হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবীণ কবি-গীতিকার গুলজারের গান আজকের প্রজন্মের কাছেও সমানভাবে চিরস্মরণীয়। তাঁর গান আজও মানুষের মনে এক আলাদা জায়গা করে আছে। সেই গুলজারের চিরস্মরণীয় গান 'মেরা কুছ সামান তুমহারে পাস পড়া হ্যয়', প্রথমে রিজেক্ট করে দেওয়া হয়েছিল। সাহিত্য আজতক ২০২৪-এর মঞ্চে এসে এমনটাই জানালেন গীতিকার গুলজার।
আশা ভোঁসলের গলায় ইজাজত সিনেমার গান 'মেরা কুছ সামান তুমহারে পাস পড়া হ্যয়', এই গানটি আজকের প্রজন্মের কাছেও সমানভাবে প্রিয়। গুলজার বলেন, 'যখন গান লেখা হয়, তখন আমার সামনে সিনেমার কাহিনী ও চিত্রনাট্য ও পরিস্থিতি সামনে থাকে, যেটা থাকা খুবই জরুরি। যদি এই তিনটে জিনিসের সঙ্গ ন্যায় করা না হয় তাহলে গান শুনতে অদ্ভুত লাগবে।' গুলজার এই গান নিয়ে আরও বলেন, 'এই গানটি তৈরি করে আমি যখন পঞ্চম দা (আরডি বর্মন)-কে শুনিয়েছিলাম, তখন উনি বলেছিলেন যে এটা খুবই ভাল দৃশ্য। তখন আমি বলেছিলাম এটা দৃশ্য নয় গান। এরপর গুলজার এও বলেন, হারমোনিয়ামে কিছু কাগজ পড়ে ছিল, আমার গানের কথা শুনে সে সেগুলো একপাশে রেখে দিলেন পঞ্চমদা। তিনি বললেন আপনি মিটার জানেন না, আমি জানি না আপনি কোথা থেকে লেখা শিখেছেন। পঞ্চমদার কথা শুনে সেখানে উপস্থিত মিউজিশিয়ানরাও হেসে ওঠেন।'
এরপর গুলজার আরডি বর্মনকে বলেন যে এই গান কোনও মিটার নয়। এই পরিস্থিতিতে হঠাৎই পঞ্চমদার কানে একটি কন্ঠস্বর ভেসে আসে। আশাজি গুনগুন করে তাঁর লেখা গানটি গাইছিলেন। খুব ভাল নোট ছিল গানের। 'লওটা দো' নোটসটা আশাজি গুনগুন করে গেয়েই তৈরি করে নেন। আশাজির এই গানটা খুবই পছন্দ হয়। এরপরই পঞ্চম দা গুলজারের কাছ থেকে গান লেখা কাগজটি চান এবং এরপরই গানটি তিনি শুরু করেন। গুলজার জানান, গানের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় লাইন গেয়ে গেয়ে পুরো গানটি তৈরি করেন। 'ইজাজত' ছবির গানটি আজও মানুষের মনে গেঁথে রয়েছে।
রাখীর সঙ্গে বহু বছরের বৈবাহিক জীবনও ছিল গুলজারের। এ প্রসঙ্গে গুলজার বলেন, 'আমি কবিতা শোনাতাম আর রাখী মাছ রান্না করত।' রাখীর সঙ্গে কেমন সম্পর্ক ছিল তাঁর? এই বিষয়ে গুলজার বলেন, 'মন থেকে পেট পর্যন্ত ছিল সেই সম্পর্ক। আবার কখনও কখনও এর বিপরীতটাও হত।' এরপরই গুলজার বলেন যে এইসব বিষয়গুলো তাঁর ও রাখীর মধ্যেই থাকা ভাল। এই নিয়ে তিনি বিশেষ কিছু বলতে চাননি। গুলজারকে এদিন এও বলতে শোনা যায় যে তিনি প্রত্যেক বয়সের কবি আর যেই কারণে আজকের প্রজন্ম তাঁকে বৃদ্ধ হতে দিচ্ছেন না। গুলজার সব বয়সের প্রজন্মের জন্য গান লিখতে সক্ষম।
প্রসঙ্গত, এই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ৬০ বছরের বেশি সময় হয়ে গিয়েছে এই বর্ষীয়ান গীতিকারের। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে একাধিক হিট গান ও তাঁর পরিচালনার ছবি, যা আজও কিংবদন্তী। চলতি বছরের অগাস্টেই ৯০ বছরে পা দিয়েছেন গুলজার। রাজধানীর মেজর ধ্যানচাঁদ জাতীয় স্টেডিয়ামে চলছে দেশের সেরা সংবাদ চ্যানেল 'আজতক'-এর ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান 'সাহিত্য আজতক'। যার দ্বিতীয় দিনে এসেছিলেন গুলজার সাহেব।