সালটা ১৯৯৯। সামনে এলো 'সেই যে হলুদ পাখি...'। কিছুদিনেই মধ্যেই হয়ে উঠল ভীষণ জনপ্রিয়। এরপর 'নীল নির্জনে' প্রথম সিধু-পটা জুটির কাজ সামনে থেকে দেখল মানুষ। একের পর এক হিট, বাংলা ব্যান্ড 'ক্যাকটাস' (Cactus)-র গানে মজল বিভিন্ন বয়সের শ্রোতারা। মাঝে মনোমালিন্য, চিড় ধরল দলে। কিন্তু প্রায় সতেরো বছর পর মরুভূমিতে যেন মিলল জলের সন্ধান। ফের একসঙ্গে সিধু -পটা। 'ব্যাক অন অ্যাকশন' জুটি! আবারও চেনা ছন্দে ক্যাকটাস!
এবছর ক্যাকটাস ৩০ বছর পূর্ণ করল এক সঙ্গীতময় সফরের। সেই বিশেষ জন্মদিনকে আরও স্মরণীয় করে তোলার জন্য রয়েছে একগুচ্ছ চমক। জমজমাট গানের অনুষ্ঠান যেমন থাকছে, রয়েছে সামাজিক দায়বদ্ধতার অঙ্গীকার। ২৪ অগাস্ট ক্যাকটাস-র জন্মদিনে ছিল রক্তদান শিবির। এই ব্যান্ডের তিরিশ জন অনুরাগী রক্তদান করে শুভ সূচনা করেন এই উৎসবের। ২৪- ২৬ অগাস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রিগুণাসেন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলার নানা প্রান্ত থেকে বেছে নেওয়া তিরিশটা নতুন প্রজন্মের ব্যান্ডের পারফরমেন্স।
২৭ অগাস্ট মেগা ইভেন্ট থাকছে নজরুল মঞ্চে। ক্যাকটাস ৩০- এই অনুষ্ঠানের খবর ইতিমধ্যে শহরজুড়ে সাড়া ফেলেছে। ক্যাকটাস ছাড়াও থাকবে আরও অন্যান্য শিল্পীদের পারফরম্যান্স। এছাড়াও হাজির থাকছেন মুনমুন সেন, পন্ডিত তন্ময় বোস, অমিত দত্ত, রূপঙ্কর বাগচী, রাঘব চট্টোপাধ্যায়, মনোময় ভট্টাচার্য, অনিন্দ্য বোস, জোজো মুখোপাধ্যায়, রূপম ইসলাম, অনুপম রায়, সোমলতা আচার্য, তিমির বিশ্বাস, সাকি, বুটি, বাম্পি, লক্ষিছাড়া, উজ্জয়িনী মুখোপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা। এই অনুষ্ঠানে থাকবে তিরিশ জন এইচআইভি এইডস আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে এক সচেতনতার বার্তা।
ক্যাকটাস-র জার্নি শুরু হয় তিরিশ বছর আগে। প্রথম অ্যালবাম 'ক্যাকটাস' ১৯৯৯। প্রকাশ পায় এইচ. এম.ভি থেকে। 'হলুদ পাখি'-র মতো জনপ্রিয় গান এই অ্যালবামেরই ফসল। পরের কাজ 'নীল নির্জনে'। ছবির গানেও সমান জনপ্রিয়তা পায় এই অ্যালবাম। টাইটেল সং ছাড়াও 'নোয়ার নৌকা' সবার মুখে, মুখে ফেরে। ২০০৪- এ 'রাজার রাজা', ২০০৮ -এ 'তুচ্ছ', ২০১৩- এ 'ব্লাহ ব্লাহ ব্লাহ', ২০১৯-এ 'তবুও ঠিক আছে' বিশেষ ভাবে উল্যেখযোগ্য অ্যালবাম। পরবর্তী সময় সিঙ্গেলসের যুগে ২০২১ সালে 'ছি: ছি: ছি:', বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক কার্যকলাপ মাথায় রেখে এক শ্লেষাত্বক রচনা। আসছে নতুন গান 'খোদা জানে না'।
বর্তমানে ক্যাকটাস বলতে ড্রামসে অর্নব, বেস গীটারে প্রশান্ত, গীটারে সম্রাট ও বৈদুর্য্য, কিবোর্ডে সায়ন্তন, আর গানে সিধু ও পটা। এই আয়োজন নিয়ে সিধু ও পটা বললেন, "তিরিশ বছর, তাই সব বিষয়ে আমরা তিরিশ সংখ্যাটা মাথায় রেখে পুরো উদযাপনটাকে সাজিয়েছি। সে তিরিশজন রক্তদাতা থেকে, তিরিশটা ব্যান্ডের পারফরম্যান্স আর বিশেষ অতিথি শিল্পীদের পারফরমেন্স থেকে তিরিশ জন এইডস আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে সচেতনতার বার্তা দেওয়া। আমাদের এই উৎসব গান-বাজনার পাশাপাশি কিছু সামাজিক কাজের দিকেও অঙ্গীকারবদ্ধ। সামাজিক কাজ আমরা এর আগেও জন্মদিন ছাড়াও অন্য সময়েও করেছি। এই বিশেষ উদযাপন সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হোক এই কামনা করছি। সকল অনুরাগী শিল্পী বন্ধুদের এই পথ চলায় পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আশা করছি ভবিষ্যতেও এই ভাবেই সকলকে পাশে পাবো।"