বলিউড থেকে হলিউড, সব জায়গাতেই নিজের অভিনয়ের ছাপ রেখে গিয়েছেন অভিনেত্রী শাবানা আজমি। হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিতে সেই সময়কার শীর্ষ অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শাবানা। বাণিজ্যিক থেকে অন্য ধারার ছবি, সবেতেই তাঁর অভিনয় সব সময়ই সকলের নজর কাড়ত। ৫ বার সেরা অভিনেত্রীর জাতীয় পুরস্কার রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গেও তিনি অভিনয় করেছেন। তবে অভিনেতাকে তিনি অনেক আগে থেকেই চিনতেন। শাবানা ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (FTII)-থেকে পড়াশোনা করেছেন, আর সেখানেই মিঠুনের সিনিয়র ছিলেন এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। তাঁদের বন্ধুত্ব অনেক পুরনো। সম্প্রতি মিঠুন চক্রবর্তীকে নিয়ে কিছু সিক্রেট শেয়ার করেন শাবানা।
শাবানা আজমির পাশাপাশি মিঠুন চক্রবর্তী ৭০ ও ৮০ দশকের জনপ্রিয় হিরো ছিলেন। তাঁর অভিনয়ের পাশাপাশি মিঠুনের ডিস্কো ডান্স ওই সময় তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিশালভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। সম্প্রতি আরবাজ খানের চ্যাট শো দ্য ইনভিজিবল সিরিজে শাবানা এসে তাঁর বন্ধু ও সহকর্মী মিঠুনকে নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করেন। শাবানা বলেন যে FTII-এ মিঠুন তাঁর জুনিয়র ছিলেন। অভিনেত্রী বলেন, 'আমার মনে আছে মিঠুন আমার বাড়িতে আসত। সবসময় মিঠুন তাঁর গায়ের রং ও এবড়ো-খেবড়ো দাঁত নিয়ে চিন্তায় থাকতেন। আমার মা মিঠুনকে জোর করে জড়িয়ে ধরে বলত যে এইসব বিষয় নিয়ে এত ভাবনা-চিন্তা করো না। তুমি তো দারুণ ডান্স কর।' এইভাবেই শাবানা ও তাঁর পরিবার মিঠুনকে উৎসাহ দিতেন। প্রসঙ্গত, শাবানা আজমি ও তাঁর মা ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
তবে শুধু শাবানা আজমি নন, মিঠুন নিজেও একাধিক সাক্ষাৎকারে তাঁর গায়ের রং নিয়ে তিনি কতটাহীনমন্যতায় ভুগতেন তা নিয়ে কথা বলেছেন। ডিস্কো ডান্সার অভিনেতা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'আমার গায়ের রং কালো হওয়ার কারণে আমি হীনমন্যতায় ভুগতেন। তাই আমি ভেবেছিলাম যে আমি তো নিজের গায়ের রং বদলাতে পারব না, কিন্তু সিনেমায় ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় তো করতেই পারব। আমি ফিল্ম ইনস্টিটিউটে গেলাম আর সেখান থেকে ভাল ট্রেনিং নিয়ে ফিরে এলাম। গায়ের রং নিয়ে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগলেও এটা জানতাম যে আমি ভাল নাচতে পারি, মারামারির দৃশ্য ভাল করে করতে পারি। আমি এমন কিছু করতে চেয়েছিলাম যাতে দর্শক আমার গায়ের রং নয়, প্রতিভাকে চিনুক। আমি ডান্সের নিজস্ব স্টাইল তৈরি করলাম।'
প্রসঙ্গত, ১৯৭৬ সালে মিঠুন চক্রবর্তী মৃণাল সেনের মৃগয়া ছবির মাধ্যমে অভিনয়ে ডেবিউ করেন। এই ছবির মাধ্যমে মিঠুন বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি কত বড় মাপের অভিনেতা। প্রথম ছবিতে কাজ করেই তিনি জাতীয় পুরস্কার জিতে নেন। শাবানা আজমির সঙ্গে হাম পাঁচ,
সমীরা, অশান্তি, নসিহত, ঝুঠি শান ছবিতে কাজ করেছেন মিঠুন।