বছর প্রায় শেষ হতে চলল। আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা। তারপরই নতুন বছর শুরু হবে। আর এই নতুন বছরে প্রত্যেক মানুষেরই রয়েছে কিছু আশা-প্রত্যাশা। এই বছর টলিউডে বেশ কিছু বিতর্কিত বিষয় সকলের সামনে এসেছে। যা নিয়ে বছরভর হয়েছে একাধিক চর্চা। সরকমই কিছু বিতর্কিত বিষয়কে বছর শেষে তুলে ধরা হল। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক সেইসব বিতর্কগুলিকে।
পরমব্রত-পিয়ার বিয়ে
২০২৩ সালের শেষের দিকেই রীতিমতো হতবাক করার মতো ঘোষণা করেন টলিউডের মোস্ট এলিজেবল ব্যাচেলর পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। তিনি বিয়ে করতে চলেছেন। আর পাত্রীর নাম শুনে আরও অবাক হন সবাই। পাত্রী আর কেউ নন গায়ক অনুপম রায়ের প্রাক্তন স্ত্রী পিয়া চক্রবর্তী। গত ২৯ নভেম্বর একেবারে ঘরোয়াভাবেই আইনি বিয়ে সারেন পরম-পিয়া। কিন্তু তারপর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের বিয়ে নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। গায়ক অনুপম রায়ের প্রতি সান্তনা দেখিয়ে নেটিজেনদের একাংশ ট্রোল করতে থাকেন সদ্য বিবাহিত দম্পতিকে। যদিও এইসব নিয়ে খুব একটা পাত্তা দিতে নারাজ পরম-পিয়া। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে তীব্রভাবে কটাক্ষের শিকার হন পরমব্রত-পিয়া। যদিও এখন কিছুটা থিতিয়েছে তাঁদের নিয়ে আলোচনা।
কাঞ্চন-শ্রীময়ীর সম্পর্ক
এই বছর টক অফ দ্য টাউন অভিনেতা-বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক ও টেলিভিশন অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজের প্রেম। গত বছর পর্যন্ত শ্রীময়ী-কাঞ্চনকে একসঙ্গে খুব একটা বেশি দেখা না গেলেও এই বছর সব বাধাকে ভেঙে রীতিমতো খোলাখুলি ভাবেই নিজেদের সম্পর্ককে সামনে নিয়ে আসছেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠান থেকে একসঙ্গে মুভি ডেট, এমনকী কাঞ্চনের বাড়ির পুজো-পার্বণেও অংশ নিচ্ছেন শ্রীময়ী। যদিও নিজেদের সম্পর্কে সিলমোহর না দিলেও তাঁদের নিয়ে যে চর্চা হয়, সেটা তাঁরা ভালোই এনজয় করেন। কাঞ্চন-শ্রীময়ীকে এখন শোভন-বৈশাখীর মিনি ভার্সনও তকমা দেওয়া হয়েছে।
জিতু কমল-নবনীতার ডিভোর্স
টলিউডের পাওয়ার কাপল হিসাবে জনপ্রিয় ছিলেন অভিনেতা জিতু কমল ও নবনীতা দাস। কিন্তু এই বছর জুনেই নবনীতা তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পেজে ঘোষণা করেন যে তাঁর সঙ্গে জিতুর বিয়ে ভাঙছে। সম্পর্ক ভাঙার কথা ফেসবুকে পোস্ট করে জানিয়ে দিলেন নবনীতা। তিনি এও জানান যে গত ৩ মাস ধরেই নবনীতা ও জিতু আলাদা থাকছিলেন। আইনি প্রক্রিয়াও এগিয়ে গিয়েছে অনেকটাই। এখনও বিবাহবিচ্ছেদের শংসাপত্র আসেনি। এরপরই কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। জিতু ও নবনীতা দুজনের ওপরই অভিযোগ আসে যে তাঁরা নতুন সম্পর্কে জড়িয়েছেন। একদিকে যখন জিতু বাচ্চা বউ বলে প্রথমদিকে নবনীতার অভিমান ভাঙানোর চেষ্টা করেন অপরদিকে নবনীতাও পুজোর সময় জিতুর সঙ্গে ভিডিও পোস্ট ফের তাঁদের সম্পর্কের বিতর্ককে উস্কে দেন। নেটিজেনরা রীতিমতো বিভ্রান্ত হয়ে যান। তবে এখন আপাতত দুজনেই নিজের নিজের কেরিয়ার নিয়ে ব্যস্ত। খুব শীঘ্রই আইনত ডিভোর্স হবে বলে জানা গিয়েছে।
