Advertisement

Bangladesh Election: ভারত থেকে আমেরিকা-রাশিয়া ও চিন, বাংলাদেশের নির্বাচনে বড় দেশগুলির এত আগ্রহ কেন?

রবিবার বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। চতুর্থবার ক্ষমতায় আসতে পারেন শেখ হাসিনা। এদিকে প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ ন্যাশানালিস্ট পার্টি(BNP) নির্বাচন বয়কট করেছে। বিএনপি-র প্রধান প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির অভিযোগে শাস্তি পেয়ে গৃহবন্দি। এদিকে এই বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকেই তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।

ফাইল ছবি
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 07 Jan 2024,
  • अपडेटेड 11:22 AM IST
  • রবিবার বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। চতুর্থবার ক্ষমতায় আসতে পারেন শেখ হাসিনা। এদিকে প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ ন্যাশানালিস্ট পার্টি(BNP) নির্বাচন বয়কট করেছে।
  • বিএনপি-র প্রধান প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির অভিযোগে শাস্তি পেয়ে গৃহবন্দি। এদিকে এই বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকেই তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।
  • শুধু ভারত ও চীন নয়। রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় শক্তিও বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে নজর রাখছে।

রবিবার বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। চতুর্থবার ক্ষমতায় আসতে পারেন শেখ হাসিনা। এদিকে প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ ন্যাশানালিস্ট পার্টি(BNP) নির্বাচন বয়কট করেছে। বিএনপি-র প্রধান প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির অভিযোগে শাস্তি পেয়ে গৃহবন্দি। এদিকে এই বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকেই তাকিয়ে গোটা বিশ্ব। 

শুধু ভারত ও চীন নয়। রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় শক্তিও বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে নজর রাখছে। কিন্তু এত বড় বড় দেশের বাংলাদেশের নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ কীসের? সেটা বুঝতে হলে এই দেশগুলির বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িত স্বার্থের জায়গাটা জানতে হবে। 

একাত্তরে জন্ম। বাংলাদেশের গত ৫২ বছরের ইতিহাস কারও অজানা নয়। নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে আজ এত বছর পর বাংলাদেশের অর্থনীতি ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক উন্নতির এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। আর ধীরে ধীরে বিভিন্ন বড় দেশগুলি ক্রমেই অর্থনৈতিক, কূটনৈতিকভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে। 

ভারতের জন্য বাংলাদেশ কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
ভারতের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের নির্বাচনের ফলাফল যা-ই হোক না কেন, এর কারণে ভারতের সঙ্গে তার সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে প্রভাব পড়তে বাধ্য। একদিকে বিরোধী দল বিএনপি ও জামায়ত-ই-ইসলামী। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ১৪টি দলের জোট।

বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকার দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের সমর্থন পেয়েছে। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার দেশে চরমপন্থী ও মৌলবাদীদের দমনে অনেকাংশে সফল হয়েছে।
সমালোচকদের মতে, বিরোধী দলগুলি, বিশেষ করে ইসলামি দলগুলো ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশে নৈরাজ্য বাড়তে পারে। ফলে ভারতেও এর প্রভাব পড়তে পারে। এই কারণেই আওয়ামী লীগ আবারও নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় ফিরলে তাতে ভারতেরই লাভ।

মোদী ও শেখ হাসিনার পার্টনারশিপ
ভারত ও বাংলাদেশ শুধু প্রতিবেশী দেশই নয়। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বও কম নয়। ২০২২ সালে যখন শেখ হাসিনা ভারত সফরে আসেন, তখন বলেছিলেন 'আমাদের স্বাধীনতায় ভারত যে বিশাল অবদান রেখেছে তা আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয়।' এর আগেও তিনি ভারতকে বাংলাদেশের বন্ধু বলে উল্লেখ করেছেন।

Advertisement

ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির নিরাপত্তা অনেকাংশে বাংলাদেশের ওপর নির্ভর করে। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে অনুপ্রবেশকারী এবং জিহাদি সংগঠনগুলির রোখার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা সরকার উদ্যোগী হয়েছে। এই উদ্যোগ জারি রাখার জন্য তাঁর পুনরায় ক্ষমতায় আসাটা গুরুত্বপূর্ণ। 

