সেলিব্রিটি। শব্দটির একপাশে যদি লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন থাকে, ঠিক তার উল্টো পিঠে রয়েছে ঘোর অন্ধকার। সব সময় ফোকাস তাঁদের উপর থাকে। ব্যক্তিগত বলতে কিছুই থাকে না। সব সময় দখলদারি। তার মধ্যে কেরিয়ার, পরিবারিক জীবন, ব্যক্তিগত জীবন সব মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। এত কিছু নিয়ে অনেকেই ডিপ্রেশনের শিকার হন। সুশান্ত সিং রাজপুতের ঘটনা আরও বেশি করে সে দিকে নির্দেশ করছে। সুশান্তের ঘটনার পর অনেকে সাহস করে তাঁদের জীবনের কালো দিকটাও তুলে ধরেছেন সকলের সামনে। তাঁরা বুঝিয়েছেন, শরীরের মতো মনও খারাপ হয়। সেলিব্রিটি মানেই শুধুই ঝকমকে জীবন নয়, ক্রমাগত আতস কাচের নীচে থাকা। দেখে নিন এমন সেলেবদের যাঁরা ডিপ্রেশনের জন্য আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলেন।
সৌম্যা শেঠ
হিন্দি টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সৌম্যা জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে যখন তিনি প্রেগনেন্ট ছিলেন, সে সময় আত্মহত্যার কথা মাথায় আসত তাঁর। অনেকবার চেষ্টাও করেন তিনি। তাঁর বাবা-মা সে সময় ভার্জিনিয়া পৌঁছে তাঁকে ডিপ্রেশনের সঙ্গে লড়তে সাহায্য করেন।
শমা সিকন্দর
হিন্দি টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী শমা সিকন্দর। ২০১৬ সালে দীপিকা পাদুকোন মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে খোলাখুলি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। প্রায় একই সময় শমা-ও ডিপ্রেশন নিয়ে অনেক কথা বলেন। তিনি সাক্ষাৎকারে জানান, সফল জীবনে অভ্যস্থ হয়ে উঠেছিলেন শমা। তাই সে জীবন বড্ড বোরিং মনে হত। একঘেয়ে জীবন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। অনেকগুলি ঘুমের ওষুধও খান তিনি। তবে সে যাত্রা পরিবারের উপস্থিত বুদ্ধির জোরে বেঁচে যান।
মনোজ বাজপায়ী
বলিউডের অন্যতম সেরা অভিনেতা। ইনিও জীবনের কঠিন সময় কাটিয়েছিলেন ডিপ্রেশনের শিকার হয়ে। তিনি একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা-তে সুযোগ পাওযার স্বপ্ন দেখতেন মনোজ। কিন্তু তিনি সুযোগ পাননি। যার জন্য তিনি মানসিক ভাবে প্রচণ্ড ভেঙে পড়েন। সে সময় তিনি আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন। তাঁৎ বন্ধুরাও ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। ৫ জন বন্ধু রাতে তাঁর সঙ্গেও ঘুমোতেন। কখনও তাঁকে একলা ছাড়তেন না। আজ অভিনয়ের জোরে সারা দেশে তিনি প্রসিদ্ধ। ২টি জাতীয় পুরস্কার এবং ৪টি ফিল্মফেয়ার জিতেছেন।
অধ্যয়ন সুমন
টেলি স্টার শেখর সুমনের ছেলে অধ্যয়ন সুমন-ও ডিপ্রেশনের কুপ্রভাব কাটিয়েছেন জীবনে। শেখর নিজে ছেলের এ ঘটনা একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন। সুশান্তের আত্মহত্যার পর ওই সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন শেখর সুমন। তিনি জানিয়েছিলেন, ডিপ্রেশনের কঠিন সময়ে অধ্যয়ন আত্মহত্যা প্রবণ হয়ে পড়েন। বাড়িতে থাকাকালীন বহুবার তিনি আত্মহত্যার কথা বলেন।
জ্যাসমিন ভাসিন
২৬ বছরের জ্যাসমিন সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তাঁকে অগণিত বার অডিশনে বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। এথ বার রিজেক্ট হওয়ার পর নিজের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন করতে শুরু করেন। নিজের উপর বিশ্বাসও কমে গিয়েছিল। সে সময় আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলেন। তবে ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে এসে আজ হিন্দি ধারাবাহিকের অন্যতম সফল অভিনেত্রী হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন নিজেকে। যে সময় এ ঘটনা ঘটে তিনি সে সময় সদ্য মুম্বই এসেছেন। স্ট্রাগল করছিলেন। তবে মনের জোর রেখে সে সময়টা পার করতে খুব কষ্ট করতে হয়েছিল তাঁকে।