সোহিনী-শোভনের নতুন সম্পর্ক
এই বছরের যে চমক সবাইকে অবাক করে দিয়েছিল তা হল টলিউড অভিনেত্রী সোহিনী সরকার ও গায়ক শোভন গঙ্গোপাধ্যায়ের সম্পর্ক। তাঁদের নিয়ে চর্চা হলেও কখনও সোহিনী বা শোভন কেউই নিজেদের সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আনেননি। তবে পুজোর পর পরই শোভন তাঁর ও সোহিনীর আদুরে ছবি পোস্ট করে নিজেদের সম্পর্কের কথা ঘোষণা করলেও কিছুক্ষণের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সেই পোস্ট উড়িয়ে দেন। যদিও সোহিনীর জন্মদিনের দিনই শোভনকে দেখা গিয়েছিল তাঁর সঙ্গে। এই অসম প্রেম নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে চর্চা কম হচ্ছে না। এর আগেও শোভন তাঁর চেয়ে বয়সে বড় ইমনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। এরপর আবার সোহিনী। সোহিনী-শোভনের প্রেমের চর্চা সোশ্যাল মিডিয়ায় এখনও বর্তমান। এই বছরে অবশ্যই তাঁদের সম্পর্ক একটা বিরাট চমকই বটে।
নীল-তৃণার ডিভোর্স
এই বছর টলিউডে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল টলিপাড়ার মোস্ট পারফেক্ট জুটি নীল-তৃণার ডিভোর্সের খবর। এই বছরের গোড়া থেকেই তাঁদের সম্পর্ক ভাঙার খবরে হইচই পড়ে যায় নেট দুনিয়ায়। তাঁরা নাকি আলাদা হচ্ছেন। এমনকী তৃণার জন্মদিনেও নীলকে সেভাবে পোস্ট দিতে বা স্ত্রীর জন্মদিন পালন করতে দেখা যায় না। এমনকী বহুদিন ধরে নীল-তৃণা একসঙ্গে ছবিও দিচ্ছিলেন না। যদিও নীল-তৃণা একসঙ্গেই জানিয়েছিলেন যে তাঁদের মধ্যে সবকিছুই ঠিকঠাক রয়েছে। তৃণা স্পষ্ট জানান যে তিনি এবং নীল দুজনেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একসঙ্গে ছবি দেওয়া থেকে কিছুদিন দূরে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সবকিছুই ঠিক আছে। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের দুজনের সম্পর্ক ভাঙা নিয়ে একাধিক মন্তব্য উড়ে আসতে থাকে।
মাতঙ্গী ওয়েবের সেটে সোহিনী-তৃণার ইগোর লড়াই
এই বছরের অগাস্টে সোহিনী সরকার ও তৃণা সাহার ইগোর লড়াইকে ঘিরে চর্চা ছিল তুঙ্গে। মাতঙ্গী-এর শ্যুটিং সেটে তৃণা সাহা চিৎকার চেঁচামেচি করে বেরিয়ে আসেন বলে অভিযোগ তোলেন এই সিরিজের প্রযোজক রুদ্রনীল ঘোষ। সেই সময় সোহিনী ও তৃণার বিবাদ ছিল হট টপিক। সূত্রের দাবি, সোহিনীকে প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া নিয়েই তৃণার সঙ্গে সমস্যা শুরু হয় প্রযোজনা সংস্থার। কারণ তৃণার দাবি ছিল তাঁরও এই একই ধরনের সুযোগ-সুবিধার প্রয়োজন রয়েছে। জল এমন পর্যায় গড়ায় যে সিরিজে তৃণার ৭০ শতাংশ কাজ হয়ে যাওয়ার পরও প্রযোজনা সংস্থা তৃণাকে সিরিজ থেকে বাদ দিয়ে দেয়। তৃণার বদলে নেওয়া হয় রোশনি ভট্টাচার্যকে। প্রসঙ্গত, তৃণার আচরণে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয় প্রযোজনা সংস্থা। প্রোডাকশন বন্ধ রেখে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীনও হতে হয়েছে ক্যামেলিয়া প্রোডাকশনকে। তৃণার আচরণের কারণে বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিল এই মাতঙ্গী সিরিজের শ্যুটিং।