তাই এই কথা হলফ করেই বলা যায়, ভারত ও বাংলাদেশের স্বার্থ একে অপরের সঙ্গে জড়িত। মোদী সরকারের 'লুক ইস্ট' এবং 'অ্যাক্ট ইস্ট' নীতির জন্যও বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর পাশাপাশি বাংলাদেশকে প্রতিরক্ষা আমদানির জন্য ভারত ৫০ কোটি ডলার ঋণও দিয়েছে।

বাংলাদেশের দিকে নজর মার্কিন মুলুকের
বাংলাদেশের নির্বাচনে কড়া নজর রাখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সরকার এর আগে একাধিকবার শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও গণতন্ত্রকে স্তব্ধ করার গুরুতর অভিযোগ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রধান বিরোধী দল বিএনপি-কে সমর্থন করে শেখ হাসিনা সরকারের সমালোচনাও করেছে।

আবার কোনও কোনও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস বিরোধীদের জন্য জমি তৈরি করতে ব্যস্ত। বাংলাদেশের আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বলছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে শেখ হাসিনার ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্রমাগত চাপ দিয়ে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিচার বিভাগের সঙ্গে যুক্ত শীর্ষ আধিকারিক, নেতা ও ব্যক্তিদের ভিসার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ২০২১ এবং ২০২৩ সালে ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশকে 'ডেমোক্রেসি সামিট' থেকে বাদ রেখেছিলেন বলে অভিযোগ সমালোচকদের। এর জন্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিকেই দায়ী বলে জানানো হয়।

বাংলাদেশের ওপর এই চাপের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব স্বার্থ জড়িত। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশের নিজস্ব জায়গা আছে। ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলে চিনের আধিপত্য কমানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা চালাচ্ছেন, তা কারও অজানা নয়। এদিকে চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে বাংলাদেশের আগ্রহকে মোটেও ভাল চোখে দেখছে না বাইডেন সরকার। ২০১৬ সালে চিনের এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশ।

সাম্প্রতিক কয়েক বছরে চিন ও বাংলাদেশের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। বিশ্বব্যাঙ্ক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক ও ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক ফিরিয়ে দেওয়ার পরেও বাংলাদেশ 'পদ্মা সেতু'র জন্য চিনের থেকে ঋণ পেয়েছিল। আর এর ফলেই বাংলাদেশ তার যুগান্তকারী সেতু তৈরি করতে সফল হয়। 

চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের পার্টনার হওয়ার পাশাপাশি চিন বাংলাদেশের বেশ কিছু বড় প্রকল্পে টাকা ঢেলেছে। এর মধ্যে সড়ক, টানেল, রেলপথ এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রও রয়েছে। পাশাপাশি চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও বাংলাদেশকে ২০ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশকে দু'টি সাবমেরিন বিক্রি করেছে চিন। এটি তার সাবমেরিন কূটনীতির অংশ হিসাবে মনে করা হচ্ছে। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতাই কি বাংলাদেশের নির্বাচনে রাশিয়ার আগ্রহের কারণ?
গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বাংলাদেশ সফর করেন। রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরস্পরের বিরোধিতার কথা কারও অজানা নয়। এদিকে এরই মধ্যে বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও দুই দেশ ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকারেরই পাশে রাশিয়া। অন্যদিকে বিরোধীদের পাশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। 

বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পিছনেও রাশিয়ার সমর্থন রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরেই রাশিয়া বাংলাদেশে ইউরেনিয়াম সরবরাহ করছে।

গত বছরের জুনে রাশিয়ার ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান  বাংলাদেশে পৌঁছায়। বাংলাদেশের রূপপুরে ২,৪০০ মেগাওয়াটের একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। এটি বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। রাশিয়ার পারমাণবিক সংস্থা রোসাটম এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের দেড় কোটি বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। এর জন্য রাশিয়া প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার ঋণও দিয়েছে।

Advertisement

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement