বাংলাদেশে অশান্তি, খুনোখুনি, গৃহযুদ্ধের আবহে এবার ভারতের ভূমিকার সমালোচনায় সরব হলেন বাংলাদেশের নোবেল শন্তি পুরস্কারজয়ী মহম্মদ ইউনুস। একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, বাংলাদেশের এই অশান্ত অবস্থার আঁচ কিন্তু ছড়াতে পারে ভারতেও।
বাংলাদেশের অশান্তি অভ্যন্তরীণ বিষয়, বলছে ভারত
বস্তুত, বাংলাদেশের অশান্তির বিষয়ে নাক গলাতে নারাজ ভারত। ভারতের বিদেশমন্ত্রকের অবস্থান হল, এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারত এই বিষয়ে কোনও রকম প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি নয়। ভারতের এই অবস্থানেরই সমালোচনা করেছেন ইউনুস।
ভারতের অবস্থানের সমালোচনায় ইউনুস
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে দেওয়া একটি সাক্ষাত্কারে মহম্মদ ইউনুস বলেন, 'যখন ভারত বলে, এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়, তখন খারাপ লাগে। যদি আপনার ভাইয়ের বাড়িতে আগুন লাগে, তখন আপনি তাকে অভ্যন্তরীণ বিষয়বলে পারবেন? কূটনীতির আওতায় অনেক কিছু বিষয় আসে, তাতে এটা বলা যায় না যে, ওটা ওদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।' ইউনুস বলেন, ১৭ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশের মানুষ সংঘর্ষের সম্মুখীন হচ্ছে, সরকারি বাহিনীর হাতে যুবক নিহত হচ্ছে এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে। বাংলাদেশের অশান্তি শুধু সীমান্তেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, প্রতিবেশী দেশগুলিকেও প্রভাবিত করবে।
হাসিনা সরকারের গুড বুকে নেই ইউনুস
প্রসঙ্গত, মহম্মদ ইউনুস হাসিনা সরকারের গুড বুকে নেই। ইউনুস ১৯৮৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা দরিদ্রদের তাদের নিজস্ব ক্ষুদ্র শিল্প শুরু করার জন্য ঋণ প্রদান করে। বাংলাদেশের আদলে সারা বিশ্বে এ ধরনের ব্যাঙ্ক খোলা হয়েছে। বাংলাদেশের লাখ লাখ দরিদ্র মানুষকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য মোহাম্মদ ইউনুস ও তাঁর ব্যাঙ্ককে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। শেখ হাসিনা ইউনুসের বিরুদ্ধে 'গরিবের রক্ত চুষে খাওয়ার' অভিযোগ করে আসছেন। তাঁর অভিযোগ, ইউনুসের শুরু করা গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলি গরিবদের কাছ থেকে অতিরিক্ত সুদ নেয়। সম্প্রতি ইউনুসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়েছে। ইউনুসের সমর্থকরা মনে করেন, এই মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বাংলাদেশে বসবাসর ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ইতিমধ্যেই অ্যাডভাইজরি জারি করেছে। রবিবার এক্স -এ একটি পোস্ট করেছে অ্যাসিসট্যান্ট হাই কমিশন অফ ইন্ডিয়া (এএইচসিআই)। তাতে লিখেছে, 'সিলেটের অ্যাসিসট্যান্ট হাই কমিশন অফ ইন্ডিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় যে ভারতীয়েরা (পড়ুয়া-সহ) থাকেন, তাঁদের এই দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।'