Advertisement

Rupanjana Mitra: টলিউডে 'Me Too'? যৌন হেনস্থা নিয়ে bangla.aajtak.in-এ মুখ খুললেন রূপাঞ্জনা

Rupanjana Mitra: আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে নিজেদের মতো করে সরব হয়েছেন টলিউডের তারকারা। কেউ প্রতিবাদ মিছিলে হাঁটছেন আবার কেউ বা সোশ্যাল মিডিয়ায় সোচ্চার হয়েছেন। বাদ নেই অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্রও।

রূপাঞ্জনা মিত্র
মৌমিতা ভট্টাচার্য
  • কলকাতা,
  • 27 Aug 2024,
  • अपडेटेड 3:34 PM IST
  • টলিউডে রূপাঞ্জনা কাজ করছেন বহু বছর ধরেই। তিনিও খারাপ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন।

আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে নিজেদের মতো করে সরব হয়েছেন টলিউডের তারকারা। কেউ প্রতিবাদ মিছিলে হাঁটছেন আবার কেউ বা সোশ্যাল মিডিয়ায় সোচ্চার হয়েছেন। বাদ নেই অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্রও। তিনিও আরজি কর-কাণ্ডের পর রীতিমতো ক্ষুব্ধ। টলিউডে রূপাঞ্জনা কাজ করছেন বহু বছর ধরেই। তিনিও খারাপ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন। আর এইসব কিছু নিয়েই bangla.aajtak.in-এর কাছে খোলামেলাভাবেই সবটা জানালেন রূপাঞ্জনা মিত্র।  

বেশ কয়েক বছর আগে রূপাঞ্জনা মিত্র যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন পরিচালক-প্রযোজক অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে। সেই সময় রূপাঞ্জনা জানিয়েছিলেন স্টার জলসা-র ধারাবাহিক 'ভূমিকন্যা'-য় কাজ করার সময় তিনি প্রযোজকের থেকে এমন কিছু ইঙ্গিত ও আচরণ পেয়েছিলেন যা শরীরী এবং তা যে কোনও নারীর পক্ষেই অসম্মানজনক। এ প্রসঙ্গে রূপাঞ্জনা বলেন, 'আমার খারাপ অভিজ্ঞতার কথা সকলেই জানে, আমি এই নিয়ে বহুবার কথা বলেছি, সেটা নিয়ে এখনও কথা বলি। আর ছোটবেলায় প্রত্যেকটা মেয়ের জীবনে খারাপভাবে স্পর্শ করার ঘটনা আছে। কেউ বলতে চায় আর কেউ বলতে চায় না। অনেক বাচ্চা ছেলেদের জীবনে এরকম ঘটনা আছে। সবের বিরুদ্ধে আমাদের এই প্রতিবাদের লড়াই। আমরা আজকে যদি সোচ্চার না হই তাহলে তো আমাদেরও ওই মেয়েটির মতো মুখটা বন্ধ করে দেওয়া হবে। এটা কি হতে দেওয়া যেতে পারে? টলিউডেও এই ধরনের একাধিক যৌন হেনস্থার কথা শোনা যায়। যেটা নিয়ে অভিনেত্রী বলেন, 'আমি শুধু এটাই বলতে চাই যে মেয়ে, তোমার মধ্যেই সাহস আছে, সেই সাহসকে তুমি জাগাও। নিজের হাতে সাহসটাকে রাখো, অন্যের হাতে দিয়ে দিও না। তোমার জীবনটা তোমারই জীবন।  যে মেয়েটি চলে গিয়েছে, অভয়া, সে তো একটা শিক্ষা দিয়ে গেছে। আজকে সে এই সমাজে দাঁড়িয়ে, স্বাধীন ভারতবর্ষে, গণতান্ত্রিক সমাজে দাঁড়িয়ে, সে নিজের জায়গাটাবলে দিয়ে গেছে। এতদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় যে নোংরামো চলছে, সেগুলো বোধহয় সাফাই করার সময় চলে এসেছে এখন।' 

