হুগলির উত্তরপাড়ায় জন্ম ১৯৭০-এর ১৫ ডিসেম্বর। ছোট থেকেই সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ ছিল। বাড়িতেও সঙ্গীতের পরিবেশে বেড়ে ওঠা। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই সঙ্গীতে নানা পুরস্কার পেয়েছেন বাবুল। এ ছাড়া অল ইন্ডিয়া রেডিও এবং দূরদর্শনেও গানের অনুষ্ঠান করেন তিনি। ১৯৯১ সালে শ্রীরামপুর কলেজ থেকে স্নাতক হন।
বলিউডে প্লে ব্যাক গায়ক হিসাবেই খ্যাতি বাবুলের। একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে কিছু দিন কাজ করার পর সঙ্গীতে নিজের কেরিয়ার গড়ার স্বপ্ন নিয়ে চাকরি ছেড়ে মুম্বইয়ে পাড়ি দেন ১৯৯২ সালে।
১৯৯৩ সালে নজরে পড়ে যান সঙ্গীত পরিচালক কল্যাণজীর। তিনি বিদেশে বিভিন্ন স্টেজ শো করার সুযোগ করে দেন বাবুলকে। একই বছর অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে আমেরিকা এবং কানাডা ট্যুর করেন বাবুল। আশা ভোঁসলের সঙ্গে একাধিক ট্যুরে সঙ্গী ছইলেন বাবুল। ১৯৯৪ সাল থেকে বিভিন্ন হিন্দি ছবিতে গান করেন। তবে তাঁর কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় গান কহো না প্যায়ার হ্যায়-র দিল নে দিল কো পুকারা। এর পর একের পর এক বড় বড় ছবিতে সাফল্যের সঙ্গে গান করেছেন তিনি।
২০০৩ সালে তাঁর অ্যালবাম সোচতা হুঁ সে বছরের অন্যতম বড় অ্যালবাম ছিল। গানগুলি শ্রোতাদের খুব পছন্দ হয়। হিন্দি ছাড়াও বাংলা, ওড়িয়া-সহ ১১টি ভাষায় গান করেছেন বাবুল। গত বছর নভেম্বর মাসে শায়েরা নামে একটি সিঙ্গল বার করেন তিনি, যা খুবই সমাদৃত হয়।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপায়ী এবং নরেন্দ্র মোদী-র রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী বাবুল ২০১৪ সালের মার্চ মাসে বিজেপিতে যোগদান করেন। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে পর পর ২ বার সাংসদ নির্বাচিত হন।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের তারকা প্রার্থী মুনমুন সেনকে প্রায় ২ লক্ষ ভোটে পরাজিত করেন। মোট ভোটের ৫১ শাতংশেরও বেশি ভোট পেয়েছিলেন বাবুল।
২ বার সাংসদ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন বাবুল।
২০১৯-এর পর ২০২১-এর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে ফের একবার ভোটমঞ্চে বাবুল সুপ্রিয়। এ বার তাঁর কেন্দ্র টালিগঞ্জ। গত ২ বার এখান থেকে নির্বাচিত হয়েছেন হেভিওয়েট তৃণমূল প্রার্থী এবং রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
স্টুডিওপাড়া হিসাবে খ্যাত টালিগঞ্জে তারকা প্রার্থী দিয়েছে সিপিএম-ও। এখান থেকে বাম প্রার্থী হিসাবে লড়বেন অভিনেতা দেবদূত ঘোষ।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মত, টালিগঞ্জে এ বার লড়াই ত্রিমুখী হতে চলেছে। অনেকে এটাও বলছেন, বিশ্বাসযোগ্য মুখ নেই বলেই সাংসদ বাবুলকে বিধানসভায় প্রার্থী করেছে বিজেপি। কারণ যাই হোক, স্টুডিওপাড়ার ভোটের লড়াইয়ে এ বার তারকার লড়াই নজরে থাকবে গোটা রাজ্যের।