শিবপুর সিনেমা নিয়ে বিতর্ক যেন কিছুতেই থামে না। কিছুদিন আগেই এই ছবির প্রযোজক সন্দীপ সরকারের বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্য়ায়। অভিনেত্রী অভিযোগ করেছিলেন যে সন্দীপ সরকার তাঁর বন্ধুর মেল আইডি থেকে স্বস্তিকাকে মেলে হুমকি দেন যে, ছবি বিকৃত করে স্বস্তিকার নগ্ন ছবি পর্ন সাইটে তুলে দেবেন তিনি। এ বিষয়ে স্বস্তিকা ইম্পা ও পুলিশ দুই জায়গাতেই অভিযোগ দায়ের করেছে। তবে এই সিনেমার আর এক প্রযোজক অজন্তা সিংহ রায়ের গলায় শোনা গেল অন্য সুর। তিনি সরাসরি পরিচালক অরিন্দম ভট্টাচার্যের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।
প্রযোজক অজন্তা সিংহ রায় জানিয়েছেন যে স্বস্তিকা পুলিশের কাছে যাওযার আগে তাঁর সঙ্গে মুখোমুখি কোনও কথাই হয়নি। তিনি সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, সবকিছুই হয়েছে অরিন্দম আর স্বস্তিকার ম্যানেজারের মাধ্যমে। সত্যি কথা বলতে কী, অরিন্দম কখনও স্বস্তিকার সঙ্গে আমাদের কথাই বলতে দেননি। আমি কোনওদিন শুটিংয়েও যাইনি।স্বস্তিকাকে করা অশ্লীল ইমেল আদৌ সন্দীপ পাঠাননি বলে দাবি অজন্তার। সেটি করা হয়েছিল সন্দীপের এক বন্ধু রবীশ শর্মার নামে একটি ভুয়ো ইমেল থেকে। সেই ইমেলটি অরিন্দমই প্রথমে আমার নজরে আনেন। তবে সেই ইমেল পাঠানোর দুসপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত তা কেন ট্র্যাক করা গেল না, এমন প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি অজন্তা ও তাঁর আইনজীবী শৌভিক বসু ঠাকুর।
আরও পড়ুন: Swastika Mukherjee: 'নগ্ন' ছবি পোস্ট করার হুমকি স্বস্তিকাকে? অভিযোগ দায়ের করলেন অভিনেত্রী
পরিচালকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ অজন্তা সিংহ রায়ের। তিনি জানান যে শিবপুর-এর জন্য ৭২ লক্ষ বাজেট দিয়েছিলেন ছবির পরিচালক অরিন্দম ভট্টাচার্য। ছবির মার্কেটিং অরিন্দম তাঁর নিজের সংস্থা ড্রিমলাইনারের মাধ্যমে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রযোজক তা নাকচ করে দেওয়ার পর থেকেই তাঁর ওপর তিনি চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। ক্রমাগত পরিচালক হুমকি দিতে থাকেন। এমনকি স্বস্তিকার ফ্যানদের নাম নিয়েও ভয় দেখিয়েছেন।
এখানেই শেষ নয়, এক সংবাদমাধ্যমের কাছে শিবপুরের প্রযোজকের দাবি, ‘পরমব্রতর প্রচুর দৃশ্য ছবি থেকে বাদ দেন অরিন্দম। এমনকি মমতা শঙ্করকে দিয়ে দু’দিন শ্যুটিং করানোর পরে তিনি সেই দৃশ্যও ছবি থেকে বাদ দিতে বলেন। অথচ মমতা শঙ্করকে উনিই ছবিতে নিতে বলেছিলেন। এডিট এফএক্স স্টুডিওতে ছবির হার্ড ডিস্ক থাকলেও অরিন্দমের হস্তক্ষেপেই আমরা এখনও তা হাতে পাইনি। এছাড়া শ্রীকান্ত মোহতা, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়দের নাম নিয়েও অরিন্দম আমাদের ভয় দেখিয়েছেন’। অজন্তা জানান, 'এখনও পর্যন্ত ছবির পেছনে ১.৪০ কোটির বেশি খরচ হয়ে গিয়েছে। কারোর কোনও পারিশ্রমিক বাকি নেই। আবহসঙ্গীত ছাড়া ছবির বাকি কাজ সম্পূর্ণ।' এমতাবস্থায় অজন্তা চাইছেন অরিন্দম যেন আর কোনওভাবে ‘শিবপুর’-এ হস্তক্ষেপ না করেন। ছবিটি ২ মে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে তা সম্ভব হচ্ছে না। কবে এই ছবি মুক্তি পাবে তা নিয়ে অবশ্য প্রযোজক কিছু জানাননি।