টলিপাড়ায় যেমন নতুন সম্পর্ক গড়ে, তেমন একের পর এক সম্পর্ক ভাঙার গুঞ্জনও শোনা যায়। যিশু সেনগুপ্ত ও নীলাঞ্জনা সেনগুপ্তর পর, আরও এক তারকা জুটির দাম্পত্যে চিড় ধরার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। টলিপাড়ার চর্চা, দীর্ঘ ১২ বছরের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে ঋষি কৌশিক ও দেবযানী চক্রবর্তীর। এই আলোচনা দ্বিগুণ হয় সম্প্রতি, অভিনেতার ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ভিডিও থেকে। তবে এবার ঋষির বিরুদ্ধে সরাসরি পাল্টা অভিযোগ আনলেন দেবযানী।
ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট করে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন দেবযানী। তিনি লেখেন, "বিগত কয়েকদিন যাবৎ সমাজমাধ্যমে করা আমার স্বামীর কিছু পোস্ট নিয়ে আমাকে বারবার কিছু অবাঞ্ছিত প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। পুরো বিষয়টি আমার কাছে অত্যন্ত কুরুচিকর, সম্মানহানিকর এবং বিব্রতকর। এবিষয়ে প্রথমেই আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই যে আমার বিরুদ্ধে যা যা অভিযোগ করা হয়েছে তার প্রতিটি সম্পূর্ণ মিথ্যে, অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত, অন্যায্য এবং কাল্পনিক। এগুলি করার একমাত্র কারণ আমার সামাজিক সম্মানহানি করা, আমার ক্ষতি করা এবং পোস্টদাতার নিজের নীচ উদ্দেশ্য সাধন করা।"
তিনি আরও লেখেন, "দেশের আইনের প্রতি আস্থা রাখা কোনো ভদ্র মানুষের যদি আদৌ এ ধরণের কোন অভিযোগ থাকে, তাহলে তিনি কোর্টে যাবেন সেই সমস্যা সমাধানে। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জনগণের মতামত নিতে যাবেন না। যা ঘটানো হচ্ছে তা গর্হিত অপরাধ এবং এটি আমার ওপর করা তার দীর্ঘদিনের ধারাবাহিক অত্যাচার আর নিষ্ঠুরতার আর একটি অধ্যায়। আমার ধৈর্য্য আর সহনশীলতার অন্যায় সুযোগ নিয়ে এটি করা হচ্ছে। আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করে তার অন্যায় দাবিগুলি মানাবার এটা একটা মরীয়া প্রয়াস। গোটা বিষয়টি নিয়ে আমি আইনী পরামর্শ নিচ্ছি। এ বিষয়ে বেশী বিস্তারে বলার অবস্থায় আমি নেই। শুধু এটুকু জানাই আমি আমার আইনী পরামর্শদাতাদের সঙ্গে সমস্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি এবং খুব শীঘ্রই প্রয়োজনীয় সকল আইনি পদক্ষেপ নিতে চলেছি।"
এদিকে বেশ কয়েক দিন ধরেই স্ত্রী দেবযানীকে নিয়ে নানা ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট দিচ্ছেন ঋষি কৌশিক। ছোট পর্দার উজানের সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে রয়েছে একরাশ মন খারাপ, বিষণ্ণতা, ব্যর্থতা। দিন দু'য়েক আগেই নিজের একটি ছবি শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেছিলেন, "মেরুদণ্ডহীন, আত্মসন্মানহীন, লোভী এবং আপাদমস্তক ভুল মানুষের সাথে পথ চলার চাইতে সারাজীবন একলা চলা অত্যন্ত সুখ, শান্তি এবং সন্মানের।" আরও একটি ছবি শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, "যদি খারাপ মানুষের শরীর ও মন থেকে দুর্গন্ধ ছড়াত তাহলে বোধ হয় বেশীরভাগ মানুষ তাদের আশেপাশে থাকা মানুষের জঘন্য দুর্গন্ধতে থাকতেই পারতো না...।"
গত বৃহস্পতিবার ঋষি কৌশিকের শেয়ার করা একটি ভিডিও দেখে রীতিমতো স্তম্ভিত সকলে। কী রয়েছে সেই ভিডিওতে? নাম উহ্য রেখেই, এক দম্পতির পথচলার গল্প শেয়ার করেন অভিনেতা। এই গল্প শুনেই সকলেই অনুমান করেন, নিজের জীবনের গল্পই তুলে ধরছেন ঋষি। তিনি বলেন, "আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব একটা সক্রিয় নই। কিন্তু আজ একটা গল্প বলার জন্যই এলাম...।"
অভিনেতা জানান, ১২ বছর আগে একটি ছেলে ও মেয়ের বিয়ে হয়। যদিও মেয়েটি ও ছেলেটির জীবনযাত্রা একেবারেই আলাদা। তা বুঝতে পেরেই নাকি মেয়েটিকে বিয়ে করতে চাননি সেই ছেলে। কিন্তু নিজেকে বদলে ফেলার আশ্বাস দেন মেয়েটি। এই মর্মেই মেয়েটিকে বিয়ে করতে রাজি হন সেই ছেলে। তবে বিয়ের পর থেকে নিজেকে বিন্দুমাত্র বদলাননি তিনি, বরং তা ক্রমশ বেড়েছে। মেয়েটি বড় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরতা। তিনি তাঁর স্বামীকে নাকি কথায় কথায় চাকরির খোঁটা দেন। স্বামীর উপর সর্বক্ষণ খবরদারি করেন, কিন্তু খোঁজখবর নেন না। এমনকী মেয়েটিকে সুস্থ পথে বিচ্ছেদের কথা জানালেই তিনি নাকি থানা-পুলিশ, মহিলা কমিশন, বড় কর্তাদের ভয় দেখায়। ঋষি যোগ করেন, "ধূমপান, মদ্যপান, রাত্রে পুরুষ বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি, একেই কি বলে আধুনিকা নারী...?" ঋষি কৌশিক নেটিজেনদের থেকে জানতে চেয়েছেন, "ছেলেটির কী করা উচিত?"
স্টুডিওপাড়ার খবর, তারকা দম্পতি আর একছাদের তলাতে থাকছেন না। তবে এখনই বিচ্ছেদের কথা জানাননি দু'জনের কেউই। ২০১১ সালে দেবযানীর সঙ্গে বিয়ে হয় ঋষি কৌশিকের। মূলত তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরতা দেবযানী, কয়েকটি মেগাতেও কাজ করেছেন। ঋষি কৌশিক ছোট পর্দার অত্যন্ত পরিচিত মুখ। 'ইষ্টি কুটুম', 'এখানে আকাশ নীল', 'কুসুম দোলা', 'কোড়া পাখি', 'একদিন প্রতিদিন'-র মতো ধারাবাহিকে অভিনয় করে সকলের মন জয় করেছেন। এই মুহূর্তে 'ঝনক' ধারাবাহিকে দেখা যাচ্ছে ঋষিকে। সম্প্রতি তিনি অভিনয় করেছেন, অঙ্কুশ হাজরার 'মির্জ়া' ছবিতে। এছাড়াও, কঙ্গনা রানাউতের 'ইমার্জেন্সি'-তেও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।