Advertisement
ছবি সৌজন্যে: ইনস্টাগ্রাম

রূপাঞ্জনা আরও বলেন, 'দেখো এখন একটা বিভাজন হয়ে গেছে, ভাল এবং খারাপ, মানুষ এবং অমানুষের লড়াই চলছে। সুতরাং যারা অমানুষ হয়ে থাকতে চায় তারা থাকবে, আরও অমানুষ হবে বা পাপস্খলন করে আলাদা কিছু হবে। যারা মনে কর মানুষ তারা মানুষ ও অমানুষের মধ্যে তারা এটা বুঝবে যারা ঠিক পথে আছে, যারা সোচ্চার হচ্ছে, কথা বলছে, সরব হচ্ছে, প্রতিবাদ জানাচ্ছে তাদের মধ্যে মানুষ এখনও প্রতিবাদ জানানোর জ্ঞানটা তাদের মধ্যে রয়েছে। সেইসব মানুষদের মধ্যে বিবেক এখনও মরে যায়নি। প্রতিবাদ প্রত্যেকটা স্তরে হওয়া উচিত।' রূপাঞ্জনার কথায়, 'NO Means No। এটা যেন মানুষ বেশি করে বুঝতে পারে। আমি এত বছর ধরে নিজে লড়েছি, একা লড়েছি, বাচ্চাকে বড় করেছি। নিজেকে এইভাবে তৈরি করতে হবে, যে কেউ যদি তোমাকে খারাপভাবেও স্পর্শ করে সেই হাতটা ওখানেই ভেঙে দেওয়া দরকার। যারা চুপ করে আছে তাদের মেরুদন্ড এবার সোজা হওয়া দরকার। অনেক কারণ থাকে, পরিবারের চাপ থাকে।' অভিনেত্রীর মতে, 'যৌন হেনস্থার পর চুপ করে থাকাটা এটা তো একটা সামাজিক ট্যাবু, এটা আজ থেকে নয়, বহু যুগ ধরে এটা চলছে।'

 
একা হাতেই ছেলে রিয়ানকে বড় করেছেন রূপাঞ্জনা। আরজি কর কাণ্ডের এই ঘটনা রিয়ান কী বুঝতে পারছে? রূপাঞ্জনা বলেন, 'আমার ছেলের বয়স ১১ বছর। এখনও রিয়ান এতটা বড় হয়নি যে এগুলো ও বুঝবে, তার আগেই পড়াশোনার চাপ চলে আসে। ওরা তো পড়ছে, ওরা তো শিখছে। মরাল সায়েন্সের শিক্ষাটা ওর ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত ছিল। মূল্যবোধ যেটা সেটা ওর পরিবারের মধ্যে, যেটা জিনের মধ্যে থাকে, সেটা ছিল। যারা ভদ্র তারা ভদ্রতা দিয়েই বোঝাবে। আমি খুব লাকি যে আমার বাবা-মা এবং আমার বৃহত্তর পরিবার, যার মধ্যে আমার বন্ধু-বান্ধবরাও রয়েছে, রিয়ান খুব ভাল গাইডেন্সে বড় হচ্ছে। ওকে সবসময় মূল্যবোধই শেখানো হয়। তাইজন্য ওর স্কুলেও শৃঙ্খলাবোধ, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি শ্রদ্ধা, যেটা ছোটবেলা থেকে শিখে এসেছে, সেটাতে ও খুব ভাল সেটা আলাদা করে উল্লেখ করা থাকে। এই ঘটনাটা ঘটার পরে আমরা এত এটা নিয়ে আলোচনা করছি, খবরে দেখাচ্ছে, রাস্তায় যাচ্ছি মিছিলে, ওর কাছে কিন্তু কিছুই অজানা নয়, ও পুরোটা জানে। আমি যখন ওকে বোঝাতে গেছিলাম যে জানো বাবু কী হয়েছে, আমায় তখন বলল আমি পুরোটা জানি মা।  ওকে আমি জিজ্ঞেস করলাম তোমার কী মনে হয়? যে লড়াইটা চলছে সেটা ঠিকের জন্য নাকি ভুলের জন্য, রিয়ান বলল এটা ঠিকের জন্য। যাদবপুরে যে ছেলেটিকে ব়্যাগিং করে শেষ করে দেওয়া হল, ও তো সেটাও জানে। সুতরাং রিয়ান বোঝে কোনটা ভাল কোনটা খারাপ। ভাল-খারাপের পার্থক্যটা বোঝে, সেই মূল্যবোধেই বড় হচ্ছে।'  

