'জো জো চিজে শ্বাস লেতি হ্যায়, উনমে কোই ফরক নেহি দিখনা চাহিয়ে।' বহুল চর্চিত এই ডকুমেন্টারির ট্রেলারের শেষে রয়েছে কথাটি। বাংলায় যার মোটামুটি মানে দাঁড়ায়, সব প্রাণীরই ভালোভাবে বাঁচার অধিকার রয়েছে। মূলত পাখিদের নিয়েই এই তথ্যচিত্র। নাম 'অল দ্যাট ব্রেদস'। তৈরি করেছেন শৌনক সেন।
এবার কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথমবার পরিবেশ নিয়ে আলাদা বিভাগ রাখা হয়েছে। আর সেখানেই দেখানো হবে বিভিন্ন ভাষার ৫টি ছবি। সবকটি ছবির বিষয়বস্তুই পরিবেশ। যে পাঁচটি ছবি দেখান হবে, সেগুলি হল অল দ্যাট ব্রিদস, অ্যান্টাকর্টিকা কলিং, ইথুভারে, কলমকাঠি এবং তিম্মানা মোট্টেগালু।
জানা গেছে, ফ্রান্সের পরিচালক লুক জ্যাকুয়েটের ৮৩ মিনিটের ছবি 'আন্টার্কটিকা কলিং' ৭ ডিসেম্বর বিকেল ৪টেয় দেখানো হবে নিউ এম্পায়ারে। ৮ ডিসেম্বর দেখানো হবে দুপুর ১:৩০ মিনিটে রাধা স্টুডিয়োতে। দক্ষিণ মেরুর একটি বিলুপ্তপ্রায় মহাদেশ আন্টার্কটিকার বাসিন্দা পেঙ্গুইনদের নিয়ে তৈরি এই ছবি।
ভারতীয় পরিচালক সৌনক সেনের ৯১ মিনিটের হিন্দি ছবি 'অল দ্যাট ব্রিদস' দুপুর ১:৩০ মিনিটে দেখানো হবে রাধা স্টুডিয়োতে এবং এই ছবি ৯ ডিসেম্বর বিকেল ৩:৩০ মিনিটে দেখানো হবে বিজলি সিনেমাতে। নয়া দিল্লির দূষণ কীভাবে সেখানকার জীবকূলের ক্ষতি করে চলেছে, সেই দিক তুলে ধরা হয়েছে এই ছবিতে।
দিল্লির প্রত্যন্ত গ্রাম ওয়াজিরাবাদে একটি পরিত্যক্ত বেসমেন্টে থাকা দুই ভাইয়ের গল্প উঠে এসেছে ‘অল দ্যাট ব্রিদস’-এ। মহম্মদ সৌদ এবং নাদিম শেহজাদ, অদ্ভূত তাঁদের জীবনের নেশা, জীবন আহত পাখিদের উদ্ধার করতে এবং তাদের সেবা শুশ্রুষা করতে উৎসর্গ করে দিয়েছেন। মূলত চিলদের বাঁচানোই এই দুই ভাইয়ের একমাত্র ধ্যানজ্ঞান। সেইসূত্র ধরেই শৌনকের এই ডকু-ফিচার মোড় নেয় অন্য খাতে। শৌনকের তথ্যচিত্রটি মোট ৯০ মিনিটের। আসলে প্রত্যেকটা জীবনেরই যে সমানমূল্য রয়েছে তাই এই তথ্যচিত্রে তুলে ধরেছেন পরিচালক।
ভারতীয় পরিচালক অনিল থমাসের ১২৭ মিনিটের মালয়ালম ছবি 'ইথুভারে' ১১ ডিসেম্বর দেখানো হবে বিকেল ৪টেয় রাধা স্টুডিয়োতে। ভারতীয় এবং বাঙালি পরিচালক বিপ্লব দাসের ৮০ মিনিটের ছবি 'কলমকাঠি' ৭ ডিসেম্বর দেখানো হবে বিকেল ৩:৩০ মিনিটে। বাংলার চাষীদের নিয়ে তৈরি হয়েছে এই ছবিটি। পাশাপাশি, ভারতীয় পরিচালক রক্ষিত তীর্থহালির ১০১ মিনিটের কন্নড় ভাষার ছবি 'তিম্মানা মোট্টেগালু' ৭ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টায় দেখানো হবে মেনকা সিনেমাতে।
নতুন এই বিভাগ নিয়ে পরিবেশবিদ স্বাতী চক্রবর্তী বলেছেন, 'সবজায়গাতেই সচেতনার প্রয়োজন। চলচ্চিত্র উৎসবে নতুন বিভাগ খুবই ভালো উদ্যোগ। মানুষকে যদি বিষয়টা না দেখানো হয়, তাহলে তো তারা কিছু জানতেই পারবে না। ছবির মাধ্যমে তুলে ধরা হলে, সবাই বুঝতে পারবেন। এর আগেও পরিবেশ নিয়ে সিনেমা হয়েছে, কিন্তু সেগুলো হয়ত সেভাবে দেখান হত না। তবে এবার অনেক মানুষের কাছে ছবিগুলো পৌঁছবে। এবং পরিবেশের গুরুত্বটা সবাই বুঝতে পারবেন।'
চিত্রনাট্যকার, পরিচালক এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি অধ্যাপক সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টিতে বলেন, 'এর আগে কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এনভায়রনমেন্টের ওপর আলাদা কোনও বিভাগ ছিল বলে আমার মনে পড়ছে না। যদি করা হয়ে থাকে, তাহলে খুবই ভালো উদ্যোগ। এখন সবথেকে বেশি প্রয়োজন পরিবেশ নিয়ে দেশ-বিদেশের ছবিটা মানুষের কাছে তুলে ধরা। ফেস্টিভ্যালে এটা একটা ভালো জিনিস হতে চলেছে।'