পশ্চিম বাংলায় নির্বাচন (West Bengal Election) শুরু হওয়ার আগে থেকে একের পর তারকারা যোগ দিয়েছেন সক্রিয় রাজনীতিতে। গেরুয়া ও জোড়া ফুল শিবিরে যেন কার্যত দড়ি টানাটানি চলছে টলি পাড়ার তারকার নিয়ে। কার দলে কত বেশি গ্ল্যামার, তা হয়ে উঠছে এইবারের রাজ্য নির্বাচনের মূলমন্ত্র। তার মধ্যে টলি পাড়ার কিছু তারকারা এই দড়ি টানাটানির মধ্যে না গিয়ে, আস্থা রেখেছেন বামপন্থাতেই (Left Front)। তাঁদের মধ্যেই একজন টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ জিতু কমল (Jeetu Kamal)।
সোশ্যাল মিডিয়ায় উঁকি মারলেই বোঝা যায় জিতু বাম মনস্ক। যদিও বামপন্থায় বিশ্বাসী ছাত্র রাজনীতি করার সময় থেকে। তবে এজন্য ইন্ডাস্ট্রিতে পড়তে হয়েছে নানা সমস্যার মুখে। এবার আজতক বাংলায় এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে অভিনেতা জানালেন সেকথা।
সম্প্রতি নিজের সোশ্যাল পেজে এতটা সক্রিয় ভাবে বাম দলকে সমর্থন করছেন, তবে আগে সেভাবে তাঁকে দেখা যায়নি। এই প্রসঙ্গে জিতু জানালেন, "আমি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ফ্যান। বলা যায় উনি আবার আইডল। সেই মানুষটাকে কাজ করতে দেখার পর ২০১১-২০২১ অবধি সবকিছু কেমন যেন গুলিয়ে গেছে। যেই ভাষাগুলি এখন রাজনীতিবিদরা ব্যবহার করেন, সেগুলি আমি মেলাতে পারি না আগের সঙ্গে। এছাড়া 'রোগড়ে দেব', এটা ওটা সেটা যা খুশী একটা বললেই যেন হল। আমি ৩৪ বছর বাম আমল দেখিনি বা বুঝিনি। কিন্তু যবে থেকে বুঝেছি এই জিনিসটা তো ছিল না। রাজ্যসভার কোনও মন্ত্রীকে চোর বলা হতো না। এখন ওপেন চোর বলা হচ্ছে! এর থেকে লজ্জার কী হতে পারে? আর সবচেয়ে বড় কথা এর কোনও শাস্তি হয় না। এর বিরুদ্ধে মানুষ নামলে, তাঁদের ভয় দেখানো হয়। এর থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। এজন্যই আমি এবার আমার নিজের রাজনৈতিক মতামত সামনা-সামনি আনতে চেয়েছি। কারণ দেওয়ালে পিঠ থেকে গেছে। "
কচি পাঁঠার ঝোল, আর গরম ভাত গন্ধরাজ লেবু দিয়ে..সঙ্গে চাট মশলা দেওয়া ঠান্ডা লস্যি.. আহা আহা.. কারণ কাল তো জাতির সবচেয়ে বড়...
Posted by Jeetu Kamal on Friday, 9 April 2021কখনও আপনি কোনও হুমকী পেয়েছেন? এই প্রশ্নে জিতুর উত্তর, "সম্প্রতি যে মেসেজ পাঠানো হয়েছে ফেডারেশন থেকে, সেটাই তো একপ্রকার থ্রেট! মিছিলে না যেতে পারলেই তার মানে তাঁকে ফল ভোগ করতে হবে? সেই সঙ্গে আমার আরও একটা প্রশ্ন আছে, যারা সেদিনের মিছিলে গিয়েছিলেন তাঁদের কাজ তার মানে এরপর পাকা? তাঁরা নিরাপদ? আমার যখন আর্টিস্ট ফোরামের কার্ড হয়েছে তখন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সেই সময়ে এমন কোনও নেতা- মন্ত্রীকে দেখিনি যারা শিল্পীদের এরকম কোনও মেসেজ পাঠিয়েছেন।"
জিতু আরও বললেন, "২০১১ থেকে অদ্ভুত একটা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন অনেক শিল্পীরাই। যেই কাজটা করে সকলের থেকে এত প্রশংসা পেলাম, পুরস্কার পেলাম, আমি ভাবলাম ভাল কাজ করার জন্য পেয়েছি। কিছুদিন পরে বুঝতে পারলাম এটা অন্য কোনও কারণে দেওয়া হয়েছে। কোনও কারণে তাঁরা ভাবছিলেন আমি শাসক দলের ঘনিষ্ট হবো। কিন্তু যখন তাঁরা জানতে পারলেন আমি ওরকম নই, তারপরে টেলি সম্মানে আমায় আমন্ত্রণ পর্যন্ত জানানো হয়নি। আমার সিরিয়াল রানিং চলছে তা সত্ত্বেও। যদিও আমার তাতে কোনও ক্ষোভ নেই।"
নতুন অনেকেই রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির। আবার অনেকে বেসুরো হয়েছেন, তাঁদের কী বার্তা দিতে চান জিতু? উত্তরে তিনি বললেন, "আমার তাঁদের জন্য একটা প্রশ্ন, বিধানসভা নির্বাচনের আগেই কেন সবার কাজ করতে ইচ্ছে করছে মানুষের জন্য? উল্টো দিক থেকে আমায় যদি তাঁরা প্রশ্ন করেন, আমিও সমর্থন করছি একটা দলকে...আমি কিন্তু সরাসরি প্রচারে সামিল হয়েছি আমাদের পার্টি যখন প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিয়েছেন, তারপরে। তার মানে নিশ্চই বোঝাই যাচ্ছে আমার কোনও স্বার্থ নেই। এরকম তো কতজনকে দেখলাম যারা রাজনীতিতে যোগদান করার পর নিজেদের নাম প্রার্থী তালিকায় নেই দেখে ঘরে ঢুকে গিয়েছেন। আবার অনেকে যোগ দিলেন কিন্তু তারপরে আর তাঁদের দেখা যায়নি, তাঁরা কোনও ভয়ে যোগ দিয়েছিলেন না ভালবেসে তা আমি সত্যি জানি না।"
আরও পড়ুন: ডাঃ উজান এবার ঋষিরাজ! ছোট পর্দায় আরও একবার শন ব্যানার্জি
প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে আকাশ ৮ - চ্যানেলে 'হয়তো তোমারই জন্য' ধারাবাহিকে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন জিতু কমল। এর আগে 'মিলন তিথি', 'রাগে অনুরাগে', ' অর্ধাঙ্গিনী', 'রাঙিয়ে দিয়ে যাও' ধারাবাহিকগুলিতে অভিনয় করে দর্শকদের মন ছুঁয়েছেন জিতু।