৮ জুলাই, শনিবার রাজ্যজুড়ে ছিল পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর বাংলায় নির্বাচনের অর্থই হল রক্তারক্তি-অশান্তি-খুন এবং ভোট লুট। এ বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনের তার ব্যতিক্রম কিছু ঘটল না। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোটর দিন পর্যন্ত বাংলায় নিহতের সংখ্যা ১৮। ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া— সব মিলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা হিসাব করলে সেই পরিসংখ্যান আরও বেশি। অথচ পঞ্চায়েত ভোট নাকি শান্তিতেই হওয়ার কথা। অথচ তার উল্টোচিত্রই দেখা গেল গোটা বাংলা জুড়ে। নির্বাচনের দিন এত হিংসা হলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়, তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হলেন টলিউডের একঝাঁক তারকারা।
ঋত্বিক চক্রবর্তী
অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী বরাবরই নিজের মত সোশ্যাল মিডিয়া পেজে তুলে ধরার জন্য পরিচিত। পঞ্চায়েত ভোটের হিংসা নিয়েও তাঁকে সরব হতে দেখা যায়। অভিনেতা তাঁর ফেসবুক পেজে একটি পুতুল হাতে নিজের ছবি পোস্ট করেন। সেই ছবিতে পুতুলের মাথার পিছনে গম্ভীর এক প্রশ্নের মেঘ। ঋত্বিকের পুতুল তাঁকে প্রশ্ন করছে, ‘‘আচ্ছা বদ্দা পুলিশ কবে পুলিশ-পুলিশ খেলে?’ অভিনেতার এই পোস্ট রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনকে কটাক্ষ করেই যে করা হয়েছে তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। ফেসবুকে ওই ছবি পোস্ট করে ঋত্বিক লেখেন, ‘‘আমার বাচাল পুতুলটা প্রশ্ন করছে— পুলিশ কবে পুলিশ-পুলিশ খেলে? উত্তরটা জানা থাকলে বেচারাকে একটু জানিয়ে দেবেন।’’
ঋদ্ধি সেন
শাসক দলের একাধিক বিষয় নিয়ে আগেও বহুবার সরব হতে দেখা গিয়েছে অভিনেতা ঋদ্ধি সেনকে। শনিবার রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটের হিংসা ও রক্তারক্তি কাণ্ড নিয়ে বেশ বিরক্ত ছিলেন ঋদ্ধি। শনিবার অভিনেতা তাঁর ফেসবুকে লেখেন, ‘পড়ে থাক গণতন্ত্রের লাশ, পচুক, গন্ধ বেরোক, সেই গন্ধ নাকে নিয়ে মাংস ভাত খাক রাজনৈতিক শিবিরগুলো, দুপুরবেলা আমরাও খাই পেট ভরে। গন্ধটা আরও তীব্র হওয়ার আগে চলুন খেয়েনি, আসুন, যোগ দিন মাংস ভাত খাওয়ায়, আমাদের ভাগাড়ের মাংস।’ তিনি কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলের নাম নেননি, তবে এই রক্তাক্ত ভোটের এই রাজনীতি যে তাঁর একেবারেই অপছন্দ তা তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন।
জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
অন্য দিকে, রাজ্যে এই গণতন্ত্রের উৎসব-এর আবহে সরাসারি ‘বুদ্ধিজীবী’দের প্রতি প্রশ্ন রেখেছেন অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসারি ‘বুদ্ধিজীবী’দের প্রতি প্রশ্ন রেখেছেন অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচন, না কি নির্বাচনের নামে প্রহসন? জয়জিতের প্রশ্ন, ‘‘এটা ভোট? তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা পথে নামবে না?’’ রাজ্যের তথাকথিত শিক্ষিত সমাজ প্রতিবাদ করবে না এমন এক গণতন্ত্রের উদ্যাপনের? প্রশ্ন অভিনেতার।
মুখে কুলুপ অনেকের
অপরদিকে ভোটের এই হিংসার রাজনীতি নিয়ে রীতিমতো মুখে কুলুপ এঁটেছেন টলিউডের এমন কিছু তারকা, যাঁরা সক্রিয়ভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। শনিবার মিমি, নুসরত, রাজ চক্রবর্তী ও জুন মালিয়াকে সেভাবে এইসব নিয়ে সরব হতে দেখা যায়নি। এক সংবাদমাধ্যমকে জুন জানান যে তিনি নিজের পশ্চিম মেদিনীপুরের বিধানসভা কেন্দ্রেই আছেন। তাঁর নটা অঞ্চলে পঞ্চায়েত ভোট শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। এখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করেন তিনি।