Advertisement

Byomkesh o Durgo Rohosyo Review: ফুল এন্টারটেইনমেন্ট বিরসার 'দুর্গরহস্য', ব্যোমকেশ হিসাবে মন জয় করতে পারলেন দেব?

Byomkesh o Durgo Rohosyo Review: শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৃষ্ট আইকনিক চরিত্র ব্যোমকেশের জুতোতে পা গলিয়ে কম সমালোচনার মুখে পড়তে হয়নি দেবকে। পর্দায় ব্যোমকেশ হিসাবে উত্তম কুমার, আবীর চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্যের মতো অভিনেতাদের দেখার পর, দেবের নিজেকে ব্যোমকেশ হিসাবে ঘোষণা করার পর থেকেই সমালোচনা ক্রমশঃই বাড়তে থাকে।

ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য রিভিউ
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 12 Aug 2023,
  • अपडेटेड 10:54 AM IST
  • পরিচালক বিরসা দাশগুপ্তের ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য-এর ট্রেলার সামনে আসতে দেবকে নিয়ে হওয়া যাবতীয় নিন্দা কিছুটা থিতু হয়েছিল বইকি। তবে দর্শকেরা অপেক্ষা করছিলেন ছবি মুক্তির।

শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৃষ্ট আইকনিক চরিত্র ব্যোমকেশের জুতোতে পা গলিয়ে কম সমালোচনার মুখে পড়তে হয়নি দেবকে। পর্দায় ব্যোমকেশ হিসাবে উত্তম কুমার, আবীর চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্যের মতো অভিনেতাদের দেখার পর, দেবের নিজেকে ব্যোমকেশ হিসাবে ঘোষণা করার পর থেকেই সমালোচনা ক্রমশঃই বাড়তে থাকে। আসলে সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদার মতোই ব্যোমকেশের সঙ্গে বাঙালির আবেগ জড়িয়ে ওতপ্রোতভাবে। তাই একটু এদিক-ওদিক হলেই মহা বিপদ। পরিচালক বিরসা দাশগুপ্তের ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য-এর ট্রেলার সামনে আসতে দেবকে নিয়ে হওয়া যাবতীয় নিন্দা কিছুটা থিতু হয়েছিল বইকি। তবে দর্শকেরা অপেক্ষা করছিলেন ছবি মুক্তির। ১১ অগাস্ট সেই ছবিও মুক্তি পেল। কেমন হল দেবের ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য? 

গোটা ছবিতেই দেব ওরফে ব্যোমকেশকে শার্ট-প্যান্টেই দেখা গিয়েছে। শেষের কিছু দৃশ্যে ব্যোমকেশ ধুতি পাঞ্জাবি পরেছেন। দেব আগেই জানিয়েছিলেন যে ছবিতে সত্যবতী যেহেতু অন্তঃসত্ত্বা, তাই ব্যোমকেশ এখানে সিগারেট খাবেন না। সেই বিষয়টাও দেখা গিয়েছে সিনেমাতে। ব্যোমকেশের বুদ্ধিদীপ্ত নজর, তীক্ষ্ণ চোখ, একেবারে পেশাদার গোয়েন্দা রূপেই দেখা মিলেছে দেবরূপী ব্যোমকেশের। তবে যাঁরা ব্যোমকেশ ও শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের একনিষ্ঠ পাঠক, তাঁরা কিন্তু গল্পের সঙ্গে এই ছবি মেলানোর বৃথা প্রয়াস করবেন না। কারণ চিত্রনাট্যে নানা রকম বদল করা হয়েছে। বিশেষ করে শেষের ক্লাইম্যাক্স অনেক বেশি অ্যাকশনধর্মী।

দর্শকদের মনে রাখতে হবে যে উপন্যাস ও সিনেমা দুটি ভিন্ন মাধ্যম। তাই প্রয়োজন মতো গল্পের গতি বাড়ানোর জন্য অনেক কিছুই যোগ করতে হয়। এখানে ব্যোমকেশ শুধুই সত্যান্বেষী নন,  সে রহস্যের সমাধান করে গল্পের শেষে সকলকে জড়ো করে শুধুই গল্প বলে না। বরং অপরাধী পালালে, তার পিছু নিয়ে রীতিমতো ধাওয়া করে তাকে হাতেনাতে ধরে। মগজাস্ত্রের সঙ্গে সে ক্যারাটের কেরামতিও ভালই জানে। প্রয়োজন পড়লে দুষ্কৃতীদের মেরে কুপোকাত করে দিতে পারে। সে একসঙ্গে অজিতের প্রিয় বন্ধু, সত্যবতীর যত্নবান স্বামী হওয়ার পাশাপাশি প্রেমিকও বটে। বৌয়ের সঙ্গে রোম্যান্সটাও করে নেয় রহস্য ঘাঁটতে ঘাঁটতেই। এমন একাধিক গুণে ভরা চরিত্রের সঙ্গে দেব কতটা ন্যায় করতে পারলেন? 

