এ বছরই সাতপাকে বাঁধা পড়েন কাঞ্চন-শ্রীময়ী। বিয়ের পর থেকেই একের পর এক ট্রোলি, কটাক্ষ। তারই মাঝে এসে পড়েছে পুজো। যদিও আরজি কর-কাণ্ডের জেরে এই বছর পুজোর আবহ বেশ গুরু-গম্ভীর। ইতিমধ্যেই জুনিয়র চিকিৎসকদের নিয়ে কাঞ্চনের করা মন্তব্য নিয়ে শোরগোল পড়েছিল চারিদিকে। সব ঝড়-ঝাপটা কাটিয়ে বিয়ের পর কাঞ্চন-শ্রীময়ীর প্রথম পুজো এটা। কী করবেন, কীন খাবেন, অষ্টমীর অঞ্জলি থেকে সিঁদুর খেলা সবটাই শ্রীময়ী শেয়ার করলেন bangla.aajtak.in-এর সঙ্গে।
এ বছরের পুজোর প্ল্যান নিয়ে শ্রীময়ী বলেন, 'পুজোর প্ল্যান সে অর্থে এই বছর এক্স্ট্রা অর্ডিনারি কিছুই করতে পারছি না। তার কারণ চারদিকটা কেমন থমথমে হয়ে রয়েছে, সবার মধ্যেই কোথাও আনন্দ কম রয়েছে, শ্যুটিং থেকে ফিরছি অথবা মায়ের বাড়ি যাচ্ছি চারদিকেই কেমন যেন ভিড় কম। অন্যান্য বার পুজোর একমাস আগে থেকে সবজায়গায় পুজোর ভিড় দেখা যায় কিন্তু এইবার যেন ছবিটা একেবারেই আলাদা রকমের। কিন্তু আমরা আশাবাদী যে শুভ শক্তির সূচনা হবে এবং অশুভ শক্তির বিনাশ হবে। দুই পরিবারের সঙ্গেই পুজো কাটাবো এটাই প্ল্যান আছে। এই বছরের পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে ঠাকুর দেখতে যাব না। শ্বশুরবাড়ির জা, ভাসুরকে নিয়ে প্ল্যান রয়েছে, ওঁদের সোসাইটিতে পুজো হয়, সেখানে পুজোটা কাটাবো, কোনও একটা বন্ধুর বাড়িতে যাব অথবা আমাদের বাড়িতে বন্ধু-বান্ধবেরা আসবে, আড্ডা-খাওয়া-দাওয়া এই ব্যস।'
শ্রীময়ীর কি শপিং হয়ে গিয়েছে? অভিনেত্রী এ বিষয়ে বলেন, 'শপিং আমি সারাবছরই করি। আর বিয়ের সময় অনেক কিছু পেয়েছি। আমার কাছে শপিংটা হল ভাল থাকার ওষুধ। আমার যখনই মন খারাপ হয় আমি শপিংয়ে চলে যাই। অনলাইনে অনেকটা শপিং হয়েছে আর পুজোর জন্য যে শপিং সেটা আমি করেছি। আমি শাড়ি কিনেছি, উপহার পেয়েছি, যাদের যাদের প্রত্যেক বছর দেওয়া হয়, তাদের জন্য কিনে দেওয়া হয়ে গিয়েছে। আর আমি অন্যদের জন্য কিনতে গেলে নিজের জন্য কিনে ফেলি। কাঞ্চন কিছু কেনেনি, ও বলেছে ওর জন্য কিছু না কিনতে। তবে আমি কিনে দিয়েছি।'
বিয়ের পর প্রথম পুজো হলেও কাঞ্চন শ্রীময়ীকে কিছুই দেয়নি। শ্রীময়ী এ প্রসঙ্গে বলেন, 'কাঞ্চন তো কোনওসময়ই কিছু দেয় না। কিনতে পারে না বলে, বুঝতে পারে না বলে কাঞ্চন কারোর জন্যই কিছু কেনে না। শুধু টাকা দিয়ে দেয়, যেটা কেনার, যাদের জন্য কেনার আমি কিনে ফেলি। এই বছর প্রথম পুজো তাই অষ্টমীর অঞ্জলি একসঙ্গে দেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে শ্রীময়ীর। তিনি বলেন যে এই বছর অষ্টমীর অঞ্জলি খুব ভোরে পড়েছে। কাঞ্চন প্রতি বছরই তাঁর কালীঘাটের পুরনো পাড়ায় গিয়ে অঞ্জলি দেন। তবে শ্রীময়ী জানান যে অত সকালে কালীঘাটে যেতে পারবে কিনা সন্দেহ তাই ইচ্ছে আছে বাড়ির নীচে যে পুজো হয় সেখানেই কাঞ্চন-শ্রীময়ী একসঙ্গে অঞ্জলি দেবেন।'
আর জি কর নিয়ে কাঞ্চনকে ট্রোল করা প্রসঙ্গে শ্রীময়ী বলেন, 'ট্রোলারদের এত পাত্তা দেওয়ার কথা নয়। আমার মনে হয় তাদের কাজ হল মানুষদের ট্রোল করা করবে, বডি শেমিং করা করবে, মানুষকে কালো-ফর্সা নিরিখে বিচার করা করবে। তাঁদের কোনও কাজ নেই। কারণ আমাদের শিক্ষায় বাধে কারণ কোনও মানুষ যদি একটু খারাপ দেখতে হন, তাদের পিছনে বা আড়ালে তাদের নিয়ে কথা বলতে নেই। ছোটো থেকে সেই শিক্ষা পাইনি। এখন ট্রোলটা হল মোবাইল ফোনের খেলার মতো। কিছু পারলাম না আর তাই পিছনে গিয়ে নিন্দে করলাম। মুখের সামনে এসে কোনও কিছু বলার সাহস দেখালে সেই কমেন্টটাকে গুরুত্ব দিতাম। আমি আর কাঞ্চন এইসব ট্রোল নিয়ে কর্ণপাত করি না, কারণ আমি জানি তাঁদের অঢেল সময় আছে। আমাদের কাজ করে, খেটে খেতে হয়, তাই সেইদিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। এই ট্রোলিংগুলো আমাকে আর কাঞ্চনকে এফেক্ট করে না। এটা তখনই এফেক্ট করে যখন আমার আত্মীয়-পরিজন, কোনও প্রিয় মানুষ কিছু বলে তখন খারাপ লাগে। আমায় যেমন মা একদিন বলেছিল আমার ওজন বেড়ে গিয়েছে প্রচণ্ড, ওজন কমাতে হবে। তাতে আমার কষ্ট হয়েছিল।'
বিয়ের পর প্রথম সিঁদুরখেলা খুবই স্পেশাল। এই বছর শ্রীময়ী তাঁর মায়ের দেওয়া লাল পাড় সাদা শাড়ি পরে সিঁদুর খেলবেন। বাগবাজারেই প্রতিবছর সিঁদুর খেলেন শ্রীময়ী, এবারও সেটা হবে। পুজোর খাওয়া-দাওয়া কেমন হচ্ছে? শ্রীময়ী বলেন, 'কাঞ্চন তো খুব খেতে ভালোবাসে কিন্তু এই বছর বলেছে নবমী ছাড়া আমার মায়ের বাড়ি যাবে না। কারণ আমার বাড়িতে পুজোর তিনদিনই নিরামিষ হয়। আসলে আমাদের দেশের বাড়িতে ৩০০ বছরের পুরনো পুজো হয়, আর মা তাই এখানে নিরামিষ খায়। তিনদিন বাড়িতে আমিষ কিছু ঢোকে না আর কাঞ্চন নিরামিষ খাবে না। তবে কাঞ্চন কাঞ্চনের মতো ঠিক খেয়ে নেবে, যেমনটা প্ল্যানিং করে রেখেছে। খাওয়াটা কাঞ্চন ঠিক খেয়ে নেবে, সেটা বলতে হয় না। আমি খুব স্ট্রীট ফুড খেতে ভালোবাসি, তাই পুজোয় চুটিয়ে রোল-বিরিয়ানি খাব। আর ভোগ খেতে তো খুবই ভালোবাসি আমি। অষ্টমীর দিন ভোগ খাওয়া মাস্ট।'