কোটা বিরোধী আন্দোলন ঘিরে উত্তাল বাংলাদেশ। দেশটির বিভিন্ন জায়গায় অশান্তি ও সংঘর্ষ চলছে। ইতিমধ্যেই ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নাগরিক ও পড়ুয়াদের জন্য অ্যাডভাইজরি জারি করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। নাগরিক ও পড়ুয়াদের বাইরে কম বেরনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যেখানে তাঁরা এখন রয়েছেন সেখানেই থাকার ও বাইরে চলাফেরা কম করার কথা বলা হয়েছে। অ্যাডভাইজারি জারি করা ছাড়াও বিদেশ মন্ত্রকের তরফে কয়েকটি জরুরি নম্বর চালু করেছে। সেগুলি ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে। জরুরি সাহায্যের প্রয়োজনে সেই নম্বরগুলিতে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেটে ভারতীয় হাই কমিশনের তরফে এই নম্বরগুলি চালু করা হয়েছে।
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন যে রূপ নিচ্ছে, তা রীতিমতো ভয়াবহ। ইতিমধ্যেই হিংসাত্মক আন্দোলনে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আহত শতাধিক। বেসরকারি মতে, মৃতের সংখ্যা বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা। এহেন পরিস্থিতিতে আজ অর্থাত্ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশজুড়ে 'কমপ্লিট শাটডাউন'-এর ডাক দিল আন্দোলনকারীরা। যার নির্যাস, দেশজুড়ে সর্বাত্মক অবরোধ চলবে। আন্দোলনকারীদের শাটডাউন কর্মসূচি ঘিরে সতর্কতা জারি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আজ ঢাকায় বন্ধ রাখা হচ্ছে মার্কিন দূতাবাস। ইতিমধ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও। হাসপাতাল এবং জরুরি পরিষেবা ব্যতীত সমস্ত কিছু বন্ধ থাকবে এবং শুধুমাত্র অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার অনুমতি দেওয়া হবে।
বস্তুত, ২০১৮ সালেও সংরক্ষণের বিরোধিতায় একই ভাবে উত্তপ্ত হয়েছিল বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে বাংলাদেশে সংরক্ষণ বাতিল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা, মহিলা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং প্রতিবন্ধীর জন্য মোট ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। গত ৫ জুন সরকারের ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করে বাংলাদেশ হাইকোর্ট। এরপরেই সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে শুধুমাত্র অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা বরাদ্দ রেখে, বাকি সকল কোটা বাতিল করার দাবি জানায় আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারীদের দাবি, বাংলাদেশে কোটার বড় অংশই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ। অথচ বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধা গোটা জনসংখ্যার মাত্র ০.১৫ শতাংশ। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ। ফলে মূলত মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিরাই কোটার সুবিধা নিচ্ছেন। ফলে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।