বিধায়ক তথা অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিককে নিয়ে চর্চা কম নেই। সুযোগ পেলেই সমালোচকরা তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কাঁটাছেঁড়া করে থাকেন। তবে এইসব কিছুকে সেভাবে পাত্তা দিতে চান না অভিনেতা তথা উত্তরপাড়ার বিধায়ক। তাঁর জীবনে এখন ডাবল খুশি। একদিকে কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছেন আর তারওপর কাঞ্চনের ডেবিউ বলিউড সিনেমা ভুলভুলাইয়া ৩ বক্সঅফিসে দারুণভাবে হিট। ঝুলিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি সিনেমার কাজও। কিন্তু জানেন কি কাঞ্চন তাঁর কেরিয়ারের প্রথমে কত টাকা উপার্জন করেছিলেন?
কাঞ্চন একবার জোশ টকসের মঞ্চে এসে তাঁর অতীত জীবনের অনেক কথাই তুলে ধরেছিলেন। কাঞ্চন সেই সময় জানিয়েছিলেন যে তিনি ছোট থেকে পড়াশোনায় অতটা ভাল ছিলেন না। নিম্ন মধ্যবিত্ত বাড়ির ছেলে কাঞ্চনের ক্লাস থ্রিতে পড়ার সময়ই বাবার কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। তবুও যেমন তেমন ভাবে চলে যাচ্ছিল সংসার। প্রথম ঝড়টা আসে কাঞ্চনের মাধ্যমিক দেওয়ার আগে। দৃষ্টিশক্তি হারান তাঁর বাবা। সংসারের পুরো দায়িত্ব এসে পড়ে কাঞ্চনের কাঁধে। ওই বয়সেই সেলসম্যানের কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। আর চিনতে শিখেছিলেন দুনিয়াটাকে। খুব ছোট থেকেই সংসারের দায়িত্ব পড়ে অভিনেতার ঘাড়ে।
তবে ছোট থেকেই অভিনয় করার ইচ্ছা ছিল উদ্যম। আর তাঁর সেই ইচ্ছার জেরেই তাঁরই এক বন্ধু কাঞ্চনকে থিয়েটারের সন্ধান দেন। পাড়ায় একটি নতুন থিয়েটার দলে একটি চরিত্র কম পড়ছিল। সেখানেই যোগ দেন কাঞ্চন। ওটাই ছিল তাঁর বেঁচে থাকার অক্সিজেন। তবে থিয়েটার শিখতে শিখতে ছয় বছর লেগে যায় কাঞ্চনের। জানলে অবাক হবেন, থিয়েটার থেকে তাঁর প্রথম রোজগার ছিল মাত্র ১০০ টাকা। একসময় মদের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে কলাও বিক্রি করেছেন কাঞ্চন। তবে ভাগ্যের চাকা হয়তো ধীরে ধীরে ঘুরতে শুরু করেছিল তাঁর। তাই একটি বিউটি পার্লারে কাজ করতে করতেই তাঁর কাছে আসে ‘জনতা এক্সপ্রেস’ এর প্রস্তাব। যে শো থেকেই উত্থান কাঞ্চন মল্লিকের।
এরপর আর তাঁকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ‘জনতা এক্সপ্রেস’ শোটি দারুণভাবে জনপ্রিয় হয়। এরপর সিরিয়াল থেকে সিনেমা সবেতেই কাঞ্চনের অভিনয় মুগ্ধ করে দর্শকদের। তাঁর কমেডি চরিত্রগুলি দেখলে হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যাবে। দুটি বিয়ে করেও সফল হননি কাঞ্চন, অবশেষে তাঁর চেয়ে ২৭ বছরের ছোট অভিনেত্রী শ্রীময়ীকে চলতি বছরের মার্চে বিয়ে করেন। দীপাবলির পরেই তাঁর ও শ্রীময়ীর বাড়িতে আসে কন্যা সন্তান। আপাতত রাজনৈতিক কাজ, শ্যুটিং ও একরত্তিকে নিয়ে দারুণ রয়েছেন কাঞ্চন।