পুজো আসতে আর হাতে গোনা দিন বাকি। মহালয়ার দিন ভোরে বাঙালির, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে মহিষাসুরমর্দিনী শোনার রীতি যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। তবে শুধু রেডিও না, টেলিভিশনের পর্দাতেও মহালয়া দেখার উৎসাহ কম থাকে না।
দেবীপক্ষের সূচনায় প্রতিবারই চ্যানেলগুলির মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা থাকে, কে হবেন দেবী দুর্গা, কত ভাল কনটেন্ট হবে? দুর্গা ছাড়াও অন্যান্য দেব -দেবী কিংবা দুর্গার অন্যান্য রূপে কারা অভিনয় করবেন এই নিয়ে থাকে কৌতূহল। এই বছর মহালয়াতে জি বাংলা চ্যানেলে আসছে 'নানারূপে মহামায়া'। এবার দুর্গা সাজবেন অভিনেত্রী শুভশ্রী গাঙ্গুলী। রয়েছে আরও চমক।
'নানা রূপে মহামায়া'...এই বছরের মহালয়ায় জি বাংলায় উদযাপন হতে চলেছে আদ্যাশক্তির মহিমা, যিনি মাতৃরূপে আমাদের সৃষ্টিকে ধারণ করেন। কখনও দেখা যায় শুভ চেতনা রক্ষায় দেবীর শান্ত শিবাণী রূপ, আবার দুষ্টের দমনে সামনে আসে তাঁর রুদ্রাণী রূপ।
এই ভাবে দর্শকদের সামনে আসবে অনেক অজানা কাহিনি। সমাপ্তিতে আসবে মহিষাসুরমর্দিনীর সেই চিরন্তন গাথা। শুভশ্রী ছাড়াও, বিভিন্ন রূপে দেখা যাবে জি বাংলার নারী বাহিনীকে। অর্থাৎ বিভিন্ন ধারাবাহিকের নায়িকারা এবার টেলিভিশনের মহালয়ার পর্দায়। দেখে নিন কে কোন রূপে থাকছেন।
আদ্যাশক্তি - শুভশ্রী গাঙ্গুলী
দেবীর আদি রূপ আদ্যাশক্তির ভূমিকায় থাকছেন শুভশ্রী গাঙ্গুলী।
সব রূপের আদি রূপ আদ্যাশক্তিদেবী, লাল পাড় সাদা শাড়ি পরিহিতা। দুই হাত তাঁর। তাঁকে আরাধনা করলে, মনে শুভ শক্তির উন্মেষ হয় - অশুভ চক্রান্তের প্রভাব দূর হয়।
কমলে কামিনী - সৌমিতৃষা কুণ্ডু (মিঠাই)
দেবী কমলে কামিনী রূপে দেখা যাবে 'মিঠাই' ধারাবাহিকের মিঠাই ওরফে সৌমিতৃষা কুণ্ডুকে।
কমলে কামিনীকে আমরা পাই চণ্ডীমঙ্গলে। গল্পে বর্ণিত হবে পিতা ধনপতি এবং পুত্র শ্রীমন্তের সঙ্গে দেবীর লীলার গল্প। এই দেবী চতুর্ভুজা। পদ্মের উপর বসে থাকা দেবীর এই রূপ, প্রাণী জগত ও বনভূমির রক্ষাকারিণী।
কালী- সুস্মিতা দে (অপু)
কালী রূপে দেখা যাবে 'অপরাজিতা অপু' -র অপু অর্থাৎ সুস্মিতা দে-কে।
মহাদেবের ভষ্ম থেকে তৈরি ঘোড়াসুরকে বধ করতে পার্বতী 'কালী' রূপ ধারণ করেছিলেন। এই ভয়ঙ্করী রূপে দেবী শ্যামবর্ণা, মুক্তকেশী, মুণ্ডমালা গলায় পরা এবং তাঁর পা মহাদেবের পায়ে অবস্থিত।