ছবি সৌজন্যে: ইনস্টাগ্রাম

আরজি কর কাণ্ডের পর রূপাঞ্জনা নিজেও খুব স্তম্ভিত। তাঁর শহরে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে তিনি ভাবতেও পারেননি। এই প্রসঙ্গে রূপাঞ্জনা বলেন, 'আমি একজন মানুষ হিসাবে দেখছি। একজন নাগরিক হিসাবে দেখছি। আমাদের পশ্চিমবাংলায়, আমি এতবছর ধরে রয়েছি, আমার জন্ম এই কলকাতায়। সুতরাং কলকাতার মানুষ হিসাবে দেখছি। আরজি করের এই ঘটনা, সেটা অত্যন্ত মর্মান্তিক একটা দিক নিতে চলেছে, সেটা প্রত্যাশা করা যায় না এখন। কারণ আমরা তো সব চোখের সামনে দেখছি, যা হচ্ছে, কোনও কিছুই আমাদের কাছে অজানা নয়। প্রত্যেকদিন এটার মধ্যে বাঁচছি, প্রতিদিন এটার মধ্যেই কাজ করতে যাচ্ছি। আমরা প্রত্যেকদিন এই লড়াইটা যাতে চলতে থাকে সেটার চেষ্টা করে যাচ্ছি। সেটা রাত দখলে মেয়েরা এটা করে চেষ্টা করি না কেন, আমাদের সমাজের বিভিন্ন বর্গ-শ্রেণী থেকে এই প্রতিবাদে সামিল হতে, যেভাবে আসছে তারা এগিয়ে, সেখানে একটাই স্বর উই ওয়ান্ট জাস্টিস আর প্রতিবাদের স্বর। অভিনেত্রী জানান এই শহরে নিরাপদ বোধ করছেন না। তিনি বলেন, 'এখানে এই রাজ্যে নিরাপদ অনুভব করার মতো কথা নয়, কারণ পরপর তিনটে ঘটনা ঘটে গেল। অভয়ার পাশাপাশি আরও একটি ঘটনার কথা বলব যেখানে এক মহিলার মুখ থেঁতলে তাঁকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে গিয়েছিল। আর তাছাড়া চারিদিকে যা ঘটছে, সেখানে মানুষ আর মেয়েরা কি নিরাপদ আছে? এটা এখন আমাদের নিজেদের কাছে প্রশ্ন। পরিবারের কাছে প্রশ্ন, যা দেখছি সংবাদমাধ্যমে বা যেভাবে বিষয়টা চলছে, সেটাতে আমরা উপলব্ধি করতে পারছি যে আমরা খুব খারাপ সময়ের মধ্যে রয়েছি।' 

Advertisement

রূপাঞ্জনা বলেন, 'আমরা অনেকদিন চোখ বন্ধ করে বহু ঘটনাকে দেখব না বলেছি, কিন্তু আর কতদিন গান্ধীজির তিন বাঁদর হয়ে থাকা যায়। আমাদের এই আওয়াজ যাতে আরও জোরালো হয়, যেখানে যেখানে পৌঁছানো যায়, আমরা সেখানে সেখানে পৌঁছানোর চেষ্টা করব। এটা একটা শিল্পীর ইমোশনাল, আমরা তো প্রত্যেকদিন এই আবেগটাকে কাজে লাগাই, সেই জন্য আমাদের আবেগ ভীষণভাবে তীক্ষ্ণ হয়ে যায়, সেটা সাধারণ মানুষের জন্য খুব দরকারি, তাঁদের বোঝানোর জন্য খুব দরকারি।'


      

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement