টলিপাড়ায় তাঁকে নিয়ে চর্চা দেদার। তাঁর পোশাক থেকে শুরু করে তাঁর সোজা সাপটা কথা বলার ধরন সবকিছুই যেন ভীষণভাবে তাঁর পরিচিতিকে তুলে ধরে। তবে এইসবের পাশাপাশি তিনি মা, তাও আবার সিঙ্গল মাদার। মেয়ে অন্বেষাকে একাই বড় করে তুলেছেন টলিউডের অন্যতম ঠোঁট কাটা নায়িকা স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। অভিনেত্রীর পাশাপাশি স্বস্তিকা একজন ভাল মাও বটে। মেয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক একেবারেই বন্ধুর মতো। তবে এবার মেয়ে অন্বেষার পাশাপাশি জীবনে এল তাঁর এক ছেলেও। আর তাঁকে নিয়েই আবেগঘন হয়ে পড়লেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা।
স্বস্তিকা তাঁর সহ-অভিনেতা দেবদত্ত রাহার সঙ্গে দুটি ছবি শেয়ার করেছেন। আর সেই ছবি দুটো শেয়ার করে স্বস্তিকা অভিযোগের সুরে জানিয়েছেন যে তাঁদের কোনও ভাল ছবি নেই। আসলে দেবদত্ত তাঁর রিল লাইফের ছেলে। সম্প্রতি স্বস্তিকার বিজয়া সিরিজটি হইচই ফেলে দিয়েছে। যেখানে অভিনেত্রীর তাঁর অসাধারণ অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত। তবে স্বস্তিকা তাঁর পোস্টেই জানিয়েছেন যে এই সিরিজের শ্যুটিং করার সময় তিনি এবং অন্যান্য কলাকুশলীদের মন একেবারেই ভাল ছিল না। অভিনেত্রী ক্যাপশনে ছবি দুটো শেয়ার করে লিখেছেন যে যেহেতু অধিকাংশ সময় তাদের গুরুগম্ভীর দৃশ্যের জন্য অভিনয় করতে হতো, তাই সবসময় দেবদত্ত এবং স্বস্তিকা দুজেনের কেউই দুজনের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা বা গল্প করার সময় পাননি। এই কারণে তিনি জানান যে তাঁদের ভাল কোনও ছবিও নেই। এছাড়া স্বস্তিকা জানিয়েছেন যে শ্যুটিংয়ের কারণে ঠিক থাকে খাওয়া-দাওয়াও করে ওঠা হয়নি তাঁর।
স্বস্তিকা এই সিরিজের শ্যুটিং সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানান যে কারোরই মন ভাল ছিল না। সবাই সারাক্ষণ মন খারাপ করেই শ্যুটিং করেছেন। এরপরই স্বস্তিকা তাঁর সহ-অভিনেতা দেবদত্তকে নিয়ে লিখেছেন। অভিনেত্রী বলেন, সেদিন কলেজের সিনগুলো করছিলাম, জানি ও অভিনেতা তাও ওর মুখটা দেখলেই মায়া হয়, চোখে জল আসে, ভাবি আহারে আরেকটু জড়িয়ে ধরে আগলে রাখি, আহারে বাসটা চলে গেলে তো আর কোনওদিন মা বলে ডাকবে না। জানিনা সন্তান চলে গেলে বাপ মায়েরা কি করে বেঁচে থাকে, আসলে ওটা মরে থাকা। হৃদয় নাই, শুধু যন্ত্রটুকু অকেজো হয়ে যাওয়ার অপেক্ষা। আমার সোনা ছেলে আমরা আর মা, ছেলে হয়ে কাজ না করলেও তুই আমার ছেলেই থাকবি। আমার নিজের, আমার আপন। আমার বাবু। আমার আলো। ভাল থাকবি সবসময়। অনেক ভালবাসা আছে, থাকবে চিরকাল।
প্রসঙ্গত, বিজয়া ওয়েব সিরিজে মা-ছেলের গল্পকে তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে মফঃস্বলের ছেলে নীলাঞ্জন কলকাতার কলেজে পড়তে এসে র্যাগিংয়ের শিকার হন এবং তারপরই তাঁর হস্টেলের করিডোর থেকে পড়ে যাওয়া। সেটা আত্মহত্যা নাকি খুন, এটার পিছনে কারা রয়েছে, সেটাই খুঁজে বের করে নীলাঞ্জনের মা স্বস্তিকা ওরফে বিজয়া বসু। স্বস্তিকা নিজে যেহেতুএক সন্তানের মা এবং তাঁর মেয়েও পড়াশোনার খাতিরে বাইরে থাকে, তাই এই সিরিজটা যেন তাঁর খুব কাছের এক গল্প হয়ে উঠেছিল। এর আগেও স্বস্তিকা তাঁর মেয়ে অন্বেষাকে নিয়ে আবেগঘন পোস্ট করেছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে স্বস্তিকাও একজন মা তাই সিরিজে সন্তানকে বাসে তুলে দেওয়ার অনুভূতি থেকে শুরু করে সন্তান হারানোর যন্ত্রনা অনুভব করতে পেরেছেন তিনি।