অভিনেত্রী - নৃত্যশিল্পী রাখি সাওয়ান্তের জন্যে ২৫ নভেম্বর দিনটি খুব স্পেশাল। এই বছর এদিন ৪৩ তে পা দিচ্ছেন তিনি। এখন তিনি খুবই জনপ্রিয়। রয়েছে অনেক অনুরাগী। তবে জানেন কী রাখির ছোটবেলা কেটেছে অনেক কষ্টের মধ্যে দিয়ে। ছোটবেলায় তাঁকে মুখোমুখি হতে হয়েছিল অনেক সমস্যার ।
রাখি সাওয়ান্তের আসল নাম নীরু ভেদা। রাজীব খান্দেলওয়ালের শো 'জাজ বাত'(Juzz Batt)-এ রাখি তাঁর শৈশবের কথা শেয়ার করেছিলেন।
সেই শো -তে রাখি বলেছিলেন- 'এই কথা বলতে আমার হাত কাঁপছে রাজীব। জীবনে আমি অনেক দারিদ্র্যতা দেখেছি। আমরা এতই দরিদ্র ছিলাম যে, আমি যখন মায়ের পেটে ছিলাম তখন আমার মা ইট এবং পাথরে খাবার রান্না করতেন।
রাখি আরও বলেছিলেন- 'মা বলেছিলেন যে আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের খাবার পর্যন্ত থাকত না। শুনেছি যে প্রতিবেশীরা খাবার ফেলে দিলে আমরআ সেই খাবার খেতে পারতাম। আমার মা হাসপাতালে এসেছিলেন। আমার মা হাসপাতালে আয়ার কাজ করতেন। খুব কষ্ট করে খাবার যোগার করতে হত।
"বড় হয়ে আমি মাকে বলেছিলাম যে আমি স্কুলে যেতে চাই। তিনি তখন রাজি হন। আগের কথা বলতে আমার ভাল লাগে না"।
নিজের স্বপ্ন সম্পর্কে রাখি বলেছিলেন- "ছোটবেলা থেকেই অভিনয় ও নাচ আমার খুব পছন্দ ছিল। তবে আমার পরিবারের একদমই পছন্দ ছিল না। মামা আমাকে অনেক মারতেন। আমার পরিবারে খাবার আছে কিনা সেটা তাঁরা দেখতেন না, অথচ একটা মেয়ের নাচ করা উচিত না সেটি বলতেন"।
"আমি সারাজীবন এত মার খেয়েছি যে কী বলব। আমার সারা শরীরে সেলাই রয়েছে। জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্যে আমি কোন পরিস্থিতিতে বড় হয়েছি আমিই জানি। আমার বাবা মুম্বই পুলিশে কনস্টেবল ছিলেন। আমি নিজে পরিশ্রম করে এই জায়গায় পৌঁছেছি।
রাখি আরও বলেছিলেন - "আমার কোনও গডফাদার ছিল না। তাহলে আমি কীভাবে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করলাম? আমি কী করো, অত পড়াশোনা করিনি আমি। তখন অত বুদ্ধিমতীও ছিলাম না। আমার বাবা-মা -এর ধারনা ছিল মেয়েরা বড় হলেই তাঁদের বিয়ে দিতে হয়। আমি রাজি ছিলাম না তাই বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছিলাম। আমার বাবা আমার সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করেছিলেন"।
রাখি ইন্ডাস্ট্রিতে আসার কথা প্রসঙ্গে বলেছিলেন- "ইন্ডাস্ট্রিতে এসে আমি কিছুই জানতাম না। আমি শুধু জানতাম যে আমার একটা কাজ দরকার।। অডিশন দিতে যেতাম। অনেকে বলতেন অভিনয় করতে। তবে আমি কখনই অভিনয় জানতাম না।
নায়িকা হতে চেয়েছিলাম। আমি প্রযোজকদের কাছে ছবি নিয়ে গিয়েছিলাম। তাঁরা ঘরটি ভেতর থেকে লক করে রাখত। আমিই জানি, কীভাবে আমি আমার জীবন বাঁচাতে দৌড়াতাম। নীরু থেকে রাখি সাওয়ান্ত হয়ে ওঠার যাত্রাটা এটাই"।