একাধিক নায়িকা একসঙ্গে কোনও প্রজেক্টে কাজ করলে সেটে তাঁদের পারস্পরিক সম্পর্ক কেমন, তা নিয়ে সকলের কৌতুহল তৈরি হয়ে থাকে। তবে সেটে যদি একাধিক নায়িকা থাকে, তবে তাঁদের মধ্যে সবসময়ই যে ভালো সম্পর্ক থাকবে এমনটা কিন্তু নয়। যেমনটা ঘটল তৃণা সাহা ও সোহিনী সরকারের মধ্যে। ওয়েব সিরিজ মাতঙ্গী-এর সেটে দুই অভিনেত্রীর মধ্যে নাকি ধুন্ধুমার কাণ্ড বেঁধে গিয়েছে।
ক্যামেলিয়া প্রোডাকশনের নতুন ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য তৈরি হওয়া এই নতুন সিরিজে একসঙ্গেই কাজ করছিলেন সোহিনী ও তৃণা। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, দিন কয়েক শ্যুটিং করার পরই তৃণা সেট ছেড়ে বেরিয়ে যান। ইন্ডাস্ট্রি সূত্রের খবর, সোহিনী নাকি তৃণাকে অপমান করেছেন, এমনই অভিযোগ বালিঝড় অভিনেত্রীর। তৃণা নাকি দাবিও করেছেন যে সোহিনীকে ক্ষমাও চাইতে হবে। শোনা গিয়েছে, সোহিনীর ব্যক্তিগত মেকআপ ও হেয়ার আর্টিস্ট এই মাতঙ্গীর সেটে এসেছিল। এঁরাই প্রতিটি কাজের সময় সোহিনীর সঙ্গে থাকেন। প্রযোজনা সংস্থাকে তৃণাও সোহিনীর মতো একই ব্যবস্থা চাই বলে বায়না ধরেন।
তবে এই নিয়ে প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে তৃণা ভালো করে কথা বলেন না বলে এই সিরিজের শ্যুটিংয়ে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এমনকী সিরিজের পরিচালক সৌমিক চট্টোপাধ্যায় ও দীপাঞ্জন সুরঞ্জনা চন্দর সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন বলে অভিযোগ। এই সিরিজের অন্যান্য লোকদের কথা অনুযায়ী, সেটের মধ্যেই নাকি নায়িকা চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে দেন। এই সমস্যা আরও বাড়তে শুরু করে যখন সোহিনী আর্টিস্ট গ্রুপে একটা মেসেজ পাঠান। সেখানে অভিনেত্রী সেটে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার কথা বলেন। এর সঙ্গে অভিনেত্রী এও জানান যে তিনি ২০১৮ সাল থেকে ব্যক্তিগত মেকআপ ও হেয়ার স্টাইলিস্ট, মেকআপ ভ্যান পেয়ে থাকেন প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে অশান্তি না করেই। তাই এগুলো নিয়ে অযথা যেন শ্যুটিং ফ্লোরের পরিবেশ নষ্ট না হয়।
সোহিনী সেই মেসেজে এও জানান যে শিল্পী নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী সম্মান অর্জন করেন এবং ঠিক সময়ে সবকিছু পেয়ে থাকেন। তার জন্য সঠিক সময়ের অপেক্ষা করতে হয়। এই মেসেজের কথা জানার পর তৃণার বক্তব্য সোহিনী তাঁকে অপমান করেছেন। তৃণার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে সোহিনীর সঙ্গে কথাও বলা হয়, তবে অভিনেত্রী জানান যে তিনি কারোর নাম নেননি। যাতে সিরিজের কাজটা ভালোভাবে হয় সেটারই চেষ্টা করেছেন। তৃণা যদিও এই সব শুনতে নারাজ। সূত্রের খবর, তৃণা নাকি সোহিনীকে সকলের সামনে ক্ষমা চাইতেও বলেছিলেন। কিন্তু সোহিনী এই বিষয়ে রাজি হননি। এরপরই তৃণা সেট ছেড়ে বেরিয়ে যান। এই সমস্ত বিষয় নিয়ে সোহিনী ও তৃণার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা রীতিমতো মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
তবে গোটা ঘটনা নিয়ে রীতিমতো বিরক্ত প্রযোজনা সংস্থা। তৃণার ৭০ শতাংশ শ্যুটিং হয়ে গিয়েছে। এরকম অবস্থায় যদি বাকি শ্যুটিং করতে না করে দেন তাহলে প্রযোজনা সংস্থা বড়সড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে। তৃণার বদলে যদি অন্য কাউকে নেওয়া হয় তাহলেও সমস্যা বাড়বে বই কমবে না। আর তার দায় কে নেবে এই নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।