
একটি মৃত্যু। আর তারই প্রতিবাদে জ্বলছে গোটা বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের পর ফের উত্তপ্ত ভারতের পড়শি রাষ্ট্র। আক্ষরিক অর্থেই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। এই মুহূর্তে গোটা বাংলাদেশজুড়ে কট্টরপন্থী মুসলিমদের তাণ্ডব চলছে। ইতিমধ্যেই বহু সরকারি অফিস, বাড়িঘর ভাঙচুর, আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার, এই দুই জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমের অফিসে আগুন দিয়েছে উন্মত্ত বিক্ষোভকারীরা। ওসমান হাদি নামে তথাকথিত এক ছাত্রনেতার মৃত্যু ঘিরেই যাবতীয় হিংসা। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে হাসিনা সরকারের পতনের জন্য নেপথ্যে অন্যতম কারিগর ছিল এই ওসমান হাদি। 'ইনকালাব মঞ্চ' তৈরি করে শুরু হয়েছিল দেশজুড়ে হিংসা ছড়ানো। এই ব্যক্তি ছিল কট্টরপন্থী ও আপাদমস্তক ভারত বিরোধী। আওয়ামী লিগকে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার পক্ষে ছিল। পাশাপাশি তার নিশানায় থাকত বিএনপি বা বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টিও। আর সেই হাদিরই ঢাকার ৮ কেন্দ্র থেকে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ নির্বাচন লড়ার কথা ছিল। গ্রেটার বাংলাদেশের ম্যাপও তৈরি করেছিল। সেই মানচিত্রে ভারতের কিছু এলাকাকে বাংলাদেশের অংশ বলে দেখানো হয়েছিল। আর সেই ম্যাপ সে ছড়িয়ে দিচ্ছিল অনুগামীদের মধ্যে।
১২ ডিসেম্বর ই-রিকশাতে চেপে যাচ্ছিল হাদি। এই সময়ই তাকে এক দুষ্কৃতী গুলি করে বলে অভিযোগ। প্রাথমিকভাবে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে পরিস্থিতি খারাপ হলে তাকে স্থানান্তরিত করা হয় এভারকেয়ার হসপিটালে। কিন্তু সেখানেও তার স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়নি। এরপর তাকে গত শনিবার সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয় উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু তারপরও শেষ রক্ষা হল না। হাদির মৃত্যুর পরেই কট্টরপন্থীরা রাস্তায় নেমে পড়ে। বৃহস্পতিবার গোটা রাত বাংলাদেশজুড়ে হিংসা চলেছে। শুক্রবারও তা চলছে। এনসিপি-র নেতা নাহিদ ইসলাম বলছেন, বাংলাদেশে এখন গৃহযুদ্ধ চলছে। বাংলাদেশে সংস্কৃতি চর্চার অন্যতম কেন্দ্র ছায়ানট ভাঙচুর করে দিয়েছে কট্টরপন্থীরা। আল্লা হু আকবর স্লোগান দিয়ে তারা জ্বালিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের একের পর এক ঐতিহ্যশালী ভবন। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে হাদিকে শহিদ ঘোষণা করেছেন। আজ বাংলাদেশজুড়ে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন তিনি। বাংলাদেশের প্রতিটি খবর সবার আগে পেতে রইল LIVE আপডেট।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে বাংলাদেশ প্রশাসনকে আলটিমেটাম দিয়ে শাহবাগের সমাবেশ শেষের ঘোষণা করল ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের।
ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে তদন্ত কতদূর? তার আপডেট জানাতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক) খোদা বখস চৌধুরীকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিল ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যরা। এই সময়ের মধ্যে জবাব দিতে না পারলে তাঁদের পদত্যাগ দাবি করেছে ইনকিলাব মঞ্চ।
ওসমান হাদির জানাজায় অংশ নিয়ে বার্তা দিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, "হাদি তুমি আমাদের বুকের মধ্যে আছো। বাংলাদেশ যতদিন আছে, তুমি সকল বাংলাদেশিদের হৃদয়ে থাকবে। আজ আমরা তোমার কাছে বাধা করছি, তুমি যা বলে গেছ, তা যেন আমরা পূরণ করতে পারি। "
শনিবার স্থানীয় সময় বেলা ৩টে ৫০ মিনিটে সম্পন্ন হল ওসমান হাদির দেহ কবর দেওয়ার প্রক্রিয়া। হাদির জানাজায় অংশ নেন লক্ষাধিক মানুষ।
ওসমান হাদির শেষকৃত্য শেষ হতেই সেখানে উপস্থিত এক দল লোক সংসদ ভবনে ঢোকার চেষ্টা করে। তবে সেখানে থাকা সেনা সদস্যরা ওই লোকদের আটকে দেয়। তখন তাঁরা গেটের বাইরেই অবস্থান শুরু করে। বেলা আড়াইটা নাগাদ এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি বাংলা।
