টেলিভিশনে একের পর এক সিরিয়াল করে ছোটপর্দায় জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন অভিনেত্রী তৃণা সাহা। টুকটুক করে টলিউডেও কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন। হাতেখড়ি হয়ে গিয়েছিল ওয়েব সিরিজেও। কেরিয়ারের গ্রাফ যখন তুঙ্গে ছোঁয়ার কথা ঠিক তখনই বিপত্তিটা ঘটিয়ে ফেললেন বালিঝড় খ্যাত ঝোরা। ক্যামোলিয়া প্রোডাকশন ও প্রযোজক রুদ্রনীলের মাতঙ্গী সিরিজে যখন ৭০ শতাংশ শ্য়ুটিং হয়ে গিয়েছে, তখনই প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়লেন তৃণা। আর সেই বিবাদ প্রকাশ্যে আসতে বেশি দেরি লাগেনি। জল কিন্তু গড়িয়েছে বেশ অনেকদূরই। টলিপাড়ার ভেতরকার খবর অনুযায়ী, তৃণার এই কাণ্ডকারখানার পর এবার পরিচালক-প্রযোজকরা অভিনেত্রীকে কাজে নেওয়ার আগে ভাবনা-চিন্তা করবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হয় ক্যামেলিয়া প্রোডাকশন প্রযোজিত ওয়েব সিরিজ মাতঙ্গী। এই সিরিজে তৃণার পাশাপাশি কাজ করছেন সোহিনী সরকার, দেবশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় ও রণিতা দাস। কিন্তু তৃণার সঙ্গে ইগো ফাইট লাগে সোহিনীর। তৃণার খুব স্পষ্ট অভিযোগ ছিল যে সেটে সোহিনী যে বাড়তি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন তা যেন তৃণাকেও দেওয়া হোক। কিন্তু প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে তৃণার সেই দাবি না মানার কারণে এতবড় সমস্যার সৃষ্টি। তারওপর এতে ঘি যোগ করেন সোহিনী। অভিনেত্রী আর্টিস্ট ফোরামের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে শ্যুটিং ফ্লোরে শান্তি বজায় রাখার কথা জানিয়ে দীর্ঘ মেসেজ করেন। এতে তৃণা আরও রেগে যান এবং প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে চিৎকার-চেঁচামেচি করে ফ্লোর ছেড়ে বেরিয়ে যান। যদিও এই ঘটনার পর মাতঙ্গী সিরিজের কাজ হারিয়েছেন অভিনেত্রী। তবে ঝুলিতে রয়েছে অরিন্দম শীলের ইস্কাবনের বিবি, সৌম্যজিৎ আদকের একটি ছবিতেও তৃণা কাজ করবেন। এছাড়াও রিঙ্গোর নতুন ওয়েব সিরিজে শন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা যাবে তৃণাকে।
তবে শোনা যাচ্ছে, সোহিনীর সঙ্গে এই মনোমালিন্যের কারণে তৃণাকে নিয়ে নতুন কাজের আগে নাকি একাধিকবার চিন্তা করছেন প্রযোজক-পরিচালকেরা। যদিও তৃণা ক্যামেলিয়ার সঙ্গে তাঁর ঝামেলা মিটিয়ে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কোনও ফল হয়নি। তৃণার বদলে মাতঙ্গী-তে অভিনয় করবেন রোশনি ভট্টাচার্য। প্রযোজক রুদ্রনীলের মতে, তৃণা ক্ষমা চেয়েছেন তার জন্য তিনি আনন্দিত। কিন্তু তৃণার কারণে যে লোকসান হয়েছে তা পূরণ করা সম্ভব নয়।
ইন্ডাস্ট্রি সূত্রে খবর শুধু ‘মাতঙ্গী’ নয়, এর আগেও নাকি এ রকম ঘটনা ঘটেছে। যেমন ‘গভীর জলের ফিশ’ ওয়েব সিরিজের শ্যুটিংয়ের সময় নাকি তৃণার ব্যবহারে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন সেটের অনেকে। সেই ঝামেলা নাকি বড় আকারও ধারণ করেছিল। তাই গভীর জলের ফিশ-এর দ্বিতীয় সিজনে তৃণাকে নাও দেখা যেতে পারে। এই সিরিজের পরিচালক সাহানা দে অবশ্য এ বিষয়ে কিছু জানাননি। তাঁর মতে সিরিজের জন্য যেটা প্রয়োজন সেটাই করা হবে।
টলিউডের অনেকেই এ বিষয়ে একমত যে সম্প্রতি তৃণার আচরণে অনেক বদল এসেছে। সঠিকভাবে কথা বলেন না আর শ্যুটিং সেটে অভিনেত্রীর হাজার রকমের বায়ানাক্কার ঝক্কি পোষাতে হয় সেটের কর্মীদের। তবে সম্প্রতি সোহিনীর সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য প্রকাশ্যে আসার পর তৃণার ভাবমূর্তি অনেকটাই খারাপ হয়েছে বলে মনে করছেন ইন্ডাস্ট্রির অনেকে।