মামলা হয়েছে তালাকনামা ছাড়া অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করায় অভিযুক্ত বাংলাদেশের আলোচিত ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তাঁর স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে। বুধবার দুপুরে তামিমার প্রথম স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে ঢাকা মহানগরের হাকিম মোহাম্মদ জসীমের আদালতে এই মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে নথি পর্যালোচনা শেষে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। মামলার বিষয়টি রাকিব নিজেই সাংবাদমাধ্যমকে জানান। রাকিবের পক্ষে এই মামলায় আইনজীবী হয়েছেন ইশরাত হাসান।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, তামিমা তাম্মি ও রাকিবের বিয়ে হয় ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। তাদের ৮ বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। তাম্মি পেশায় একজন কেবিন ক্রু। চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাম্মি ও ক্রিকেটার নাসির হোসেনের বিয়ে হয়। এ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়িলে তা রাকিবের নজরে আসে। পরে পত্র-পত্রিকায় তিনি ঘটনার বিষয়ে সম্পূর্ণ জানতে পারেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, রাকিবের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক থাকাকালীনই নাসিরকে বিয়ে করেছেন তাম্মি, যা ধর্মীয় এবং দেশের আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ অবৈধ। তাম্মিকে প্রলুব্ধ করে নাসির নিজের কাছে নিয়ে গেছেন। তাম্মি ও নাসিরের এমন অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে রাকিব ও তার ৮ বছরের মেয়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। নাসির ও তামিমার এহেন কার্যকলাপে রাকিবের চরমভাবে মানহানি হয়েছে, যা তার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে বিয়ে করেন নাসির ও তামিমা। এরপরই তালাক না দিয়ে অন্যের স্ত্রীকে বিয়ের বিষয়টি সামনে আনেন রাকিব। তখন থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। ডিভোর্স না নিয়ে আরেকজনকে বিয়ের ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ নেবেন বলে আগেই জাননিয়েছিলেন রাকিব হাসান। তিনি বলেছিলেন, বিষয়টি নিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় জিডি করেছেন। এরপরেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলা সমালোচনা আর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদকে পাত্তা না দিয়ে গুলশানের লেকশোর হোটেলে গত শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয় নাসির-তামিমার রিসেপশন। এদিকে মামলা হতেই সাংবাদিক সম্মেলন করে নাসির জানান, "তামিমা তাম্মি এখন আমার স্ত্রী। সে এখন তামিমা হোসেন। তাকে কিছু বলা মানে আমাকে বলা। আমি জাতীয় দলের ক্রিকেটার। অনেকে আমাকে পছন্দ করেন, অনেকে পছন্দ করেন না।এসব আমি মেনে নেই। কিন্তু আমার স্ত্রীকে নিয়ে অহেতুক কিছু বললে আমি ছেড়ে দেবো না। প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।" জানা যাচ্ছে নাসিরের আইনজীবী তামিমার আগের স্বামী রাকিবের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করতে চলেছেন।
এদিকে রাকিবের সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে বলে সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি তামিমার। তামিমা বলেন, ‘আমি তালাকের জন্য আবেদন করি ২০১৬ সালে। তা অনুমোদন হয় ২০১৭-তে। সম্পূর্ণ আইনিভাবে সবকিছু মেনে ডিভোর্সটা হয়। উনার (রাকিব) পরিবার এবং তিনি এই সম্পর্কে জানতেন। উনি এখন যা করছেন তা কেন করছেন এটা হয়তো আপনাদের সবারই বোঝা হয়ে গেছে।'
এই ঘটনায় নতুন মাত্রা দিয়ে যাচ্ছেন নাসিরের প্রাক্তন প্রেমিকা শাহ হুমায়রা সুবাহ। নাসিরের সংবাদিক সম্মেলনের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হন সুবাহ। সংবাদিক সম্মেলনে তামিমা দাবি করেছিলেন তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে ২০১৭ সালে। কিন্তু সুবাহ তামিমার পাসপোর্টের কপি সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে দেন। যেখানে ২০১৮ সালের ওই পাসপোর্ট কপিতে দেখা যায় তামিমার স্বামীর নামের পাশে রাকিব লেখা রয়েছে, একই সাথে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ নম্বরও রাকিবের। নিজের পোস্টে সুবাহ লেখেন, 'কিছু প্রমাণ দিলাম। জানিনা ঘটনা আসল কি। যাচাই করুন রাকিব ভাইয়াকে ফাঁসানো হচ্ছে এবং হবে। ২০১৮ সালে তামিমার পাসপোর্টে স্বামীর নাম দেয়া রাকিব হাসান। তাহলে ১৬ সালের জাল তালাক নামা আবার কিসের?'