ইলিশ মাছ ভালবাসে না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া মুস্কিল। দুই বাংলাতেই ইলিশ মাছের জনপ্রিয়তা চরমে। সামনেই বর্ষা ঋতু শুরু হবে। পদ্মার ওপার থেকে ইলিশ এরাজ্যে আসবে সেই অপেক্ষায় এখন রয়েছে রাজ্যবাসী। তবে তার আগেই আপনি বাংলাদেশের টিনজাত ইলিশ পেতে পারেন। ধরুন কোনো এক দিন আপনার বাড়িতে হঠাৎ করেই দুপুরে অতিথি এসেছে। আপনি চান তাদেরকে সর্ষে ইলিশ খাওয়াতে। কিন্তু ফ্রিজে ইলিশ নেই, দুপুরে বাজারে ইলিশ মিলবে তেমন নিশ্চয়তাও নেই। এবার সেই চিন্তা দূর হতে চলেছে। আপনি অতিথিদেরকে টিনজাত ইলিশ রেঁধে খাওয়াতে পারবেন। বাংলাদেশে ইতিমধ্যে মিলতে শুরু করেছে এই টিনজাত ইলিশ।
এখন বাংলাদেশের মার্কেটগুলিতে কৌটোয় মিলছে প্রক্রিয়াজাত ইলিশ মাছ। কৌটো করে মাছ বিক্রি বিদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়। সম্প্রতি বাংলাদেশে ইলিশ ও টুনা মাছের কৌটো প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি)-এর গবেষকেরা সম্প্রতি স্থানীয়ভাবে তৈরি রাসায়নিকমুক্ত কৌটাজাত সর্ষে ইলিশ তৈরি করেছেন।
সাধারণ পদ্ধতিতে কেটেকুটে রান্না করার ঝক্কি নেই — এ খাবার কৌটা থেকে বের করে সরাসরিই খাওয়া যায় এই ইলিশ। গবেষকরা জানিয়েছেন, এমনভাবে মাছ প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে যাতে মাছের টুকরো না ভাঙে। প্রক্রিয়াজাতের পর কাঁটা নরম হবে ফলে খেতে সমস্যা হবে না। ইলিশের এই নরম কাঁটা দেহে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর করতে সহায়তা করবে। কৌটো খুলেই মাছ খাওয়া যাবে। দুই থেকে তিন মিনিট গরম করে নিলে মাছ আরো বেশি সুস্বাদু হবে। প্রতিটি কৌটায় লেজ মাথা বিহীন ২০০ গ্রাম মাছ থাকছে। কৌটোয় চার টুকরো ইলিশ থাকবে, দাম পড়ছে ৩২০ টাকার মতো।
কিন্তু কৌটোজাত ইলিশ মাছ বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সম্ভাবনাও রয়েছে। প্রসঙ্গত, মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে তৃতীয়। তবে ইলিশ উৎপাদনে তারা প্রথম। বিশ্বে মোট ইলিশ উৎপাদনের ৭৫ শতাংশই হয় বাংলাদেশে। গবেষণার মাধ্যমে জানা গিয়েছে, ইলিশ মাছ কৌটোয় তিন মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাচ্ছে। এই সময়সীমা আরও বাড়াতে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এই ইলিশকও কৌটোজাত করে রফতানি করার পরিকল্পনাও নিচ্ছে বাংলাদেশ।