ফেসবুকের মাধ্যমে উস্কানিমূলক কন্টেন্ট ছড়িয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা এবং সংবাদমাধ্যমের উপর হামলায় প্ররোচনামূলক কন্টেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে Meta-কে চিঠি অন্তর্বর্তী সরকারের।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির অন্তিম যাত্রায় সংসদ ভবন এলাকায় জমায়েত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ওই এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, খবর বিবিসি সূত্রে।
ময়মনসিংহে হিন্দু যুবককে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার করা হল ৭ জনকে। দীপু চন্দ্র দাস নামে ওই ব্যক্তিকে খুন করে গাছে উল্টো করে ঝুলিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ধৃতরা হল মহম্মদ লিমন সরকার (১৯), মহম্মদ তারেক হোসেন (১৯), মহম্মদ মানিক মিঞা (২০), এরশাদ আলি (৩৯), নিজামউদ্দিন (২০), আলমগীর হোসেন (৩৮), মহম্মদ মিরাজ হোসেন একন (৪৬)।
কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের হিংসা নিয়ে। গণপিটুনি, হিংসা, সংবাদমাধ্যমের অফিসে হামলার ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার সকালে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির দেহ। সেখানে শবের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ইংরেজি দৈনিক 'ডেইলি স্টার' বৃহস্পতিবার তাদের কার্যালয়ে হামলার ঘটনাকে 'সাংবাদিকতার জন্য এক কালো দিন' হিসেবে বর্ণনা করেছে। পত্রিকাটি বৃহস্পতিবার তাদের কার্যালয় লক্ষ্য করে চালানো হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ডেইলি স্টার ঘটনার প্রতিটি মুহূর্তের তথ্য প্রকাশ করে জানায়, এ ধরনের ভীতি প্রদর্শন তাদের ভয় দেখাতে বা কণ্ঠরোধ করতে পারবে না।
শুক্রবার রাষ্ট্রসঙ্ঘ সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে কট্টরপন্থী নেতা ওসমান হাদির মৃত্যুতে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার প্রধান ভোলকার টার্ক নাগরিকদের কাছে হিংসা থামানোর আর্জিও জানিয়েছেন।
ত্রিপুরার রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডি নাল্লু শুক্রবার বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া একাধিক এলাকা পরিদর্শন করেন। এই তালিকায় রয়েছে, বক্সানগর। BSF-এর উচ্চপদস্থ কর্তারাওছিলেন তাঁর সঙ্গে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন তিনি। সীমান্তে ফোর্সের চূড়ান্ত ব্যবস্থাপনাও তদারকি করেন।
শুক্রবার চিন জানিয়েছে, তারা চায় বাংলাদেশে যেন শান্তিপূর্ণ ভোট হয়। মিটে যায় সব সমস্যা। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বলেছেন, 'চিন বাংলাদেশের নিরাপদ, স্থিতিশীল এবং সুষ্ঠু নির্বাচন কামনা করে...'
ওপার বাংলার অশান্তির আঁচ যাতে কোনওমতেই এপার বাংলায় না এসে পৌঁছয়, সে কারণে কলকাতা পুলিশের তরফে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। সামনেই বড়দিন এবং বর্ষবরণের উৎসব। এই মরশুমে বাড়তি নজরদারি চালাবে লালবাজার। কী জানালেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা?
ডাঙায় ভারত বিরোধী স্লোগান ও বিক্ষোভের আবহ ছিলই। বাদ গেল না জলভাগও। এ বার সমুদ্রপথেও উস্কানির অভিযোগ উঠল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। বঙ্গোপসাগরে ভারতীয় জলসীমা লাগোয়া এলাকায় গত কয়েকদিনে ক্রমাগতই বেড়েছে বাংলাদেশি মৎস্যজীবীদের নৌকার অনুপ্রবেশ।
কে রয়েছে বাংলাদেশের এই হিংসার পিছনে? কেন ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এত হিংসা ছড়িয়ে পড়ল? অঙ্কটা বুঝে নিন..,
বাংলাদেশে যার মৃত্যু ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল, সেই ওসমান হাদি আসলে কে?
বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যু হয় বাংলাদেশের কট্টরপন্থী ছাত্রনেতা ওসমান হাদির। সে খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বাংলাদেশে অশান্তি, হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় মিডিয়া হাউস 'প্রথম আলো' এবং 'দ্য ডেইলি স্টার'-এর অফিসে। আর কী কী হল বৃহস্পতিবাল রাতের পর থেকে শুক্রবার দিনভর? জেনে নিন এক ক্লিকেই।