ছিন্নমস্তা - শ্বেতা ভট্টাচার্য (যমুনা)
দেবী ছিন্নমস্তার রূপে দেখা যাবে 'যমুনা ঢাকি' -র যমুনা অর্থাৎ শ্বেতা ভট্টাচার্যকে।
এই দেবীর আরাধনা করলে, সংসারে শান্তি আসে, ফসল বৃদ্ধি ও বাণীজ্যে সফলতা আসে। দেবী ছিন্নমস্তা-রক্তবর্ণা মুক্তকেশী এবং ভয়ঙ্কররূপী।
অন্নপূর্ণা - শ্রীপর্ণা রায় (পারমিতা )
দেবী অন্নপূর্ণা রূপে দেখা যাবে 'কড়ি খেলা' ধারাবাহিকের পারমিতা ওরফে শ্রীপর্ণা রায়কে।
অন্নের দেবী, ত্রিলোকের মানুষ যখন ক্ষুধায় কষ্ট পায়, তখনই দেবীর আবির্ভূতা হন। দেবীর মায়ায় মহাদেবের ক্ষুধার জ্বালা এবং ভিক্ষুক রূপে দেবীর কাছে খাদ্য ভিক্ষা করার কাহিনি বলা হয়েছে এবারের গল্পে।
দেবী কৌশিকী - তিয়াশা রায় (শ্যামা)
দেবী কৌশিকী রূপে দেখা যাবে 'কৃষ্ণকলি'-র শ্যামা অর্থাৎ তিয়াশা রায়কে।
শুম্ভ -নিশুম্ভ এবং রক্তবীজের মতো অসুরকে মারতে দেবী কৌশিকীর আবির্ভাব হয়। এই দেবী, ব্রহ্মরূপিণী -শুভ্রবর্ণা, অষ্টভুজা। তিনি প্রসন্ন হলে পরম জ্ঞান প্রদান করেন।
ললিতা ত্রিপুরাসুন্দরী - শ্রাবণী ভুঁইয়া (ঝিলম)
দেবী ললিতা ত্রিপুরাসুন্দরী রূপে দেখা যাবে 'জীবন সাথী' -র ঝিলম অর্থাৎ শ্রাবণী ভুঁইয়াকে।
দেবীর সৃষ্টি হয় ভণ্ডাসুর এবং তাঁর ছেলেদের বধ করতে। দেবী সর্ব অলংকার ভূষিতা। তাঁর শত্রু বশ হয় এবং সংসারে শান্তি আসে।
বালা ত্রিপুরাসুন্দরী - ঐন্দ্রিলা সাহা (নিপা)
বালা ত্রিপুরাসুন্দরী রূপে দেখা যাবে 'মিঠাই' ধারাবাহিকের নিপা অর্থাৎ ঐন্দ্রিলা সাহাকে।
দেবী ললিতা ত্রিপুরাসুন্দরীর কুমারী রূপই আসলে বালা ত্রিপুরাসুন্দরী নামে পরিচিত।
চামুণ্ডা - ইদিকা পাল (রিমলি)
পর্দায় দেবীর চামুণ্ডা রূপ ধারণ করবেন 'রিমলি' ধারাবাহিকের রিমলি ওরফে ইদিকা পাল।
চামুণ্ডা হলেন আদ্যাশক্তি, ভগবতী। তিনি সপ্ত মাতৃকার অন্যতম। চণ্ড ও মুণ্ড নামে দুই অসুরকে হত্যা করে তিনি ‘চামুণ্ডা’ নামে পরিচিত হন। চামুণ্ডাকে দেবী কালীর অপর রূপ মনে করা হয়। দেবী চামুণ্ডা রক্ত অথবা কৃষ্ণবর্ণা; নরমুণ্ডমালা শোভিতা; বর্ণনাভেদে চতুঃ, অষ্ট, দশ বা দ্বাদশভূজা।
পার্বতী - শ্বেতা ভট্টাচার্য (যমুনা)
দেবী ছিন্নমস্তা ছাড়াও পার্বতী রূপে দেখা যাবে 'যমুনা ঢাকি' -র যমুনা অর্থাৎ শ্বেতা ভট্টাচার্যকে।
মহিষাসুরমর্দিনী- শুভশ্রী গাঙ্গুলী
'নানারূপে মহামায়া'-র শেষ অংশে দেখানো হবে দেবীর সনাতনী মহিষাসুরমর্দিনী কাহিনি। আগামী ৬ অক্টোবর মহালয়ার দিন ভোর ৫ টায় জি বাংলায় দেখা যাবে এই অনুষ্ঠান।