ধারবাহিকের ট্যাগলাইন ছিল 'সুখে-দুখে মিষ্টি মুখে মিঠাই'। তা সত্ত্বেও উচ্ছেবাবু ও তার তুফানমেইলের রিয়েল লাইফের রসায়ন মোটেও ভাল ছিল না। আড়ি- ভাব লেগেই থাকত 'সিঠাই'-র। সেই সময় জল্পনা ছড়ায় বন্ধু- কলিগ ছাড়াও আরও 'বিশেষ সম্পর্ক' রয়েছে তাঁদের। যদিও এই জল্পনাকে কখনও শিলমোহর দেননি সৌমিতৃষা কুণ্ডু বা আদৃত রায়। তবে স্টুডিয়ো পাড়ায় আলোচনা হয়, পর্দার দিদিয়া- কৌশাম্বী চক্রবর্তীর সঙ্গে আদ্রিত কাছাকাছি আসায় নাকি তাঁর সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে মিঠাইরানির সঙ্গে।
দীর্ঘ জল্পনার অবসান হয়ে গত ৯ মে গাঁটছড়া বেঁধেছেন আদৃত রায় ও কৌশাম্বী চক্রবর্তীর। নেটমাধ্যমে এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে বিয়ের নানা অনুষ্ঠানের মুহূর্ত। বিয়ে- রিসেপশন দু'দিনই কার্যত বসেছিল চাঁদের হাট। হাজির ছিলেন 'মিঠাই' ও 'ফুলকি' ধারাবাহিকের সদস্যরা। তবে হাজির ছিলেন না খোদ মিঠাই। তাহলে কি নেমন্তন্ন পাননি সৌমিতৃষা? নাকি তিনি এড়াতে চেয়েছিলেন এই বিয়ে বাড়ি? অবশেষে মুখ খুললেন অভিনেত্রী।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, "আমার মনে হয় ওঁরা ভুলে গেছে। হতেই পারে। এটা নিয়ে চর্চা হচ্ছে কারণ, এটা নিয়ে লোকে বেশি চর্চা করে ফেলছে শুরু থেকে। সবার ব্যক্তিগত একটা জীবন আছে। আমি বিশ্বাস করি, একটা কাজ শেষ মানে শেষ।" টেলি নায়িকা যোগ করেন, "আমারও ওঁদের শুভেচ্ছা জানানো হয়নি। আমরা জীবনে যে যার মতো এগিয়ে গিয়েছি। যে যার জীবনে খুব ব্যস্ত। আমি এটাও বলছি, নেমন্তন্ন পেলেও আমি যেতাম কিনা জানি না। সবাই আমাকে জানে, আমি কোনও গেদারিংয়ে থাকতে পছন্দ করি না। ওঁদের প্রেমটা এখন সবাই জানছে, কিন্তু আমরা তো প্রথম থেকেই জানি। আমরা একসঙ্গে প্রোজেক্টটা করেছি। তখন থেকেই আমাদের সকলের তরফ থেকে শুভ কামনা রয়েছে ওঁদের জন্য।
সত্যিই প্রেম ছিল আদৃত- সৌমিতৃষার? এপ্রসঙ্গে এবার মুখ খোলেন নায়িকা। তিনি বলেন, "একটা জুটি যখন হিট হয়ে যায়, আমার আর আদৃতের জুটি শুধু নয়, যতগুলো সিরিয়ালের জুটি হিট হয়েছে যখন, তখনই চর্চা হয়েছে তাঁদের নিয়ে। আসলে সব সময় রোম্যান্টিক সিন দেখছে তো, ওটা নিয়ে 'মিঠাই'-র যারা দর্শক তাঁরা কল্পনা করে ফেলে যে এঁদের মধ্যে কিছু একটা আছে, এঁদের সম্পর্ক তাহলে ভেঙে গেল। আমি আড়াই বছর আগে থেকে বলে আসছি, আমরা দু'জন কলিগ এবং ভীষণ ভাল বন্ধু। এতই ভাল বন্ধু যে, আমাদের মধ্যে মারপিট- ঝগড়া, কথা বলা বন্ধ তো এই কিছুক্ষণ পরে কথা শুরু হয়ে গেল। এই ধরনের একটা বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিল।"
অভিনেত্রীর কথায়, "ও আমার থেকে অনেকটা বড়। কিন্তু আমাদের মধ্যে একটা তুই- তুকারির সম্পর্ক ছিল। ওই জিনিসটা আমাদের দু'জনের দিক থেকেই কোনও দিনও ভাল লাগার পর্যায় যায়নি এবং আমরা ওই জন্যে কাজটাও ভাল ভাবে করতে পেরেছি। মান- অভিমান আমাদের সবসময় ছিল। এবার সমস্যাটা হল, আগে বলতে পারতাম, এখন বলতে পারি। কারণ ওঁরা ওঁদের সম্পর্কটা সব সময় প্রাইভেট রেখেছে। সেজন্যে আমরা এগুলো নিয়ে কথা বলতে পারতাম না। ওঁদের দু'জনের প্রেম যখন থেকে শুরু হয়েছে, লোকে অনেক পড়ে একটু একটু করে যখন জানতে পারে, তারা ভেবে নেয় এইজন্যেই আমাদের মধ্যে সমস্যা হয়েছে হয়তো। কিন্তু না! আদৃত আর সৌমিতৃষার মধ্যে তো প্রথম থেকেই ঝামেলা।"
প্রসঙ্গত, এর আগে ধারাবাহিক চলাকালীন যখন ঝামেলা- কথা বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে সৌমিতৃষাকে প্রশ্ন করা হয়, তখন তিনি জানিয়েছিলেন, "যদি কথা বন্ধও থাকে, আপনাদের কি সিনে কোনও সমস্যা হচ্ছে? আমাদের ব্যক্তিগত জীবন আছে, কাজের জীবন আছে। দুটো সম্পূর্ণ আলাদা। যদি আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে কোনও সমস্যা হয়, আর সেটার প্রভাব কাজের জায়গায় না পড়ে, তাহলে কারও কোনও সমস্যা হওয়া উচিত না।"