বাংলাদেশে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ। শুধু ইলিশই নয়, সঙ্গে বেড়েছে সামুদ্রিক অন্যান্য মাছের পরিমাণও। ফলে বাংলাদেশ সরকারের রাজস্বের পরিমাণও বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ। বাংলাদেশের দ্বিতীয় মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র সূত্রে এ তথ্য মিলেছে। আর সে খবর এপার বাংলায় আসতেই বুক বাঁধছে কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি। আশা কিছু পরিমাণ মাছ, প্রধানত ইলিশই কাঁটাতার পেরিয়ে আসবে এ রাজ্যের বাজারগুলিতে।
আরও পড়ুনঃ রাস্তায় টাকা কুড়িয়ে পেয়েছেন? পিছনে থাকে অদৃশ্য বার্তা
পাথরঘাটা মাছ কেন্দ্রের তরফে সাংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছে, ২০২০-২১ আর্থিক বছরে এক হাজার ১৫২ দশমিক ৫৬ মেট্রিক টন ইলিশ ও এক হাজার ৫৮১ দশমিক ৩৬ মেট্রিক টন সামুদ্রিক নানা প্রজাতির মাছ বিক্রি হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৫ দশমিক ৯৩ মেট্রিক টন ইলিশ ও দুই হাজার ৩২৪ দশমিক ২১ মেট্রিক টন সামুদ্রিক নানা প্রজাতির মাছ বিক্রি হয়েছে।
পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের হিসাব মতে, বছরের ব্যবধানে বিক্রির উদ্দেশ্যে সমুদ্র ও নদী থেকে শুধু এ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গত অর্থবছরের চেয়ে এক হাজার ৩২৩ দশমিক ৩৭ মেট্রিক টন ইলিশ বেশি এসেছে।
বাংলাদেশ ফিশিং বোর্ডের তরফে বাংলাদেশের জাগো নিউজকে সভাপতি মোস্তাফা চৌধুরী জানান, চার-পাঁচ বছর আগে সমুদ্রে ইলিশের আকাল দেখা দিয়েছিল। সমুদ্র থেকে খালি হাতে ফিরতে হতো জেলেদের। সামান্য কিছু ইলিশ ধরা পড়লেও সাইজ ছিল ছোট। বর্তমানে বড় ইলিশে ভরে যায় অবতরণ কেন্দ্র। নিষেধাজ্ঞার বাইরে যতটুকু সময় পাওয়া যায় তাতে সমুদ্রে গিয়ে খালি হাতে ফিরতে হয় না জেলেদের। ট্রলারভর্তি ইলিশ নিয়ে ফেরেন জেলেরা। সে ইলিশের ৮০ শতাংশই বড় সাইজের।
সূত্রের তরফে জানা গিয়েছে, ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে খোকা ও প্রজনন মরশুমে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ, অভয়াশ্রম, জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ পালন, সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ, বিশেষ কোম্বিং অপারেশনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ রয়েছে সরকারের। এসব উদ্যোগের কারণেই দক্ষিণাঞ্চলে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। এতে উপকূলীয় জেলেরা বেশ ভালোই ইলিশ আহরণ করেছেন।
পাথরঘাটার মৎস্য কর্মকর্তাদের তরফে জানানো হয়েছে, এখন প্রজনন মরশুমে মা ইলিশ সঠিকভাবে ডিম ছাড়তে পারে। ডিম থেকে খোকায় রূপান্তরিত ইলিশ রক্ষায় পালন করা হয়। খোকা ইলিশ সংরক্ষণ সপ্তাহে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রক্ষা করা হয় ইলিশকে। খোকা রক্ষা পাওয়ায় ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। এছাড়াও ৬৫ দিনের জন্য সমুদ্রে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞায় সব ধরনের মাছ বড় হচ্ছে। আগামী কয়েক বছরে সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন আরও কয়েকগুণ বাড়বে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুনঃ Bengal Waiting For Hilsa: শ্রাবণে ফিরবে এ রাজ্যের ইলিশ ভাগ্য, অপেক্ষায় মৎস্যপ্রেমীরা