের মধ্য রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা বেশি। আন্দোলনকারীদের দাবি, যত দিন যাবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি তত উদ্বেগজনক হবে। এই সমস্যার কারণে সাধারণ মানুষ নাজেহাল। তাই সরকারের অবিলম্বে পদক্ষেপ করা দরকার। যদিও হাসিনার সরকার এই নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।