বিতর্ক দুজনেরই নিত্যসঙ্গী। আর দুজনেই বাংলাদেশের জনপ্রিয় তারকা। আরও একটা মিল হল দুজনেই দাম্পত্য সুখ থেকে বঞ্চিত। দুজনেই অতীতে একাধিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন। কথা হচ্ছে তসলিমা নাসরিন ও পরীমণিকে নিয়ে। সম্প্রতি পরীমণি তাঁর ছেলের নাম বদল করেছেন। আর সেটা নিয়েই বাংলাদেশী অভিনেত্রীকে সোশ্যাল মিডিয়া পেজে দীর্ঘ উপদেশ দিলেন তসলিমা নাসরিন।
সম্প্রতি স্বামী শরিফুল রাজকে ছাড়াই ছেলের এক বছরের জন্মদিন ধুমধাম করে পালন করেন পরীমণি। ছেলের জন্মদিনের সব আয়োজন একা হাতেই করেন তিনি। অপরদিকে, রাজের সঙ্গে নাম মিলিয়ে ছেলের নাম রেখেছিলেন রাজ্য। কিন্তু রাজের সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরার পর পরীমণি তাঁর ছেলের নাম বদলে নাম দিয়েছেন পদ্মফুল ও পুণ্য। সেই প্রসঙ্গ টেনেই তসলিমা ফেসবুকে লেখেন, 'ঠিক এক বছর আগে লিখেছিলাম ... স্বামীর নামের সঙ্গে মিলিয়ে বাচ্চার নাম রাখাটা বিশেষ পছন্দ হয়নি। স্বামীট্বামীরা আজ আছে, কাল নেই। সন্তান তো চিরদিনের। পরী তাঁর নামের সঙ্গে মিলিয়ে সুন্দর একটি বাংলা নাম রাখতে পারতেন। পরীর জায়গায় আমি হলে 'রাজ্য' নয়, ডাকনাম রাখতাম 'পরমানন্দ'। ভালো নাম 'শাহীম মুহাম্মদ' নয়, রাখতাম পরমানন্দ প্রাণ।
তসলিমা আরও বলেন, আজ শুনি পরীমণি তাঁর নিজের নামের আদ্যাক্ষর দিয়ে ছেলের নাম রেখেছেন বা রাখতে চাইছেন, পদ্ম অথবা পূণ্য। দুটো নামই সুন্দর। ফুলের নামে শুধু মেয়ের নয়, ছেলের নামও হওয়া উচিত।' এখানে উল্লেখ্য, পরীমণি তাঁর পরিবারের সদস্য ও কাছের বন্ধুদের নিয়েই খুব ঘটা করে ছেলের জন্মদিন পালন করেছেন। এই জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দেখা পাওয়া যায়নি বাবা রাজের।
ছেলের অসুস্থতার সময়ও একা হাতেই ছেলেকে সামলেছেন পরী। সেখানেও অনুপস্থিত ছিলেন শরিফুল। পরীমণির দৃঢ়চেতা মনোভাবের প্রশংসা করেন তসলিমা। স্বামীকে ছাড়াও যে সন্তানের লালন-পালনে স্বনির্ভর পরীমণি সেটা দেখিয়ে দিয়েছেন নায়িকা। কিন্তু একইসঙ্গে খানিক উদ্বিগ্ন তিনি। তসলিমার কথায়, 'সন্তান জীবনের সব নয়। সন্তানকে ঘিরে জীবন আবর্তিত হওয়া উচিত নয়। যদিও পিতৃতান্ত্রিক সমাজ চায়, মেয়েদের জীবনের কোনও মূল্য না থাকুক, সন্তান পালনই তাঁদের একমাত্র বা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্ম হোক। পরীমণি যতই সন্তান নিয়ে মেতে থাকেন, পুরুষেরা ততই তাঁকে বাহবা দেয়। 'ভাল মা' উপাধি দেয়। সন্তানের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে হয় না, সন্তানকে ভাল গাইড করলেই সন্তান ভাল মানুষ হয়। পরীমণিকে আমি বাহবা দেব তিনি যদি নিজের অভিনয়ের কাজটিতে আরও মনোযোগী হন , অভিনয়ের চর্চা আরও করেন, অভিনয়ে আরও পারদর্শী হন, আরও বড় শিল্পী হয়ে ওঠেন। মনে রাখতে হবে মাতৃত্বেই মেয়েদের জীবনের সার্থকতা নয়। শিল্পীর কাজ অন্যত্র। 'ভাল মা' এর চেয়ে তাঁর বড় পরিচয় হোক 'ভাল শিল্পী'। 'ভালো মা' যে কোনও মেয়েই হতে পারে, 'ভালো শিল্পী' যে কোনও মেয়েই হতে পারে না।'