Advertisement

দেবের বাংলা উচ্চারণ নিয়ে বরাবরই নিন্দার মুখে পড়তে হয়েছে অভিনেতাকে। কিন্তু এই ছবিতে তাঁর উচ্চারণ ও সংলাপ বলার ধরন দেখার পর সেভাবে অভিযোগের কোনও জায়গা থাকবে না। বরং দেব জানেন, তাঁর জোরের জায়গাগুলি। তাই বেশি করে অ্যাকশন বা চেজ সিকোয়েন্স রাখা হয়েছে চিত্রনাট্যে। বিরসার ব্যোমকেশ কিন্তু বেশ কেতাদুরস্থ। সত্যবতী এবং অজিত তার হঠাৎ কোট-হ্যাট পরা নিয়ে রসিকতা করতে পারে। কিন্তু, ব্যোমকেশকে দেখে কে বলবে, সে সদ্য এমন পোশাক পরা শুরু করেছে। আসলে ব্যোমকেশের জন্য দেব যে যথেষ্ট পরিশ্রম করেছেন, তা এই ছবি দেখার পর দর্শকেরা মানতে বাধ্য হবেন। 

অজিত চরিত্রে অম্বরীশ ভট্টাচার্যের চেহারা নিয়েও কম কটাক্ষ করা হয়নি। তবে একজন দক্ষ অভিনেতার পরিচয় তাঁর অভিনয়, চেহারা নয়। এই গল্পে ব্যোমকেশ যেমন সকলের চেয়ে আলাদা, অজিতও তাই। অন্য অজিতের সঙ্গে এই অজিতের মিল কিন্তু খুঁজে পাওয়া যাবে না। এখানে অজিত বুদ্ধিদীপ্ত, ব্যোমকেশের সহায়কের পাশাপাশি কিছুটা রসিকও বটে। কোনও কোনও দৃশ্যে জটায়ুর কথা মনে পড়তে পারে। অম্বরীশ তাঁর নিজের ক্যারিশমায় ব্যোমকেশের যোগ্য সঙ্গী হয়ে উঠতে পেরেছেন এই সিনেমায়। সত্যবতী হিসাবে রুক্মিণী মৈত্রকে যে অসাধারণ লাগছিল তার আভাস ট্রেলারেই পাওয়া গিয়েছিল।  অন্যদের চেয়ে এই সত্যবতীর পর্দায় উপস্থিতি এবং রহস্য উন্মোচনে অবদানও অনেক বেশি। শরদিন্দুর কলমে সত্যবতী ছিল বুদ্ধিমতী, শান্ত অথচ দৃঢ়। এই সত্যবতী খুব একটা শান্ত নয়। বেশ হাত-পা নেড়ে উচ্চস্বরে কথা বলে। আর দেব-রুক্মিণী জুটি যে দর্শকদের অত্যন্ত প্রিয় তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্যান্য চরিত্রে রজতাভ দত্ত, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, সত্যম ভট্টাচার্য এবং অন্যান্য প্রত্যেকেই এক সুরে-তালে কাজ করেছেন। 

দেবের ব্যোমকেশের পরিচালক কে হতে চলেছেন এই নিয়ে প্রথম থেকেই দল্পনা ছিল বিস্তর। শেষে বিরসা দাশগুপ্তের হাতেই এই দায়িত্ব সঁপে দিয়েছিলেন দেব। আর সেটা যে কোনও ভুল সিদ্ধান্ত নয় তার জলজ্যান্ত প্রমাণ ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য। এই ছবিকে বিনোদনমূলক পারিবারিক ছবি করে তোলার পিছনে পরিচালকের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বিরসার শেষ বাংলা ছবি মুখোশ। এরপর পরিচালক মুম্বইতেই কাজ করছিলেন। বাংলায় ফিরলেন এই ব্যোমকেশের হাত ধরেই। পরিচালক বিরসার হাত ধরেই দর্শকেরা এক নতুন ব্যোমকেশ উপহার পেলেন। এর আগে কোনও ব্যোমকেশের ছবিই এই পরিসরে তৈরি হয়নি। গোয়েন্দা গল্পের মধ্যেই একটি দুর্গ যে গল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র, তা নিশ্চিত করেছেন পরিচালক। গল্পের গতি কোথাওই পড়তে দেননি এবং তাঁর অ্যাকশন দৃশ্যের পরিকল্পনাও প্রশংসনীয়। যদিও পরিচালক এইসব বিষয় নিয়ে কোনওদিনই আপোস করেননি। আর দেবকে ব্যোমকেশ হিসাবে দর্শকেরা গ্রহণ করে নেওয়ার পর আর কোনও নতুন ব্যোমকেশের দরকার পড়বে না বলেই মনে হয়।

 

ছবির নাম: ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য

পরিচালক: বিরসা দাশগুপ্ত

অভিনয়: দেব, রুক্মিণী মৈত্র, অম্বরীশ ভট্টাচার্য, রজতাভ দত্ত, সত্যম রায়চৌধুরী

রেটিং: ৩.৫/৫ 


 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement